আবীর ঘোষাল, কলকাতা: ‘অপরাজিতা নারী ও শিশু বিল’ (পশ্চিমবঙ্গ ফৌজদারি আইন সংশোধনী বিল, ২০২৪)। আরজি কর হাসপাতালের নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসককে সম্মান জানিয়ে এই নামকরণ বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর। মঙ্গলবার বিলটি পেশ হওয়ার কথা বিধানসভায়।
ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ও ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার, যৌন নির্যাতন, ধর্ষণ ও গণধর্ষণ সংক্রান্ত যে আইন রয়েছে। বাংলার ক্ষেত্রে তার কিছু সংশোধন আনা হচ্ছে। চটজলদি বিচারের জন্য শুধুমাত্র বাংলার ক্ষেত্রে কয়েকটি ধারা যোগ করা হচ্ছে। নারী ও শিশুদের ক্ষেত্রে নিরাপদ পরিবেশ তৈরির জন্য। তাই বেশ কিছু বিধি যোগ হচ্ছে।
আরও পড়ুন– রাশিফল ৩ সেপ্টেম্বর: দেখে নিন আপনার আজকের দিন নিয়ে কী জানাচ্ছেন জ্যোতিষী চিরাগ দারুওয়ালা
দ্রুত বিচারের বিধান। ডেডিকেটেড বিশেষ আদালত। ডেডিকেটেড তদন্তকারী দল। এই তদন্তকারী দলকে বিশেষ সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। ন্যূনতম সাতদিনের মধ্যে শেষ করতে হবে গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে। এটা আগে ছিল নূন্যতম এক মাস। যেখানে মূল আইনে এক বছরের মধ্যে শাস্তি দেওয়ার কথা ছিল। সেটা সংশোধন করে এক মাসের মধ্যে করতে বলা হল। মূল আইনে কোনও থানায় ঘটনা নথিভুক্ত করার পর সেটা দুই মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার কথা ছিল। সেটা ২১ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে সংশোধনীতে আছে। যদি কোনও ক্ষেত্রে দেখা যায় ২১ দিনে তদন্ত শেষ করতে পারছে না। সেটা ১৫ দিন অতিরিক্ত সময় দিতে পারবে। তবে সেটি জেলা পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কাউকে দায়িত্ব দিতে হবে।
*ধর্ষণে শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও জরিমানা অথবা মৃত্যুদণ্ড*
*গণধর্ষণের ক্ষেত্রে জরিমানা ও আমৃত্যু কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ড*
*ধর্ষণের অভিযোগের পাশাপাশি, ধর্ষণকারীর দ্বারা আঘাতের কারণে মৃত্যু হলে অভিযুক্তের মৃত্যুদণ্ড ও জরিমানা।*
*কোমায় চলে গেলে এখানেও মৃত্যুদণ্ড ও জরিমানা।*
*সব মামলা হবে জামিন অযোগ্য ধারায়।*
নতুন বিলে মহিলা, শিশুদের সুরক্ষায় তৈরি হবে ‘অপরাজিতা টাস্ক ফোর্স’। জেলায় জেলায় এই টাস্ক ফোর্স কাজ করবে। এর নেতৃত্বে থাকবেন ডিএসপি পদমর্যাদার আধিকারিক, মহিলা আধিকারিককে এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। নির্যাতিতার পরিচয় প্রকাশ করলে ৩ থেকে ৫ বছরের জেল ও জরিমানার বিধান রয়েছে নতুন বিলে। তবে এই মামলা জামিনযোগ্য। মঙ্গলবারই এই বিল নিয়ে আলোচনা হবে বিধানসভায়। বিজেপির পরিষদীয় দলেরও সেই আলোচনায় অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। ‘অপরাজিতা’ বিলটি বিধানসভায় পাশ হয়ে যাওয়ার পর, সেটি আইনে পরিণত করার জন্য রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হবে।
২৮ অগাস্ট মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চ থেকে ধর্ষণ রুখতে কঠোর আইনের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন মমতা। তিনি বলেছিলেন, “ধর্ষকের একমাত্র শাস্তি ফাঁসি। আর কিছু নয়।” সেই মঞ্চ থেকেই তিনি জানিয়েছিলেন, রাজ্য বিধানসভায় ধর্ষকের ফাঁসি নিশ্চিত করতে বিল নিয়ে আসবে রাজ্য। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানিয়েছেন, তিনি সংসদে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রাইভেট মেম্বার বিল আনবেন।