বনোয়ারীলাল চৌধুরী, পূর্ব বর্ধমান, আউশগ্রাম: জঙ্গলে ঘেরা প্রায় ৪০০ বছরের পুরানো কালিকাপুরের রাজবাড়ি। নিজস্ব রীতি রেওয়াজে আজও উজ্জ্বল সাত মহলা রাজবাড়ির দুর্গা দালান। পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রাম ব্লকে আছে এই কালিকাপুর রাজবাড়ি। এই তীব্র গরমে যারা একটু কাছাকাছি কোথাও ঘুরতে যাওয়ার কথা ভাবছেন, তাদের জন্য এই রাজবাড়ি একদম আদর্শ জায়গা। রাজবাড়ির পাশাপাশি উপভোগ করতে পারবেন মনোরম পরিবেশ।
পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম অনেকের কাছে ‘জঙ্গলমহল’ নামে পরিচিত। চারিদিক জঙ্গলে ঘেরা। জঙ্গলের বুক চিরে চলে গিয়েছে কালো পিচের রাস্তা । রাস্তার দুপাশে বড় বড় গাছ , আর বিভিন্ন পশুপাখির ডাক। বেশ কয়েক কিলোমিটার এই জঙ্গলাকীর্ণ মনোরম পরিবেশ অতিক্রম করলেই পৌঁছে যাবেন কালিকাপুর রাজবাড়ি। মন শান্ত করা পরিবেশে অনেকটা জার্নির পর যখন গন্তব্যস্থলে পৌঁছাবেন, আপনিও হয়ে যাবেন হতবাক। কালিকাপুর রাজবাড়ি নজর কাড়বে আপনার।
এই প্রসঙ্গে দিবাকর দেবনাথ নামের এক পর্যটক বলেন, “এই জায়গা অনেক ঠান্ডা। আমরা বোলপুর থেকে এসেছি। জঙ্গলের রাস্তায় বাইক চালিয়ে আসতেও বেশ ভালই লাগল। গাছপালা বেশি থাকার কারণে কষ্ট সেরকম হয়নি। আর এই রাজবাড়ি দেখে খুব ভাল লাগল। এই জায়গা সিনেমায় দেখেছি, সামনে দেখতে পাব, কখনও ভাবিনি।”
তীব্র গরম, জারি করা হয়েছে সতর্কতাও। তবে যারা ঘুরতে ভালবাসেন তারা নিশ্চয় বাড়িতে বসে থাকতে পারবেন না। ইচ্ছা হবে কোথাও একটু ঘুরে আসতে। তবে দূরে কোথাও যাওয়া সম্ভব না হলে এই কালিকাপুর রাজবাড়িতে চলে আসতেই পারেন। রাজবাড়ির প্রাচীনত্ব এবং মন্দির নজর কাড়বে সকলেরই। যেহেতু জঙ্গলের মাঝে এই রাজবাড়ি অবস্থিত তাই জঙ্গলের রাস্তায় বাইক চালিয়ে আসতে বেশ ভালই লাগবে। নির্জন শান্ত মনোরম পরিবেশে মুগ্ধ হবেন আপনিও। বর্তমানে এই রাজবাড়ি কমবেশি অনেকের কাছেই বেশ জনপ্রিয়। বিভিন্ন টিভি সিরিয়াল এবং সিনেমাতেও হয়তো অনেকেই দেখেছেন এই রাজবাড়িটিকে। কারণ বিভিন্ন সিনেমার পরিচালকদের কাছে এই রাজবাড়ি বর্তমানে একটা আদর্শ শ্যুটিং স্পট হয়ে উঠেছে। বহু জনপ্রিয় অভিনেতা অভিনেত্রীরাও এই জায়গায় এসেছেন শুটিংয়ের জন্য। এখন ইচ্ছা হলে আপনারাও এই জায়গা একবার নিজের চোখে ঘুরে দেখে আসতে পারেন।
তবে রাজবাড়ি খোলা থাকে সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ৩ টে পর্যন্ত। এবং পরবর্তীতে দুপুরে বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ থাকার পর আবার খোলা হয় রাজবাড়ি এবং বন্ধ হয় সন্ধ্যার সময়। প্রবেশ করার জন্য লাগবে মাত্র ১০ টাকা। এই তীব্র গরমের মধ্যে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে রাজবাড়ি দর্শন করতে গেলে একটু হলেও স্বস্তি পাবেন। দাবদাহের দাপট একটু হলেও কম থাকবে। যেহেতু জঙ্গলের মধ্যে এই রাজবাড়ি রয়েছে, তাই পরিবেশ একটু হলেও তুলনামূলক ঠান্ডা। তবে এইসময় ঘুরতে আসার প্ল্যান থাকলে সকাল সকাল বেরনোই হবে সবথেকে শ্রেয়। সকালে এলে পরিবেশও থাকবে ঠান্ডা , তার সঙ্গে জঙ্গলের প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশে মনও হবে ভাল। তবে এই রাজবাড়িতে রাত্রিযাপনের কোনও ব্যবস্থা নেই।