দক্ষিণ দিনাজপুর: দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুরের বাণগড়। কিন্তু ঐতিহাসিক এই বাণগড়ে পুরোপুরি খননকার্য হয়নি। তবে এদিন এই ঐতিহাসিক স্থান বাণগড়কে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে অনুমোদন কেন্দ্র সরকারের। বালুঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার জানান, বাণগড়কে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলতে ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ (আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া) ২ কোটি ৮৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে। জেলার ঐতিহাসিক স্থানগুলির মধ্যে অন্যতম গঙ্গারামপুরের বাণগড়।
জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল বাণগড়ে খননকার্য চালিয়ে সেখানে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার। যদিও আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে বহুবছর আগে খননকার্য চালানো হয় বাণগড়ে। ১৯৩৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে ও ড. কুঞ্জগোবিন্দ গোস্বামীর নেতৃত্বে প্রথমবার খননকার্য শুরু হয়। তাতে উঠে আসে বেশ কিছু ধ্বংসাবশেষ। ১৯৬১ সালে পাটনা ইউনিভার্সিটির তত্ত্বাবধানে স্বল্পকালীন খননকার্য হয়েছে। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার তরফে ফের ২০০৯ সালে বাণগড়ে তৃতীয় দফায় খননকার্য শুরু হয়। ২০১১ সাল পর্যন্ত চলে সেই খননকার্য। এতে উঠে আসে প্রাচীন ইতিহাসের বিস্ময়কর তথ্য। কিন্তু মাত্র ২ বছরের সেই খনন বন্ধ হয়ে য়ায়। মাটির নীচে চাপা পড়ে যায় অনেক অজানা ইতিহাস।
এ বিষয়ে জেলার ইতিহাস গবেষক ও ইতিহাসবিদরা জানান, বাণগড়ের ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। এখানে কুশান, শুঙ্গ, মৌর্য, গুপ্ত, পাল এবং মুসলিম আমল-সহ সাতটি স্তর খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। এর রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি। পাশাপাশি এখানে আরও গবেষণার ফলে ইতিহাসের অনেক অজানা তথ্য উঠে আসবে। এবং এখানে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠলে রাজ্য এবং দেশের মানুষ একই স্থানে বিভিন্ন যুগের ইতিহাস জানতে ছুটে আসবে।
বাণগড়ে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলতে ভারতীয় প্রত্নতত্ব বিভাগের প্রায় তিন কোটি টাকা অনুমোদনে আশার আলো দেখছেন জেলার ইতিহাসবিদ, ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষ।
সুস্মিতা গোস্বামী