মহাদেবের বিশেষ রীতি

Nil Sasthi 2024 : জল থেকে উঠে আসেন মহাদেব! পুজো করার জন্য পুরুষরা লড়াই করে! অবাক করবে কাহিনি

উত্তর ২৪ পরগনা: জল থেকে ওঠা ভোলেনাথ থাকবে কার দখলে, তার জন্যই চলে রীতিমত কুস্তি, ধস্তাধস্তি। দুপুরের পর থেকে রাত পর্যন্ত চলে এমনই মহাদেবের মূর্তি দখলের লড়াই। সারা বছর জলের নীচে থাকলেও, নীল পুজোর বিশেষ দিনে বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ভক্তদের থেকে পুজো নেন দেবাদীদেব। কথিত আছে ২০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই রীতি মেনে আসছে সীমান্ত এলাকার এই গ্রামের মানুষজন। বিশ্বাস ও ভক্তি নিয়ে দূর দুরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন এই দৃশ্য দেখতে। বাবা ভোলানাথের এভাবে জল থেকে ওঠার সাক্ষী থাকেন সকলে।

মহাদেবের মাথায় জল দুধ ঢেলে জানান মনের ইচ্ছা। লোক মুখে শোনা যায়, এখানে মহাদেব ভীষণ জাগ্রত। যে যা চায় তার মনস্কামনা পূরণ করেন বাবা। বাগদার সিন্দ্রানী বগুলা বাওরের জলের নিচে সারা বছর বিরাজ করেন এই দেব। চৈত্র মাসে নীল পুজোর সময় মহাদেবকে জল থেকে তোলা হয়। আশেপাশে যত গ্রাম আছে সব গ্রামের থেকে দুশোরও বেশি সন্ন্যাসীরা আসেন মহাদেবকে জল থেকে তুলতে। জল থেকে তোলার পর অবশেষে কাদের দখলে থাকবে মহাদেব, তা নিয়েই চলে এই কাড়াকাড়ি, ধস্তাধস্তি। আসলে এভাবেই ভোলেনাথ ভক্তদের কাঁধে করে গ্রামে গ্রামে ঘুরে পুজো নেন।

আরও পড়ুন: পায়ে হেঁটে নয়, দণ্ডি কেটে এই মন্দিরে ঢুকছেন শয়ে শয়ে ভক্ত! রেকর্ড ভিড় মন্দিরে!

প্রতিবছর কুঠিবাড়ি আদিবাসী পাড়ার ভক্তদের দখলেই থাকে বাবা ভোলেনাথ। এরপর মহেশ্বর ভক্তদের ঘাড়ে চেপে রাতে রওনা দেয় গ্রামের বাড়ি বাড়ি পুজো নিতে। অবশেষে বাজিতপুর শিব মন্দিরে গিয়ে এই মূর্তির রেখে চলে তিন দিন ধরে পুজো। পুজো শেষে আবারও জলের নিচে চলে যায় মহাদেবের ওই মূর্তি। গ্রামে এই পুজো কবে শুরু হয়েছিল তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। তবে লোকমুখে জানা যায়, বনগাঁর গাড়াপোতা থেকে আনা হয়েছিল এই মূর্তি। আবার কেউ কেউ বলেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্রর এই মূর্তিটি চুরি হয়। নীল পুজোর সময় স্বপ্নাদেশে সেটিকে যশোরের জিয়ালার বিলে ফেলে যান। তারপর, মৎস্যজীবীদের জালে বেধে অবশেষে এই বাওরে আসে সেই মূর্তি। তারপর থেকেই এই পুজো ও রীতি শুরু করে গ্রামবাসীদের মধ্যে। এই পুজো ঘিরেই এখন উৎসবের মেজাজ গোটা এলাকায়।

Rudra Narayan Roy