কুণাল ঘোষ (Photo: Kunal Ghosh/ Facebook)

Kunal Ghosh: কুণালের বিদ্রোহে বিপদ, সমঝোতার পথে তৃণমূল! বৈঠক শেষে গান গাইলেন তৃণমূল নেতা

কুণাল ঘোষের মানভঞ্জনে তৎপর হল তৃণমূল কংগ্রেস৷  দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অপসারণের পরই আস্তে আস্তে মুখ খুলতে শুরু করেছিলেন কুণাল৷ যা লোকসভা নির্বাচনের মধ্যে তৃণমূলের অস্বস্তি অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছিল৷ শেষ পর্যন্ত কুণালকে বোঝাতে এ দিন তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসেন দলের সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন এবং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু৷

এ দিন দক্ষিণ কলকাতায় ডেরেক ও ব্রায়েনের বাড়িতে প্রায় ঘণ্টাখানেক বৈঠক করেন তিন নেতা৷ বৈঠক শেষে কুণাল বলেন, ‘বার বার বলেছি, তৃণমূলে ছিলাম আছি, থাকব৷ তৃণমূলের পরিবারে আমার পদ থাক না থাক আমি কর্মী সমর্থক হিসেবেই দলে থাকব৷ ব্রাত্য বসুর সঙ্গে ডেরেক ও ব্রায়েনের কাছে এসেছিলাম৷ কিছু কথা হয়েছে৷ আমি সেসব বাইরে বলব না৷ তবে তৃণমূলে ছিলাম, তৃণমূলেই থাকব৷ আমি তৃণমূল পরিবারের গর্বিত সদস্য৷ আশা করি দলও ভালবেসে, স্নেহ করে আমার উপরে আস্থা রাখবে৷’

তাঁর ক্ষোভ মিটেছে কি না প্রশ্ন করলে ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে ‘আহা কী আনন্দ আকাশে বাতাসে’ গানটি গেয়ে ওঠেন কুণাল৷

তবে দলের মধ্যস্থতার প্রস্তাবে প্রথমে কুণাল সাড়া দেননি বলেই খবর৷ তৃণমূল সূত্রের খবর, এ দিন প্রথমে ডেরেক ও ব্রায়েন কুণালের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন৷ প্রসঙ্গত, ডেরেকই বিবৃতি দিয়ে কুণালকে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন৷ ডেরেকের বার্তায় কুণাল সাড়া না দেওয়ায় এর পর কুণালের কাছে পাঠানো হয় দলের ভিতরে তাঁর বন্ধু হিসেবে পরিচিত ব্রাত্য বসুকে৷

দলের পক্ষ থেকে দায়িত্ব পাওয়ার পরই এ দিন সকালে উত্তর কলকাতায় কুণালের বাড়িতে পৌঁছন ব্রাত্য৷ এর পর সেখান থেকেই কুণালকে সঙ্গে নিয়ে দক্ষিণ কলকাতার একটি জায়গায় নিয়ে গিয়ে ডেরেক ও ব্রায়েনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন দু জন৷ সূত্রের খবর, দলেরক আরও এক শীর্ষ নেতার এই বৈঠকে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷

প্রসঙ্গত, গত বুধবার উত্তর কলকাতায় একটি রক্তদান শিবিরে একই সময়ে হাজির হন কুণাল ঘোষ এবং বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়৷ একই মঞ্চ থেকে তাপসের ভূয়সী প্রশংসা করেন কুণাল৷ এর কিছুক্ষণ পর, কলকাতা উত্তরের তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কেও কটাক্ষ করেন কুণাল৷

ওই দিন বিকেলেই কুণালকে দলের রাজ্য সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেয় তৃণমূল৷ এর পর তৃণমূলের তারকা প্রচারকের তালিকা থেকেও কুণালের নাম বাদ দেওয়া হয়৷ পাল্টা কুণালও তৃণমূলের বিরুদ্ধে মুখ খুলে শাসক দলের অস্বস্তি বাড়াতে থাকেন৷ দলে তাঁর অবদান মনে করিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি নাম না করে নেতাদের একাংশকে আক্রমণ করেন তিনি৷ পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত ছিলেন এবং দল তা জানত বলেও সংবাদমাধ্যমে মন্তব্য করেন তিনি৷ এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল কুণালের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেবে কি না, তা নিয়ে চর্চাও শুরু হয়৷

তবে সূত্রের খবর, কুণালের সঙ্গে দলের এই সংঘাতে ইতি টানতে উদ্যেগী হন তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা৷ তার পরই সংঘাতের পথ থেকে সরে এসে কুণালের সঙ্গে সমঝোতার রাস্তায় হাঁটল তৃণমূল৷