Condom-Viral Video: কন্ডোম ধোয়া জল দিয়ে ভয়ানক কাণ্ড! দুর্গাপুরে কন্ডোম আতঙ্ক? জানলে চমকে যাবেন

দুর্গাপুর: বছর দুয়েক আগে দুর্গাপুরের একটি খবর হৈচৈ ফেলে দিয়েছিল গোটা দেশ জুড়ে। হঠাৎ করেই সব সংবাদমাধ্যমের নজর এসে পড়েছিল শহরে। দুর্গাপুরের যুব সমাজের একটা বড় অংশ, পাশাপাশি পড়ুয়ারা নাকি আসক্ত হয়ে পড়েছিল কন্ডোমের প্রতি। তবে তা গর্ভনিরোধক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল না। ফ্লেভার্ড কন্ডোম ব্যবহার করা হচ্ছিল নেশার দ্রব্য হিসেবে। তার প্রতি আসক্তি বাড়ছিল অনেকের।

২০২২-এর এই ঘটনা নাড়াচাড়া দিয়েছিল সবাইকে। সমাজ কর্মী এবং মনস্তত্ত্ববিদদের কপালে পড়েছিল চিন্তার ভাঁজ। কিন্তু এই কন্ডোম ব্যবহার করে কি নেশা করা সম্ভব? হলে কীভাবেই বা সেটা হয়? জেলার নামকরা এক বায়ো কেমিস্ট বলছেন, সুগন্ধযুক্ত অর্থাৎ ফ্লেভার্ড কন্ডোম তৈরি করতে পলিসোপ্রিন ব্যবহার করা হয়। পাশাপাশি ব্যবহার করা হয় সিনথেটিক রজন পলিউরেমেন। যা একপ্রকার সুগন্ধযুক্ত যৌগ।

আরও পড়ুন: গরমের ছুটিতে যান চারখোল! খাওয়া-থাকা খুব সস্তা! কীভাবে যাবেন? কোথায় থাকবেন? জানুন বিস্তারিত

এছাড়াও সুগন্ধযুক্ত কন্ডোম তৈরিতে ব্যবহার হয় ইথিলিন গ্লাইকোল। যা মূলত একটি অ্যালকোহলিক যৌগ। আর এই সমস্ত যৌগ থাকায় সেটিকে অনেকেই অ্যালকোহলের রূপান্তরিত করেন। তিনি বলছেন, সুগন্ধযুক্ত কন্ডোম জলে ফুটিয়ে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা রেখে দিলেই সমস্ত যৌগগুলি জলে মিশে যায় এবং তা অ্যালকোহলে রূপান্তরিত হয়। যা মূলত নেশা দ্রব্য হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু এটির পরীক্ষিত কোনও প্রামাণ্য নথি নেই বলে তিনি জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলছেন, কন্ডোম যে অ্যালকোহল রূপে ব্যবহার করা যেতে পারে, তা ভেবে বের করা উন্নত মস্তিষ্কের কাজ। অনেক ক্ষেত্রেই তা পড়ুয়াদের ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল। এখানেও বড় কারণ রয়েছে বলে তিনি মনে করছেন। এই বায়ো কেমিস্ট বিশেষজ্ঞ বলছেন, পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে অনেক সময় অ্যালকোহল সরাসরি দোকান থেকে কিনে আনা সমস্যার হয়ে ওঠে। তার জন্য আর্থিক সমস্যা থাকে। পাশাপাশি বিভিন্ন বিধি নিষেধের কারণে পড়ুয়াদের তা সাহসে কুলোয় না। তাই এই ধরনের নেশার দ্রব্য তৈরি করার চিন্তাভাবনা অনেকের মস্তিষ্কে আসতে পারে।

আরও পড়ুন: কয়েক দিনেই টাকে গজাবে চুল! বন্ধ হবে চুল পড়া! রোজ রাতে চিবিয়ে খান এই পাতা

কিন্তু হঠাৎ করে এই প্রসঙ্গ উঠছে কেন? তাহলে কি আবার কন্ডোমের নেশার প্রতি আসক্তি বাড়ছে দুর্গাপুরে? সোশ্যাল মিডিয়া থেকে এমন ধারণা অনেকের মনেই তৈরি হয়েছে কারণ সম্প্রতি ২০২২ এর সেই খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যা থেকে আবার সেই পুরানো চিন্তা মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। কিন্তু এই জায়গায় দাঁড়িয়ে প্রশ্ন, আসল সত্যিটা কি? সত্যিই কি আবার এমন ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে শহরে?

প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, বিষয়টি মোটেও তেমন নয়। তিনি বলছেন, পুরনো বিষয়টি আবার ফের সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। কিন্তু ২০২২ এ যখন এই ঘটনা সামনে এসেছিল, তখন জেলা প্রশাসন এবং জেলা পুলিশ রীতিমত নড়েচড়ে বসেছিল। পুরো ঘটনাটির তদন্ত হয়েছিল। পাশাপাশি শুরু হয়েছিল কড়া নজরদারি। ওষুধের দোকান ছাড়া ছোটখাটো দোকানে কন্ডোম বিক্রির ক্ষেত্রেও নজরদারি চলেছে। যে নজরদারি এখনও পর্যন্ত রয়েছে। কনডোম থেকে অ্যালকোহল তৈরি করে যে আসক্তির বিষয়টি শহর জুড়ে ছড়িয়েছিল, তা এখন আর নেই। ওষুধ বিক্রেতারাও কন্ডোম বিক্রির ক্ষেত্রে অনেকটা সচেতন হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

সমাজকর্মী সুশীল হালদার বলছেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানে কন্ডোমের ব্যবহার মূলত গর্ভনিরোধক হিসেবে। যা যথেষ্ট কার্যকরী একটি উপায়। তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে। কিন্তু কন্ডোম বিক্রির ক্ষেত্রে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন লাগেনা ফলে তা কেনা সহজ হয়ে যায়। প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে সতর্ক হয়েছে বলে কন্ডোমের অপব্যবহার অনেক কমে গিয়েছে। তবে এই ধরনের ঘটনা থেকে বিরত থাকতে হবে যুবসমাজ এবং পড়ুয়াদেরও। নয়তো তা যেমন সমাজের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠবে, পাশাপাশি তা সেবনকারীর শারীরিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করবে। তাই এই বিষয়টি নিয়ে যুব সমাজ, পড়ুয়াদের সচেতন হতে হবে। তেমনই সচেতন হতে হবে বিক্রেতাদেরও। প্রশাসনের নজরদারির পাশাপাশি দু’পক্ষ সচেতন হলে কন্ডোমের অপব্যবহার সমাজ থেকে পুরোপুরি ভাবে নির্মূল করা যাবে।

নয়ন ঘোষ