ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মাণিক সাহা

Lok Sabha Election 2024: দক্ষিণ ২৪ পরগণায় ভোট প্রচারে ব্যস্ত ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মাণিক সাহা 

জয়নগর: জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী ডা. অশোক কান্ডারীর সমর্থনে সাতমুখী বাজারে আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় বক্তৃতা দেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবাংলা থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে ক্ষমতাচ্যুত করার সময় এসেছে। এজন্য সকল অংশের মানুষকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। তৃণমূল কংগ্রেসকে উৎখাত করে বাংলাকে দুঃশাসনের হাত থেকে বাঁচাতে হবে।’

আরও পড়ুনঃ ভোটে বন্ধ পেট্রাপোল, ব্যবসায়ীদের ক্ষতি

সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, ‘ত্রিপুরা থেকে আমি এসেছি। আপনারা ত্রিপুরা সম্পর্কে নিশ্চয় অবগত রয়েছেন। সেখানে মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টি অর্থাৎ বামফ্রন্ট প্রায় ৩৫ বছর রাজত্ব করেছে। আমরা বহু বছর ধরে তাদের উৎখাত করার চেষ্টা করেছি। ত্রিপুরার মানুষ চেষ্টা করেছে তাদের উৎখাতের জন্য। এরপর ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদি দায়িত্ব গ্রহণের পর সারা দেশের মানুষ বুঝতে পারলেন যে এতদিন ধরে যার জন্য অপেক্ষা করছিলেন সেই কান্ডারী আমাদের মাঝে চলে এসেছেন। আর ত্রিপুরার মানুষও বামেদের উৎখাতে সাহস সঞ্চয় করলেন। পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ত্রিপুরা থেকে কুশাসন ও দুঃশাসনের সরকারকে উৎখাত করা সম্ভব হয়েছে। ত্রিপুরাতে এখন মানুষ স্বাধীনতা কাকে বলে তার স্বাদ পেয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পশ্চিমবাংলাতেও ৩৪ বছর বামেরা রাজত্ব করেছে। এখানকার মানুষ পরিবর্তন চেয়েছিল। কিন্তু পরিবর্তনের পরে তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী যিনি এলেন তিনি কী দিলেন? তিন বছর পর্যন্ত মোটামুটি ঠিক ছিল। তবে এরপর দেখা গেল যে তারাও একেবারে বামফ্রন্টের কার্বন কপি। যা যা বামেরা করেছে, বরং তার থেকেও অধিক করছে তারা। খুন, সন্ত্রাস, অগ্নিসংযোগ, নির্বাচনোত্তর সন্ত্রাস, নির্বাচনের আগে সন্ত্রাস, নির্বাচনের সময় সন্ত্রাস করছে তারা। গণতন্ত্রের নামে কলঙ্ক এরা। যেভাবে তারা পশ্চিমবাংলাকে চালাচ্ছে তারা, সারা দেশের মানুষ তাকিয়ে রয়েছেন কবে এই দুঃশাসন থেকে পশ্চিমবাংলার মানুষ মুক্তি পাবেন।’

জনসমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কোন পশ্চিমবঙ্গ দেখেছি। আর এখন কোথায় পশ্চিমবঙ্গ? একটা সময় ছিল পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বলতেন আজ বাংলা যেটা ভাবছে, সেটা আগামীকাল ভাবে ভারত। আগে আমরা স্বামী বিবেকানন্দ, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম নিতাম। আমরা ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নাম নিতাম। অসংখ্য মহান মানুষের জন্মস্থান এই পশ্চিমবঙ্গ। এখন কাদের নাম নেওয়া হয়? শাহজাহান ও সিরাজের নাম নেওয়া হয়। অদ্ভুত এক অবস্থা এখানে। আমি শুনছিলাম যে এখনো নাকি এখানে ভারতীয় জনতা পার্টির ফ্ল্যাগ উপড়ে ফেলে দেওয়া হয়।’

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সময় সবকিছু বলে দেবে। আমাদের অভিভাবক হচ্ছেন যশস্বী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় গৃহমন্ত্রী অমিত শাহ ও সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। আমি আপনাদের কুর্নিশ জানাতে চাই যে এত বাধা বিপত্তির পরেও আপনারা পশ্চিমবাংলা থেকে এই কুশাসনের সরকারকে উৎখাত করার অপেক্ষায় রয়েছেন।’

ডাঃ সাহা বলেন, ‘আপনাদের কাছে ত্রিপুরা একটা উদাহরণ। আমরাও আপনাদের মতো পরিস্থিতিতে ছিলাম। এই লোকসভা নির্বাচনে ত্রিপুরার দুটি আসনের জন্য আমি প্রায় ৬ হাজার কিলোমিটার পথ গাড়িতে অতিক্রম করেছি। রেলে ২ হাজার কিলোমিটার গিয়ে ত্রিপুরার বিভিন্ন প্রান্তে প্রচারে অংশগ্রহণ করেছি। ২০২৩ এর বিধানসভা নির্বাচনে কোন ধরণের অঘটন ছাড়াই নির্বিঘ্নে নির্বাচন সম্পন্ন করা হয়েছে। একেবারে শান্তিপূর্নভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমি তৃণমূলের বন্ধুদের বলব সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্র কাকে বলে একবার ত্রিপুরায় গিয়ে দেখে আসুন।’

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পশ্চিমবাংলা থেকে তৃণমূলকে ক্ষমতাচ্যুত করার সময় এসেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। ২০১৯ সালে বাংলায় আমরা ১৮টি আসনে জয়ী হয়েছি। এবার ৩২টি আসন জয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আমরা যদি এই আসনগুলি জিততে পারি তবে তৃণমূল ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয়ে যাবে। সময় এসে গেছে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনগণকে, বিশেষ করে তরুণদের ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ভারতীয় জনতা পার্টি কোন অবস্থায় সহিংসতাকে সমর্থন করে না।’