গাজার ত্রাণ শিবিরে স্বজন হারানোর হাহাকার৷ ছবি- এএফপি

Israel Palestine war: গাজার ত্রাণশিবিরে নিরাশ্রয় মানুষের উপরে হামলা, নিহত ৩৭! ইজরায়েলের উপরে চটল আমেরিকাও

গাজা: সব হারিয়ে তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছিলেন মানুষগুলো৷ তবু মিলল না নিস্তার৷ ইজরায়েলের সেনাবাহিনীর বোমা বর্ষণ এবং আকাশ পথে হামলার জেরে প্রাণ হারালেন অন্তত ৩৭ জন প্যালেস্তিনীয় নাগরিক৷ মঙ্গলবার গাজার রাফাহ শহরে এই মারণ হামলা চালায় ইজরায়েল৷

যদিও ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া নিরীহ সাধারণ মানুষের উপরে হামলার জেরে ইজরায়েলের উপরে ক্ষুব্ধ বিশ্বের একাধিক দেশ৷ তার মধ্যে ইজরায়েলের বেশ কিছু বন্ধ রাষ্ট্রও রয়েছে৷ ইজরায়েলের উপরে চাপ বাড়িয়ে স্পেন, নরওয়ে এবং আয়ারল্যান্ড প্যালেস্তাইনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷

আরও পড়ুন: নিউ টাউনের আবাসনের সেপটিক ট্যাঙ্কে পাঁচ কেজি মাংস, দলা পাকানো চুল! বাংলাদেশের সাংসদ খুনে নয়া মোড়

গাজার স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা অবশ্য দাবি করেছেন, এই হামলায় মৃতের সংখ্যা ৪৫৷ যদিও ইজরায়েলি সেনা প্রথমে এই হামলার দায় প্যালেস্তাইনের জঙ্গি গোষ্ঠী হামাসের উপরেই ঠেলার চেষ্টা করে৷ তারা দাবি করে, হামাসের জঙ্গিদের ছোড়া অস্ত্রেই বিস্ফোরণ ঘটে ওই ত্রাণ শিবিরে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে৷ পরে অবশ্য ইজরায়েল সেনাবাহিনীর মুখপাত্র স্বীকার করে নেন, ওই ত্রাণ শিবিরে হামাসের দুই শীর্ষ জঙ্গি লুকিয়ে ছিল বলে তাদের কাছে খবর ছিল৷ সম্ভবত ওই দুই জঙ্গিকে নিশানা করতে গিয়েই এই বিপর্যয় ঘটে যায়৷ এই ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানেয়াহু৷

গাজার দখল নিচ্ছে ইজরায়েলি সেনা

জানা গিয়েছে, বোমা বর্ষণের জেরে প্রথমে ওই ত্রাণ শিবিরে আগুন লাগে৷ এর পর ওই আগুন থেকেই ত্রাণ শিবিরে থাকা রান্নার গ্যাস, মজুত করে রাখা জ্বালানিতে বিস্ফোরণ ঘটে জীবন্ত দগ্ধ হন বহু মানুষ৷ নিহতদের মধ্যে বহু শিশু এবং মহিলাও রয়েছেন৷ এঁদের মধ্যে অধিকাংশই যুদ্ধের জেরে সব হারিয়ে গাজার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিরাশ্রয় হয়ে ওই ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন৷

গত কয়েক দিন ধরেই গাজা শহরের পশ্চিম প্রান্তে হামলা চালাচ্ছে ইজরায়েলি সেনা৷ ওই এলাকা খালি করে দেওয়ার জন্যও সাধারণ বাসিন্দাদের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ পূর্ব, মধ্য গাজারও দখল নিতে শুরু করেছে ইজরায়েলি সেনা৷ গাজা এবং মিশরের সীমান্ত এলাকাতেও পৌঁছে গিয়েছে তারা৷

আন্তর্জাতিক মহলে কোণঠাসা ইজরায়েল

গাজায় এই আগ্রাসন না বাড়ানোর জন্য ইতিমধ্যেই ইজরায়েলকে সতর্ক করেছে তাদের সবথেকে বড় বন্ধু হিসেবে পরিচিত আমেরিকা৷ এই ধরনের হামলা চালানোর জন্য ইজরায়েলকে তারা আর অস্ত্র সরবরাহও করবে না বলে সতর্ক করে দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন৷ অবিলম্বে গাজায় এই আগ্রাসন বন্ধ করার জন্য ইজরায়েলকে নির্দেশে দিয়েছে আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালত৷ যদিও এই নির্দেশ মানার জন্য ইজরায়েলকে বাধ্য করার ক্ষমতা আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের নেই৷

তবে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়লেও গাজায় ইজরায়েলি আগ্রাসন কমার সম্ভাবনা কম৷ কারণ খোদ ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানেয়াহু নিজেই এই আগ্রাসনের পক্ষে৷ তিনি জানিয়েছেন, গাজা থেকে জঙ্গি গোষ্ঠী হামাসকে নিশ্চিহ্ন করাই ইজরায়েলি সেনার উদ্দেশ্য৷ পাশাপাশি, গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর যাঁদের পণবন্দি করা হয়েছিল, তাঁদেরকেও ফিরিয়ে আনা হবে৷ প্রসঙ্গত, গত বছর ইজরায়েলের উপর হামাসের এই হামলার পরই নতুন করে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়৷