রাইপুর জমিদার বাড়ি

Shantiniketan Tourism: শান্তিনিকেতন এলে, বেড়ানোর তালিকায় রাখুন এই জমিদার বাড়ি, সৌন্দর্য্যে ১ নম্বর!

বীরভূম: হাতে কম সময়। কাছেপিঠে ঘুরতে যেতে চাইছেন। দিঘা, পুরী নিয়ে মন ভরে গেলে, বাঙালি যায় বোলপুর শান্তিনিকেতন। রবি ঠাকুরের টানে শুধু নয়। সোনাঝুড়ির হাট, শিল্পী গ্রাম, কোপাইয়ের পাড়, কংকালীতলা মন্দির এসব দেখতে বাঙালি বেশি ভিড় করে বোলপুরে। আর বোলপুর থেকে কিছু দূরে রয়েছে তারাপীঠ মন্দির আবার অনেকে তারাপীঠ মন্দির দর্শনের জন্য ছুটে আসেন।তবে, এগুলো ছাড়াও বোলপুরে এমন একটা জায়গা রয়েছে, যাকে কেন্দ্র জড়িয়ে রয়েছে নানান অজানা কাহিনি। বোলপুর শহরের ইলামবাজারের কাছে রয়েছে রাইপুর গ্রাম। এই গ্রামের মূল আকর্ষণ রাইপুর জমিদারবাড়ি।

বোলপুরে স্টেশনে নেমে মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরে গেলেই পৌঁছে যাবেন এই জমিদার বাড়িতে। স্টেশনে নেমে মাত্র ১৫০ থেকে ২০০ টাকার বিনিময়ে পৌঁছে যাবেন এই গা ছমছম পরিবেশে। পরিত্যক্ত এই জমিদার বাড়ি আপনার শান্তিনিকেতন ট্রিপের অন্যতম অংশ হয়ে উঠতে পারে। জানা যায় বর্গী আক্রমণের সময় মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা থেকে লালচাঁদ সিংহ তার তিন পুত্রকে নিয়ে আসেন।সেই লালচাঁদের ছোটপুত্র শ্যাম-কিশোর সিংহ যার নামে বর্তমানে শ্যামবাটি বলে একটি জায়গা রয়েছে বোলপুরে। এই শ্যাম কিশোর সিংহ যখন নিজের ব্যবসা ধীরে ধীরে বাড়াতে শুরু করে তখন এই বাড়ির প্রতিষ্ঠা শুরু হয়। সেই সময়টা আনুমানিক ১৭৮০ কিংবা ১৭৯০ সাল তখন থেকেই এই বাড়ির কাজ শুরু হয়।পরবর্তী সময়ে পরিবারের সদস্য সংখ্যা যত বেড়েছে এই বাড়ির এলাকা ততটাই বেড়েছে।

আরও পড়ুনSikkim Situation: উত্তর সিকিমে ভারী বর্ষণ, ফুঁসছে তিস্তা! ঝড় বৃষ্টিতে গাছ ভেঙে বিপত্তি! নেই বিদ্যুৎ

বর্তমানে এই জমিদার বাড়িটি অবস্থিত রয়েছে ৬৩ বিঘা জমির উপর যার মধ্যে পাঁচটি পুকুর রয়েছে। এই জমিদার বাড়িতে প্রায় একশোর অধিক ঘর সংখ্যা রয়েছে। বর্তমানে মূলত জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর এবং অর্থনৈতিক অভাব এবং তার সঙ্গে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বিশাল আকারের এই জমিদার বাড়ির অবস্থা এখন ভগ্নপ্রায়। এক বাসিন্দা অঙ্কুশ দাস জানান ২০১৮ সাল থেকে রায়পুর যুব সংঘ যারা বর্তমানে স্থানীয় সিংহ পরিবারের সদস্য এবং এই যে বিভিন্ন অংশ অর্থাৎ সাত বিঘা জমির মধ্যে যাদের যাদের মালিকাধীন রয়েছে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে এই ভগ্ন প্রায় রাজবাড়ির পরিবেশগত রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে রায়পুর যুব সংঘ এই ভগ্নপ্রায় বাড়িটি সংস্কারের চেষ্টা করছে। আগামী দিনে এই রাজবাড়িটিকে মিউজিয়ামে পরিবর্তন করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

প্রত্যেক দিন এখানে পর্যটক দের ভিড় থাকে তবে মূলত শনি এবং রবিবার পর্যটকদের ভিড় থাকে বেশি। তবে আপনি এখানে ঘুরতে এলে আপনাদের থাকতে হবে শান্তিনিকেতন কিংবা বোলপুরের যে কোনও লজে। তবে এই জমিদার বাড়িতে প্রবেশ করতে আপনাকে কোনও টাকা খরচ করতে হবে না সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই জমিদার বাড়ি আপনি ঘুরে যেতে পারেন।বাড়ির আনাচে-কানাচে লুকিয়ে রয়েছে নানান অজানা ইতিহাস।তাহলে এবার বোলপুর শান্তিনিকেতন ঘুরতে এলে হাতে কিছুটা সময় নিয়ে ঘুরে আসুন রাইপুর থেকে।

সৌভিক রায়