বীরভূম: “আমার এটা, ঠিক আছে পিছনের টা তাহলে আমার। এই সাদাটা তুই ধর তাহলে।” বোলপুর শান্তিনিকেতনের রোডে যাতায়াত করলে বিশ্বভারতীর ফার্স্ট গেটে এই কথোপকথন কানে আসবেই আসবে।
শুনে খারাপ লাগতেই পারে আপনার। কিন্তু প্রশ্ন এরা কারা? এদের কাজই বা কী? এরা হচ্ছেন প্রত্যেকেই টোটো চালক। কাজ, মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে ট্যুরিস্ট গাড়ি আটকানো। তার পর গাড়ি পার্ক করিয়ে পর্যটকদের শান্তিনিকেতন ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় নিজেদের টোটোয় করে ঘোরানো। তবে আপনার মনে প্রশ্ন উঠতে পারে, এতে সমস্যা কোথায়?
সমস্যা এদের কার্যকলাপে। প্রতিদিন মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে এই দাদাগিরির ফলে যানজট মারাত্মক আকার নিচ্ছে। নিত্যদিন দুর্ঘটনা ঘটছে। জায়গাটি শান্তিনিকেতনে হেরিটেজ কোর এরিয়া থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরে, তথা বাফার জোনে রয়েছে।
আরও পড়ুন- অনেক ফুচকা তো খেয়েছেন, এ বার খান টকজলের বদলে অন্য জলে! বেড়ানোর মজাই যাবে বদলে
এলাকাটি বোলপুর পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড তথা শান্তিনিকেতন থানার অন্তর্গত। সংশ্লিষ্ট রাস্তায় যানজট যাতে না হয় সেজন্য বিশ্বভারতী ইতিমধ্যেই প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে তারপরেও নজরদারি একেবারেই নেই বলে অভিযোগ।
সেই সুযোগের পূর্ণ ব্যবহার করছেন এই টোটো চালকরা। তাঁদের দাদাগিরির জন্য সমস্যায় পড়েছেন বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। কড়া পদক্ষেপ নিয়ে অবিলম্বে টোটো চালকদের এই দৌরাত্ম্য কমানোর দাবিতে সরব হয়েছেন অনেকে।
পুলিশও প্রশাসন সক্রিয় হয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কবে ব্যবস্থা নেয়, সে দিকেই তাকিয়ে সকলে। রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে শান্তিনিকেতন উজ্জ্বল নাম। রবি ঠাকুরের ঐতিহ্যবাহী বিশ্বভারতী, সোনাঝুরি খোয়াইয়ের হাট, সতীপীঠ কঙ্কালীতলা ঘুরে দেখতে সারা বছরই পর্যটকের ঢল নামে। সেজন্য শান্তিনিকেতন রোডে যানজট সাধারণ বিষয়। বিশেষত শনি ও রবিবার জ্যামের কারণে স্থানীয়দের চলা দায় হয়ে ওঠে।
এই রাস্তার পাশেই রয়েছে মৃণালিনী আনন্দ পাঠশালা, পাঠভবন-সহ বিশ্বভারতীর অন্যান্য ভবন। ছাত্রছাত্রীরা এই রাস্তায় চলাচল করেন বলে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে ফার্স্ট গেট ও থার্ড গেটে স্পিড বাম্প করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- সুন্দরবনের মহিলাদের স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে বিশেষ পদক্ষেপ! মৎস্য চাষে উৎসাহ
শান্তিনিকেতনের ফার্স্ট গেটেই রয়েছে একটি টোটো স্ট্যান্ড। চালকরা এই স্পিড বাম্পকে কাজে লাগিয়ে কার্যত মাঝরাস্তায় দাঁড়িয়ে ট্যুরিস্ট গাড়ি ধরেন পার্কিংয়ের জন্য। আর তাতেই যানজট শুরু হয়।
সৌভিক রায়