শর্মিষ্ঠা বন্দ্যোপাধ্যায়, পুরুলিয়া : পাহাড় অরণ্যে ঘেরা জঙ্গলমহল পুরুলিয়া। এই জেলার মানুষেরা বরাবরই প্রকৃতির আরাধনা করে থাকেন। আদিকাল থেকেই প্রকৃতির পুজো এই জেলার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। বাঙালির অন্যতম পরব জামাইষষ্ঠী। একাধিক আচার নিয়মের মধ্যে দিয়ে এই উৎসব পালিত হয়ে থাকে। বেশিরভাগ জায়গাতেই চলে এলাহী ভূরিভোজের আয়োজন। তবে পুরুলিয়ার ঝালদায় জামাইষষ্ঠীর দিন হয় অরণ্যষষ্ঠীর পুজো। ঝালদার হাটতলার বটগাছে অরণ্যষষ্ঠীর পুজো করেন মহিলারা। এদিন সারা জেলা জুড়ে পূজার্চনা করা হয় অরণ্যের। প্রকৃতি পুজোর মাধ্যমে সুন্দর ও সুস্থ জীবনের কামনা করেন তাঁরা।
এ বিষয়ে ব্রতীরা বলেন , আমাদের জীবনের প্রতি পদে রয়েছে প্রকৃতির দান। পুরুলিয়া জেলা এখনও সবুজ অরণ্যে ঢাকা। বহু যুগ ধরে এখানে মানুষ নিজেরাই রক্ষা করে আসছেন প্রকৃতিকে। এই জেলার মানুষ পুজো করেন গাছপালাকে। তাই আমরা এই প্রকৃতির পূজা করি। স্বামী সন্তানদের মঙ্গল কামনায় এই পুজো।
আরও পড়ুন : ডায়াবেটিসে কি আলু খাওয়া যায়? কীভাবে আলু খেলে বাড়বে না ব্লাড সুগার? জানুন
এ বিষয়ে পুরোহিত বলেন , দীর্ঘকাল থেকেই এই রীতি চলে আসছে ঝালদায়। বাড়ির মহিলারা জামাইষষ্ঠীর দিন অরণ্যষষ্ঠীর ব্রত করে থাকেন। অরণ্য রক্ষা করতেই এই পুজো।পরিবেশ রক্ষার উদ্দেশ্যে অরণ্যষষ্ঠী পালিত হয় পুরুলিয়ার ঝালদায়। পুজোর ডালায় অংকুরিত ছোলা, ফল ও ফুল নিয়ে মহিলারা জড়ো হন বট বা অশ্বত্থ গাছের তলায়। সিঁদুর দিয়ে ও গাছের গায়ে সুতো পরিয়ে তারা আরাধনা করেন বৃক্ষের। এই দিন থেকেই বৃক্ষ রোপণের সূচনা হয় জেলায়। প্রসঙ্গত জামাইষ্ঠীর প্রকৃত নাম অরণ্যষষ্ঠী। কালের নিয়মে এই পার্বণ পরিচিত হয়ে এসেছে জামাইষষ্ঠী নামে। সেদিক থেকে এই ষষ্ঠী তিথি আক্ষরিক অর্থেই অরণ্যষষ্ঠী এই আরণ্যক জেলায়।