কথা 

Child Care: আজন্মের ঠিকানা হাসপাতাল ছেড়ে নতুন জায়গায় গেল অনাথ শিশু কথা, মনখারাপ ডাক্তার ও নার্সদের

বনোয়ারীলাল চৌধুরী, পূর্ব বর্ধমান: হাসপাতাল থেকে চলে যেতে হল কথাকে। আর যে কারণে মন খারাপ হাসপাতালের নার্স থেকে শুরু করে ডাক্তার সকলেরই। প্রসঙ্গত প্রায় ১ মাসেরও বেশি সময় ধরে পূর্ব বর্ধমানের কালনা হাসপাতালেই বড় হচ্ছিল কথা। ছোট্ট এই শিশুটি যখন কালনা হাসপাতালে জন্ম নেয় , ঠিক তার পরই তার মা মারা যান। এবং তার কিছুদিন পর মারা যান ছোট্ট কথার বাবাও। পরবর্তীতে হাসপাতালের তরফ থেকে কথার মৃত বাবা এবং মায়ের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কেউ কথার দায়িত্ব নিতে চায়নি। তাই হাসপাতালেই নার্স এবং ডাক্তারদের আদর যত্নে বেড়ে উঠছিল ছোট্ট কথা।

এমনকি এই কথা নামটাও হাসপাতালের নার্সরাই দিয়েছিলেন। তবে কথার ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে এবং নিয়মানুসারে বৃহস্পতিবার কথাকে তুলে দেওয়া হয় চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির হাতে। এই প্রসঙ্গে কালনা মহকুমা হাসপাতালের সহকারী সুপার শামিম মল্লিক বলেন, “পূর্ব বর্ধমান জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির তরফে একজনকে অথরাইজ করা হয়েছে , ওনার নাম অনন্যা ঘোষ। তার হাতেই আমরা বাচ্চাটাকে তুলে দিলাম। আমাদের দায়িত্ব ছিল বাচ্চাটাকে সুস্থ করে নিয়মানুযায়ী চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির কাছে দেওয়া। আমরা সেটা করেছি। তবে আমাদেরও মন খারাপ , কিন্তু এটা কষ্টের হলেও অন্যদিক থেকে আমরা গর্ব অনুভব করছি। ”

এই কয়েকটা দিনে ডাক্তার ও নার্সরাই কথার অভিভাবক হয়ে উঠেছিলেন। বিভিন্ন কাজের মধ্যে থেকেও খুবই দায়িত্ব সহকারে সকলেই কথার খেয়াল রাখতেন। দীর্ঘ একমাসেরও বেশি সময় ধরে কথার সঙ্গে থেকে সকলেই তাকে আপন করে নিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন : তীব্র গরমে গবাদি পশুকে সুস্থ রাখা সহজ উপায়! জানুন পশুচিকিৎসকের কাছে

তবে এবার কথার জন্য মনখারাপ নার্সদেরও। কথা চলে যাবে সে কারণে মন ভার সকলের। এই প্রসঙ্গে হাসপাতালের এক নার্স বলেন, “এতদিন আমাদের সঙ্গে ছিল কথা। আমরাই ওর খেয়াল রাখতাম , যত্ন করতাম। তবে ও চলে যাচ্ছে সে কারণে মন খারাপ। আর কথাকে দেখতে পাব না এটা ভেবে আরও মন খারাপ করছে।”

তবে কথার জন্য মনখারাপ হলেও কিছুই করার নেই। অবশেষে নিয়মানুসারে বৃহস্পতিবার কথাকে তুলে দেওয়া হয় চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির হাতে। এককথায় ভারাক্রান্ত মনেই ছোট্ট কথাকে বিদায় দিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।