Tag Archives: orphan child

Bangla Video: হাওড়ার এই আশ্রম অনাথ মেয়েদের জীবন গড়ার ঠিকানা হয়ে উঠেছে

হাওড়া: মহিলা শিক্ষার প্রসারে অনন্য ভূমিকায় হাওড়ার প্রণব কন্যা সংঘ আশ্রম। হাওড়া জেলা সহ সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামের দুস্থ পরিবারের মেয়েরা সুশিক্ষিত হচ্ছে এই আশ্রমের হাত ধরে। দুঃস্থ পরিবারের মেয়েদের দেখভাল তথা শিক্ষার প্রসারের জন্য ২০০০ সালে হাওড়া শহরে প্রতিষ্ঠা হয় এই আশ্রম।

সন্ন্যাসিনী দেবদত্তা নন্দময়ী ২০০০ সাল থেকে এই আশ্রম চালাচ্ছেন। ২০০১ সালে বন্যা কবলিত দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৭ জন অসহায় মহিলা নিয়ে শুরু হয়েছিল হাওড়ায় এই আশ্রম। বর্তমানে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া সহ বিভিন্ন জেলার প্রায় ২৫ জন পড়ুয়া রয়েছে এখানে। এখানে অনাথ ও পিছিয়ে পড়া পরিবারের ছেলেমেয়েদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে লেখাপড়া ও থাকার সুবন্দোবস্ত আছে। তৃতীয় শ্রেণি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত সম্পূর্ণ বিনামূল্যে লেখাপড়া ও থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে এই আশ্রমে। এখানে থেকেই হাওড়া গার্লস স্কুলে হয় লেখাপড়া।

আর‌ও পড়ুন: রাখি তৈরি বদলে দিয়েছে এই গ্রামের অর্থনীতি

এখানে ভর্তির ক্ষেত্রে কিছু নির্ণায়ক বিষয় আছে বলে জানিয়েছেন প্রণব কন্যা সংঘ আশ্রমের মাতাজী সন্ন্যাসিনী দেবদত্তা নন্দময়ী। মেয়েদের আর্থিক অবস্থা, নিরাপত্তা, অনাথ হলে প্রকৃত অনাথ কিনা, পড়াশোনায় মেয়েটা কতটা আগ্রহী এই সব দিক বিবেচনা করে তারপর ভর্তি নেওয়া হয়। প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসে বার্ষিক পরীক্ষার পর মেয়েদের নির্বাচন করা হয়। ৩ বছর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত মেয়েরা এই আশ্রমে থাকে। পরবর্তীকালে অনেকের বিয়ে হয়, অনেকে আবার উচ্চ শিক্ষার জন্য কলেজে ভর্তি হয়।

রাকেশ মাইতি

Child Care: আজন্মের ঠিকানা হাসপাতাল ছেড়ে নতুন জায়গায় গেল অনাথ শিশু কথা, মনখারাপ ডাক্তার ও নার্সদের

বনোয়ারীলাল চৌধুরী, পূর্ব বর্ধমান: হাসপাতাল থেকে চলে যেতে হল কথাকে। আর যে কারণে মন খারাপ হাসপাতালের নার্স থেকে শুরু করে ডাক্তার সকলেরই। প্রসঙ্গত প্রায় ১ মাসেরও বেশি সময় ধরে পূর্ব বর্ধমানের কালনা হাসপাতালেই বড় হচ্ছিল কথা। ছোট্ট এই শিশুটি যখন কালনা হাসপাতালে জন্ম নেয় , ঠিক তার পরই তার মা মারা যান। এবং তার কিছুদিন পর মারা যান ছোট্ট কথার বাবাও। পরবর্তীতে হাসপাতালের তরফ থেকে কথার মৃত বাবা এবং মায়ের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কেউ কথার দায়িত্ব নিতে চায়নি। তাই হাসপাতালেই নার্স এবং ডাক্তারদের আদর যত্নে বেড়ে উঠছিল ছোট্ট কথা।

এমনকি এই কথা নামটাও হাসপাতালের নার্সরাই দিয়েছিলেন। তবে কথার ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে এবং নিয়মানুসারে বৃহস্পতিবার কথাকে তুলে দেওয়া হয় চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির হাতে। এই প্রসঙ্গে কালনা মহকুমা হাসপাতালের সহকারী সুপার শামিম মল্লিক বলেন, “পূর্ব বর্ধমান জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির তরফে একজনকে অথরাইজ করা হয়েছে , ওনার নাম অনন্যা ঘোষ। তার হাতেই আমরা বাচ্চাটাকে তুলে দিলাম। আমাদের দায়িত্ব ছিল বাচ্চাটাকে সুস্থ করে নিয়মানুযায়ী চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির কাছে দেওয়া। আমরা সেটা করেছি। তবে আমাদেরও মন খারাপ , কিন্তু এটা কষ্টের হলেও অন্যদিক থেকে আমরা গর্ব অনুভব করছি। ”

এই কয়েকটা দিনে ডাক্তার ও নার্সরাই কথার অভিভাবক হয়ে উঠেছিলেন। বিভিন্ন কাজের মধ্যে থেকেও খুবই দায়িত্ব সহকারে সকলেই কথার খেয়াল রাখতেন। দীর্ঘ একমাসেরও বেশি সময় ধরে কথার সঙ্গে থেকে সকলেই তাকে আপন করে নিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন : তীব্র গরমে গবাদি পশুকে সুস্থ রাখা সহজ উপায়! জানুন পশুচিকিৎসকের কাছে

তবে এবার কথার জন্য মনখারাপ নার্সদেরও। কথা চলে যাবে সে কারণে মন ভার সকলের। এই প্রসঙ্গে হাসপাতালের এক নার্স বলেন, “এতদিন আমাদের সঙ্গে ছিল কথা। আমরাই ওর খেয়াল রাখতাম , যত্ন করতাম। তবে ও চলে যাচ্ছে সে কারণে মন খারাপ। আর কথাকে দেখতে পাব না এটা ভেবে আরও মন খারাপ করছে।”

তবে কথার জন্য মনখারাপ হলেও কিছুই করার নেই। অবশেষে নিয়মানুসারে বৃহস্পতিবার কথাকে তুলে দেওয়া হয় চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির হাতে। এককথায় ভারাক্রান্ত মনেই ছোট্ট কথাকে বিদায় দিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

Child Care: অনাথ কথা আজন্ম বড় হচ্ছিল হাসপাতালেই, তার নতুন ঠিকানায় চলে যাওয়ার সময় আসতেই মনভার সকলের

বনোয়ারীলাল চৌধুরী, পূর্ব বর্ধমান: হাসপাতালেই বড় হচ্ছে কথা। জন্মগ্রহণের পর বর্তমানে কথার সঙ্গী এখন হাসপাতালের নার্স এবং ডাক্তাররা। তবে কে এই কথা ? আসলে এক ছোট্ট শিশুর নাম হল কথা। চলতি বছরের এপ্রিল মাসের শেষের দিকে, কালনা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন অন্তরা বিশ্বাস নামের তরুণী। হাসপাতালেই তিনি জন্ম দেন এক কন্যাসন্তানের। তবে পরবর্তীতে মারা যান অন্তরা। ভাগ্যের এমন পরিহাস, যে তার কিছুদিনের মধ্যে অন্তরা দেবীর স্বামীরও মৃত্যু হয়। হাসপাতালের নার্স এবং চিকিৎসকরাই হয়ে উঠেছেন এই ছোট্ট শিশুর অভিভাবক।

ভালবেসে নার্সরা তার নাম রেখেছেন কথা। এই প্রসঙ্গে কালনা হাসপাতালের নার্স রমলা রক্ষিত বলেন, “কথা জন্মের পর খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। তবে এখন মোটামুটি সুস্থ আছে। ওর সঙ্গে আমাদের একটা ভাল বন্ডিং তৈরি হয়ে গিয়েছিল। আমরা চাইবও বড় হোক, ভালভাবে পড়াশোনা করে শিক্ষিত হয়ে উঠুক। “

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে কথার জন্মের পর সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তবে হাসপাতালের ডাক্তার এবং এসএনসিইউ ইউনিটের নার্সদের তৎপরতায় ধীরে ধীরে সে সুস্থ হয়ে ওঠে। মাতৃস্নেহে কথাকে বড় করে তুলছে কালনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। খাওয়ানো থেকে শুরু করে ঘুম পাড়ানো, কথার সমস্ত দায়িত্বই এখন তাঁদের। এই প্রসঙ্গে হাসপাতালের নার্স রমলা রক্ষিত আরও বলেন, “ও কখন খাবে , কখন ঘুমোবে সবকিছুই আমরা দেখাশোনা করছি। নামও রেখেছি কথা। ওর চোখ খুব সুন্দর, এত মায়াভরা চোখ যে তাকালে চোখ ফেরানো যাবে না।”

আরও পড়ুন : রুপোর রেকাবিতে ঘিয়ে ভাজা লুচি, মালপোয়া, রাবড়ি! নবদ্বীপে গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর বিগ্রহকে জামাই আদরে বরণ বিষ্ণুপ্রিয়ার বংশধরদের

তবে বর্তমানে হাসপাতালের নার্সদের মন এখন খারাপ। কারণ আর কিছুদিনের মধ্যেই হাসপাতাল থেকে চলে যেতে হবে কথাকে। হাসপাতালের তরফে কথার জন্য একটা সেফ হোমের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে জেলা চাইল্ড প্রোটেকশন ওয়েলফেয়ার কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হবে কথাকে। বাবা-মাকে হারানোর পরে নার্সরাই আপন করে নিয়েছিলেন কথাকে। ছোট্ট দুধের শিশুর দায়িত্ব নিতে চায়নি তার পরিবারের সদস্যরাও। স্নেহ ভালবাসা দিয়ে এক মাসেরও বেশি সময় তার দেখভাল করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই। তবে এবার কথার চলে যাওয়ার পালা , সে কারণেই মন খারাপ হাসপাতালের সকলেরই।