বর্ধমান: রাজবাড়ির ঐতিহ্য মেনে টান পড়লো রথের রশিতে। আগে রথযাত্রা উপলক্ষে বিশাল ধূমধাম হতো বর্ধমান রাজবাড়িতে। রথ দেখতে সকাল থেকেই ভিড় জমাতেন সাধারণ মানুষ। অনেক বড় মেলা বসত। বিক্রি হত জিলিপি, পাঁপড় ভাজা, সাজানো থাকত বাঁশি, পুতুল। বিক্রি হত বাঁশের ঝুড়ি-সহ গৃহস্হালীর প্রয়োজনীয় নানা সামগ্রী। সেই আমল আর নেই, নেই সেই জাঁকজমক। তবে প্রথা মেনে আজও টানা হয় রাজা-রানির রথ।
আরও পড়ুন: বিসিসিআইয়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক ঈশান কিসান, ফাঁস করলেন কেন বিরতি নিয়েছিলেন
বর্ধমান রাজবাড়িতে দু’টি রথের দড়িতে টান দেওয়া হয়। এখানের রথের বিশেষত্ব রয়েছে। রথের মধ্যে থাকেন না জগন্নাথ দেব, বলরাম ও সুভদ্রা। নেই তাঁদের মামার বাড়িও। দু’টি রথের একটি পিতলের তৈরি, অপরটি কাঠের। পিতলের রথ রাজার রথ নামেই পরিচিত। অন্যদিকে কাঠের রথটি রানির রথ ছিল। তবে দু’টি রথেই দেখতে পাওয়া যায় না জগন্নাথদেব, বলরাম ও সুভদ্রাকে। পরিবর্তে একটি রথে থাকেন লক্ষ্মী নারায়ণ জিউ ও অন্য রথে থাকেন রাজবাড়ির কুলদেবতা গোপাল জিউ।
রাজার পিতলের রথটি বাইরে টানা হয়। অন্যদিকে রানির কাঠের রথটি মন্দিরের ভিতরেই টানা হয়। তবে যেহেতু জগন্নাথ দেব নেই, তাই নেই কোনও মামার বাড়িও। ফলে সারাদিন এক জায়গাতেই রথকে রাখা হয় । সেই রথের দড়িতে টান দেওয়ার জন্য বাইরের মানুষজন ভিড় জমান।
বর্ধমান শহরের প্রাণকেন্দ্র কার্জনগেট। সেখান থেকে সোজা দু কিলোমিটার দূরে রাজবাড়ির উত্তর ফটক। তার পাশেই বড়বাজার সোনাপট্টি। সেখানেই আছে বিশাল লক্ষ্মী নারায়ণ জিউ মন্দির। সংস্কারের অভাবে এই মন্দির এখন ভগ্নপ্রায়। বর্ধমান রাজবাড়ির দু’টি রথ এই মন্দিরেই টানা হয়।
প্রায় সাড়ে তিনশো বছর ধরে রাজবাড়ির ঐতিহ্য মেনে এই রথযাত্রা হয়ে আসছে। সারা বছর এই মন্দিরেই রাখা থাকে এই রথদু’টি। প্রবীণ বাসিন্দারা বলছেন, আগে দুটি রথই অনেক উঁচু ছিল। সংস্কারের অভাবে তা ছোট হয়ে গিয়েছে। আজ সেই জাঁকজমক না থাকলেও নিষ্ঠা বজায় রয়েছে পুরোমাত্রায়।