আশিস কুমার, পশ্চিম চম্পারণ: দেশের অধিকাংশ মানুষই যুগের পর যুগ ধরে কাষ্ঠল গাছ রোপণ করে থাকেন। এর মধ্যে অন্যতম হল সেগুন, শিশু, মেহগনি ইত্যাদি। তবে এইসব গাছ থেকে কাঠ পাওয়ার জন্য দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করতে হয়। অনেক সময় তো কাঙ্ক্ষিত ফলাফলই মেলে না। ফলে এই পরিস্থিতিতে কাষ্ঠল গাছের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছেন মানুষ। আজ আমরা এমন একটা গাছের বিষয়ে আলোচনা করব, যা মাত্র ৬ থেকে ১০ বছরের মধ্যে বড় হয়ে যাবে। আর তা থেকে শুধু লক্ষ লক্ষ নয়, বরং আসবে কোটি কোটি টাকা!
বিহারের পশ্চিম চম্পারণ জেলায় অনুর্বর জমিতে কৃষকরা সাধারণত সাদা সিডার এবং পপলার গাছ লাগান। এর মধ্যে সাদা সিডার জমি থেকে জল ও আর্দ্রতা শোষণ করে। অন্যদিকে আবার পপলার গাছের পাতা জমিতে পড়ার ফলে ফসল ভাল ভাবে ফলছে না। এই পরিস্থিতিতে ওই জেলার কিছু কৃষক মালাবার নিম নামে কাষ্ঠল গাছ রোপণ করছেন।
মজার বিষয় হল, মাত্র ৬ বছরেই বেড়ে ওঠে এই গাছ। এর থেকে কৃষকরা ২০ লক্ষ টাকারও বেশি অর্থ উপার্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। এই কৃষকদের মধ্যে একজন হলেন রবিকান্ত পাণ্ডে। তিনি বলেন, মালাবার নিম গাছের চারার দাম মাত্র ৩০ টাকা। এক একর জমিতে যদি কোনও কৃষক ১০ ফুট অন্তর মালাবার নিমের গাছ রোপণ করেন, তাহলে মোট ৩৫০টি গাছ রোপণ করা সম্ভব। ফলে এই গাছ লাগাতে মোট খরচ হবে ১০৫০০ টাকা।
আরও পড়ুন– পৃথিবীর সঙ্গেই ঘুরছে গাছ, পাহাড় আর আকাশও; ভাইরাল ভিডিও-য় মিলল পৃথিবীর আবর্তনের প্রমাণ
রবিকান্ত বলেন যে, মাত্র ৬ বছরে মালাবার নিম গাছের কাঠ প্রস্তুত হয়ে যায়। প্রতি কিলোগ্রাম হিসেবে অনায়াসে বিক্রি করা যাবে এই কাঠ। এই সময়ের মধ্যে একটা গাছ থেকে প্রায় ১০ কুইন্টাল কাঠ মেলে। যা কুইন্টাল প্রতি ৬০০ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব। ফলে এক-একটা গাছ থেকে ৬০০০ টাকা আয় করা সম্ভব। আর এক একর জমিতে রোপণ করা ৩৫০টি গাছ থেকে আয় করা যাবে ২১ লক্ষ টাকা।
যদি গাছগুলিকে ১০ বছর ধরে রাখা হয়, তাহলে এই সময়ের মধ্যে এর মূল্য আরও বেড়ে যাবে। আসলে ১০ বছর সময়ের মধ্যে মালাবার নিমের কাঠের গুণমান অনেকটাই বেড়ে যায়। তাই তা কিলোগ্রাম হিসেবে বিক্রি না করে সরাসরি আসবাব নির্মাণ সংস্থাগুলির কাছে বিক্রি করা যেতে পারে। যার ফলে এর মূল্য হয়ে যায় প্রতি বর্গফুটে ১০০০ টাকা। আর এক-একটি মালাবার নিম গাছ থেকে ১০ বছরে ২০ থেকে ৫০ বর্গফুট কাঠ পাওয়া সম্ভব। এই পরিস্থিতিতে ১ একর জমিতে রোপণ করা ৩৫০টি মালাবার নিম গাছ থেকে আয় করা যাবে ১ কোটি টাকা।