বাবুনাথ টুডু এবং পরেশ মূর্মূ 

Bankura News: বাবা দিনমজুর! ছেলের স্বপ্ন হল সত্যি, নেপথ্যে বাঁকুড়ার আশ্রম

বাঁকুড়া: আদিবাসী ছেলে পরেশ মুর্মু। বাবা দিনমজুর। এর আগে তার বাড়িতে কেউ পড়াশোনা করেননি। পরেশই প্রথম শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়েছে। স্বপ্ন ছিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। সেই স্বপ্নই যেন রূপকথায় পরিণত করল এই ছেলে। তার আগে বলাই বাহুল্য পরেশের বাড়ি পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়া থানার হুড়ুবী গ্রামে।

ক্লাস সিক্স থেকে পরেশ বাঁকুড়ার শুশুনিয়ার হাঁপানিয়া রামনাথপুরের মারাঙবুরু চাচো মার্শাল আশ্রমের আবাসিক ছাত্র। এ আশ্রমের বাবুনাথ টুডু ও লক্ষ্মী টুডুর কাছে মানুষ হয়েছে সে। এই আশ্রমে থেকে, খেয়ে পড়াশোনা করেছে সে। ২০২৪ সালে পরেশ রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় জেনারেল ক্যাটাগরিতে ৩৩,৪৬৮ এবং এসটি ক্যাটেগরিতে ১৬৭ র‍্যাঙ্ক করেছে। যে র‍্যাঙ্ক এর সুবাদে একটি ভাল কলেজ সে পেতেই পারে পড়ার সুযোগ এবং অন্যান্য আদিবাসী শিশুদের একটি অনুপ্রেরণার জায়গা সে হতেই পারে। তার পড়ার ইচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারিং।

আরও পড়ুন : মুম্বই, বেঙ্গালুরুর ট্রেন্ড বাঁকুড়াতেও, মহিলাদের মধ্যে ফিটনেস ঝড়!

বাঁকুড়ার শুশুনিয়ার মারাংবুরু চাচো মার্শাল আশ্রম। এই আশ্রমে আবাসিকভাবে থেকে পড়াশোনা করছে একশোরও বেশি আদিবাসী শিশু এবং কিশোর-কিশোরী। আশ্রমের চাচো বাবা অর্থাৎ আশ্রম গুরু হলেন এই গ্রামেরই অধিবাসী বাবুনাথ টুডু, এবং চাচো মা অর্থাৎ আশ্রমের গুরু মা হলেন লক্ষী টুডু। রান্না করা থেকে, পঠন পাঠন এই দম্পতি নিজের সন্তানের মত করেই লালন পালন করেন আশ্রমের শিশুদের। সফলতার পর পরেশ জানিয়েছেন, “আশ্রমের গুরু এবং গুরুমার আশীর্বাদে এই সফলতা এসেছে। পরবর্তীকালে আমি একজন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই এবং অন্যান্য আদিবাসী শিশুদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে চাই।”

আরও পড়ুন : ‘পান থেকে চুন খসিয়ে’ই জীবন যুদ্ধে লড়ছেন কাজল

নিজের পরিবারের প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার্থী পরেশ মুর্মু। এর আগে তার বাড়ি থেকে ও পড়াশোনা করেননি। বাড়িতে একমাত্র কাজ করেন তার বাবা, দিন আনি দিন খাই অবস্থা। ২০১৫-২০১৬ সাল থেকে বাঁকুড়ার শুশুনিয়ার মারাংবুরু চাচো মার্শাল আশ্রমে সম্পূর্ণ নিঃখরচায় পড়াশোনা করেছে সে। আশ্রমের কর্ণধারবাবুনাথ টুডু জানান, পড়েছে এরকম কর্মকাণ্ডে আশ্রমে সকলেই গর্বিত।

আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F 

পরবর্তীকালে পরেশকে দেখে শিক্ষার আলোয় আলোকিত হতে এগিয়ে আসবেন অন্যান্য আদিবাসী শিক্ষার্থীরা।

নীলাঞ্জন ব্যানার্জী