কলকাতা: চার কেন্দ্রে উপনির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত। বাংলার চার কেন্দ্রেই ফুটল ঘাসফুল। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফল অনুযায়ী শুধুমাত্র মানিকতলাই ছিল তৃণমূলের দখলে৷ বাগদা, রানাঘাট দক্ষিণ এবং রায়গঞ্জ ছিল বিজেপির দখলে৷ ২০২৪ সালেও ফল অপরিবর্তিত ছিল৷ তবে এবার উপনির্বাচনের ফলাফলে বিজেপির হাতছাড়া হয়েছে তিনটি কেন্দ্রই। ফলাফল সামনে আসতেই রাজ্যসভার সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য জানালেন ভোটের ফলে পদ্মের ভরাডুবি নিয়ে।
শমীক ভট্টাচার্য বললেন, ‘‘ভোটের সংগঠন আমাদের নেই। জিতব বলেই খেলতে নামে যেকোনও খেলোয়াড়। কোন পরিস্থিতিতে লোকসভা নির্বাচনের পর লড়তে হয়েছে বিজেপিকে এটা সকলে জানে। আমরা প্রতিহত করতে পারিনি কারণ মানুষকে আটকে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে যেভাবে পরিচালিত হতে হল সেটা দেখেছি। যেভাবে সন্ত্রাস হয়েছে সেটাও জানা। গুলি বোমার পাশে রুখে দাঁড়ানোর জন্য যে সংগঠন দরকার সেটা হয়নি।’’
জেতা কীভাবে জায়গা হারালো বিজেপি? এ প্রসঙ্গে শমীক ভট্টাচার্য জানালেন, ‘‘যে জায়গায় দাড়িয়ে নির্বাচন লড়ার দরকার ছিল সেটা হয়নি। বাগদা ও রানাঘাটের যে ছবি দেখা গিয়েছে সেটা বোঝা যাচ্ছে যে মানুষকে জোর করে ভয় দেখিয়ে ভোট দিতে বাধ্য করা হয়েছে। কিছু জায়গায় ভুল বার্তা গেছে। বাগদা ও রানাঘাটে মার্জিন কেন বাড়ল এতো বা কেন এমন হল সেটা দল নিশ্চয় দেখবে।’’
বাগদা রানাঘাট দক্ষিণে পরাজয় সম্পর্কে বিজেপির প্রধান মুখপাত্র জানান, ‘‘আমরা পরাজিত হয়েছি বলে পরাজিতের আর্তনাদ এমন নয়। আজকের সময় ভোটের সংগঠন বলতে যেটা বোঝায় সেটা আমরা তৈরি করতে পারিনি। বোমা পিস্তলের পাল্টা তো বোমা লাঠি হয় না। তবে এগুলোকে প্রতিহত করার জন্য যে ধরনের সংগঠন দরকার সেটা আমরা তৈরি করতে পারিনি। যেভাবে সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে ভোট হয়েছে বা ভোট হয় বাংলায় সেটা বুঝতে হবে। জনসমর্থন আছে আমাদের জনভিত্তি আছে। এই ধরনের ফল পার্টি গত ভাবে আমাদের প্রত্যাশিত ছিল। তবে যে জায়গা গুলোয় আমাদের প্রার্থীরা হারলেন সে জায়গায় আমাদের জনভিত্তি একটুও নড়েনি আগামীতে প্রমাণ পাবেন। ভোটের মার্জিন প্রমাণ করছে ভোট কেমন হয়েছে।’’
উপনির্বাচনের ফলাফল দিয়ে জনমানসের প্রকৃত ফলাফল সম্পর্কে নিজস্ব চিত্র প্রতিফলন করা সম্ভব নয় তাও জানালেন শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘আমিও একবার উপনির্বাচনে জিতেছি তাই বলে কি বাংলার মানুষ তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বর্জিত করেছিল নাকি? এটা হয় না।’’
এই মুহূর্তে দাড়িয়ে শাসক দলের বিরুদ্ধে ভোটে লড়াই করার মতো সংগঠন বিজেপির নেই। এটা অস্বীকার করতে আমাদের লজ্জা নেই। আমরা পারিনি সে ধরনের সংগঠন তৈরি করতে এটা আমাদের ব্যর্থতা। ‘২৬ শে ভোট হবে না, তার আগেই বাংলার মানুষ নতুন সরকার পাবে।’ জানালেম শমীক ভট্টাচার্য।