গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দাদের অ্যাকাউন্টে কোটি টাকা, ২০ বছর বয়সীদের নতুন গাড়ি-বাড়ি, ব্যবসা শুনলে মাথা ঘুরে যাবে!

গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দাদের অ্যাকাউন্টে কোটি টাকা, ২০ বছর বয়সীদের নতুন গাড়ি-বাড়ি, ব্যবসা শুনলে মাথা ঘুরে যাবে!

Report: Munna Raj

বেত্তিয়া, বিহার: ভারত-নেপাল সীমান্ত এলাকাগুলিতে সাইবার ক্রাইমের ঘটনা দিনদিন বাড়ছে। সাইবার অপরাধীদের আতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে বিহারের পশ্চিম চম্পারণের জাভাকাতিয়া গ্রাম। এখানকার একটি গ্যাংয়ের সঙ্গে পাকিস্তান যোগ পাওয়ার পরেই তদন্ত শুরু করে পুলিশ।

জাভাকাতিয়া এক আশ্চর্য গ্রাম। নিউজ 18 টিমের তদন্তে উঠে এসেছে চমকে দেওয়া সব তথ্য। ন্যাশনাল হাইওয়ে ৭২৭-এর কাছে অবস্থিত এই গ্রামের জনসংখ্যা ১৩ হাজার। গ্রামের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভাড়ায় খাটান। ২০ বছর বয়সী তরুণরা একাধিক গাড়ি, বাড়ির মালিক, সবই কালো টাকায়। জানা গিয়েছে, সাইবার প্রতারণা চক্রে যোগ দিচ্ছেন এখানকার মহিলারাও।

আরও পড়ুন– বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরির সম্ভাবনা প্রবল! উইকেন্ডে জমিয়ে বৃষ্টি দক্ষিণবঙ্গে

আট বছর আগে সাইবার অপরাধ জগতে হাতেখড়ি হয় গ্রামের এক যুবকের। সেই শুরু। তারপর থেকে খুব অল্প সময়ের মধ্যে সাইবার জালিয়াতির কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে এই গ্রাম। মাঝোলিয়া থানার জাভাকাতিয়া গ্রামের ৩০০ জনের বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইমে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। দলে দলে যোগ দিচ্ছে গ্রামের যুবক-যুবতীরা। সম্প্রতি কাটিহার সাইবার পুলিশের হাতে ধরা পড়ে নেস্তাক আলম নামের এক যুবক। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই পাকিস্তান যোগের কথা জানতে পারে পুলিশ।

নেস্তাকের সঙ্গে পুলিশের জালে ধরা পড়ে ঈশা কুমারী নামের এক তরুণীও। তাদের কাছ থেকে ১৬টি এটিএম কার্ড, কোটি টাকার ব্যাঙ্ক লেনদেনের প্রমাণ, কয়েকশ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণ, প্যান কার্ড, ১০০-এর বেশি ব্যাঙ্কিং কিউআর কোড এবং পাকিস্তানি মোবাইল নম্বর উদ্ধার হয়েছে।

আরও পড়ুন– নিজের প্রাক্তন প্রেমিকের নামে সন্তানের নামকরণ করেছিলেন স্ত্রী, জানতেন না স্বামী; ছোটবেলার বন্ধুই করলেন আসল রহস্য ফাঁস

মাঝোলিয়া শাখায় জাভাকাতিয়ার ১১৭টি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক। সন্দেহজনক লেনদেনের ঘটনা সামনে আসার পরই এই পদক্ষেপ করে দেশের বৃহত্তম সরকারি ব্যাঙ্ক। গ্রামের অন্যান্য বাসিন্দাদের অ্যাকাউন্টেও নজর রাখা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, জালিয়াতি করে হাতানো অর্থ নেপালি মুদ্রায় রূপান্তরিত করে পাকিস্তানে পাঠানো হত। এমনকী, ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বদলে নেওয়া হয়েছে বড় অঙ্কের টাকা।

২০১৯ সালে শাহিদ নামের এক যুবকের অ্যাকাউন্টে কোটি টাকা লেনদেন হয়। তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তখনই প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে আসে সাইবার অপরাধের গল্প। সামনে আসে আরেক জালিয়াত জিয়াউল হকের নাম। সরাসরি পাকিস্তানের সঙ্গে তার যোগাযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়। পরিচয় লুকনোর জন্য নেপালি সিম দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট খুলে পুলিশের সঙ্গেই প্রতারণা করেছিল জিয়াউল। জামতাড়ার পর জাভাকাতিয়া গ্রাম হয়ে উঠেছে সাইবার ক্রাইমের হাব।