উত্তর ২৪ পরগনা: তাঁর হাত দিয়েই হয় বড় বড় মামলার রায় ঘোষণা। এবার সাইবার প্রতারণার ফাঁদে পড়ে বোকা হতে হলেন খোদ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট! হোটেল বুকিং-এর নামে ফেক ওয়েবসাইট খুলে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকের সঙ্গে হল প্রতারণা। গ্রেফতার দুই অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে বিধাননগর মহাকুম আদালত।
জানা যায়, বেড়াতে যাওয়ার জন্যে অনলাইনে হোটেল বুক করে প্রতারণার শিকার হন বিচারপতি সোমশুভ্র ঘোষাল। ঘটনার তদন্ত শুরু করে, রাজস্থান ও আরামবাগ থেকে মূল অভিযুক্ত সহ দুজনকে গ্রেফতার করে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, গত কয়েক বছর আগে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সোমশুভ্র ঘোষাল বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ করেন। জানান, তিনি তার পরিবার নিয়ে পুরীতে ঘুরতে যাওয়ার জন্যে অনলাইন মাধ্যমে একটি ৫ তারা হোটেল বুকিং করার চেষ্টা করেন। সেই সময় তাকে সেই হোটেলের বুকিং প্রসিডিউরের জন্যে একজন ফোন করে। সেখানে তাকে হোটেলে বুকিং করার জন্যে টাকা জমা করতে বলা হয় এবং তাকে একটি একাউন্ট ডিটেলস দেওয়া হয়। তিনি সেই একাউন্টে ৯২ হাজার টাকা ট্রান্সফার করেন।
তবে কিছুদিন পরে ওই হোটেলে খোঁজ নিলে জানতে পারেন তাঁর নামে হোটেলে কোনও বুকিং হয়নি। এরপরই তিনি বুঝতে পারেন প্রতারণার শিকার হয়েছেন। ঘটনার কথা পুলিশকে জানাতেই, তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তদন্তকারী আধিকারিকেরা জানতে পারেন, ওই হোটেলের ভুয়ো ওয়েবসাইট তৈরি করে এই প্রতারণা চক্র চালানো হচ্ছিল। এরপরই টাকা কোন একাউন্টে জমা পড়েছে সেই সূত্র ধরে রাজস্থানের ভরতপুর এলাকায় হানা দেয় পুলিশের বিশেষ দল। সেখান থেকেই এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত প্রেম চাঁদকে গ্রেফতার করা হয়। ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতা নিয়ে এসে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে, আরামবাগ থেকে আরও এক প্রতারক স্বর্ণদীপ রায়কে গ্রেফতার করে।
সাইবার ক্রাইম প্রতারণা বিষয়ে সচেতন করতে ইতিমধ্যেই প্রশাসনের তরফ থেকে নানা ভাবে সচেতন করা হয় মানুষজনকে। চোখ-কান খোলা রেখে সচেতন হয়ে তবেই করুন অনলাইন ট্রানজাকশন বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৪১৯, ৪২০, ৪৬৭,৪৬৮ এবং ৪৭১ ও ১২০ বি ইন্ডিয়ান পিনাল কোডে এদেরকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। আদালতের কাছে আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি রাখবেন বলেই জানান।
Rudra Narayan Roy