Bangladesh Unrest: বাংলাদেশে জারি ‘শ্যুট অ্যাট সাইট’ অর্ডার! দেশজুড়ে কার্ফু, কোটা নিয়ে আজই নিদান সুপ্রিম কোর্টের

বাংলাদেশ: দেখা মাত্রই গুলি করার নির্দেশ৷ বাংলাদেশে ছাত্র বিক্ষোভ থামাতে এবার এমনই নৃশংস নিদান৷ গত এক সপ্তাহজুড়ে চলা কোটা বিরোধী রক্তক্ষয়ী আন্দোলনে ইতিমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ১৩৩ জন বাংলাদেশী৷ যাঁদের মধ্যে অধিকাংশই পড়ুয়া৷ এই আন্দোলনই সম্ভবত সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন শেখ হাসিনার কাছে৷ দেশের এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির জেরে রবিবারের কূটনৈতিক বিদেশ সফরও বাতিল করেছেন তিনি৷

দেশজুড়ে আন্দোলনে তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং মৃতের সংখ্যা উত্তরোত্তর বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত শুক্রবারই বাংলাদেশজুড়ে কার্ফু জারি করেছে সে দেশের প্রশাসন৷ নামানো হয়েছে সেনা৷ শনিবার মানুষকে জরুরি সরঞ্জাম কিনতে দেওয়ার জন্য কিছুক্ষণ কার্ফু তোলা হলেও ফের মানুষকে বাড়ি থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে৷ বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছে যে কোনও রকমের জমায়েত বা বিক্ষোভ প্রদর্শন৷

শাসকদল আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, ‘চরম অবস্থায়’ জনতার উপর গুলি চালানোর অনুমতিও দেওয়া হয়েছে সেনাবাহিনীকে। এই আবহে রবি এবং সোমবার সারা দেশে সাধারণ ছুটিও ঘোষণা করে দিয়েছে সে দেশের সরকার।

আরও পড়ুন: আগুন দর টম্যাটোর! রেহাই নেই আলু-পেঁয়াজেও…আরও খারাপ দিন আসছে কি?

কার্ফুর কারণে মৃত্যুর সংখ্যা কমবে বলেই মনে করছে সরকার। যদিও বিবিসি নিউজ় বাংলার দাবি, শনিবার সাত জনের মৃত্যু হয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে ওই সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, শনিবার সেখানে সাত জনের মৃতদেহ পৌঁছেছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এক পুলিশকর্মীও। ওই সংবাদমাধ্যমের আরও দাবি, সাভারেও এক জনের মৃত্যু হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবারই বাংলাদেশজুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবা শাটডাউন করে দেওয়া হয়েছিল৷ এর জেরে সরকারি ওয়েবসাইট তো বটেই, বাংলাদেশের প্রথমসারির সংবাদমাধ্যমও তাঁদের খবর আপডেট করতে পারছেন না৷

তবে আজ, রবিবারই বিতর্কিত কোটা সিস্টেমের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা সে দেশের সুপ্রিম কোর্টের৷ অ্যাটর্নি জেনারেল আমিনুদ্দিন মানিকের দাবি, কোটা সংস্কার নিয়ে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তা বাতিলের আবেদনই করবে সরকার। ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন বড় আকার নিয়েছিল। সেই আন্দোলনে চাপে পড়ে সংসদে দাঁড়িয়ে সব ধরনের সংরক্ষণ বাতিলের কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা।

আরও পড়ুন: গন্তব‍্য একটাই, ধর্মতলা! কাতারে কাতারে মানুষ আসছে, এবারই হবে ২১ জুলাইয়ের ভিড়ের রেকর্ড?

রাখা হয় শুধু জনজাতিদের ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের ১ শতাংশ সংরক্ষণ। কিন্তু সংরক্ষণ বাতিলের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে হাইকোর্টে যান কয়েক জন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। আদালত তাঁদের পক্ষে রায় দেয়। এর জেরে আবার আগের মতো সংরক্ষণ ব্যবস্থা চালু হয়ে যায় বাংলাদেশে। হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করে হাসিনা সরকার। সেই মামলার শুনানিই হবে রবিবার। আপাতত বাংলাদেশ-সহ গোটা দুনিয়ার চোখ সে দিকে।

গত শনিবারই বাংলাদেশে পড়তে যাওয়া প্রায় ১০০০ ভারতীয় পড়ুয়া ফিরেছেন এদেশে৷ কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, বাংলাদেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের নিরাপত্তা যাতে কোনও ভাবে বিঘ্নিত না হয়, সেটাই এখন মূল লক্ষ্য ভারতের৷