মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

চিকিৎসক থাকতেও বেহাল আয়ুষ পরিষেবা? জেলায় জেলায় বিডিওদের বিশেষ নির্দেশ নবান্নের

কলকাতা: আয়ুষ কতৃর্পক্ষের চিঠি পেয়েই অবশেষে উদ্যোগী হল নবান্ন। জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সরকারি ডিসপেন্সারিতে আয়ুষ চিকিৎসকদের জন্য কম্পিউটার ও ইন্টারনেট পরিষেবার ব্যবস্থা করতে। তা না হলে আয়ুষ পোর্টালের সুবিধা তারা পাবেন না। গ্রামাঞ্চলে এখনও সক্রিয় ভাবে কাজ করতে পারছেন না আয়ুষ চিকিৎসকরা। পরিকাঠামোগত সুবিধা না থাকায় রেজিস্ট্রারড আয়ুষ চিকিৎসকরা থেকেও কাজ করতে পারছেন না, এমনই অভিযোগ।

গ্রামাঞ্চলে এই চিকিৎসা পদ্ধতিকে জনপ্রিয় করতে আয়ুষ চিকিৎসকদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই পোর্টাল তৈরি করেছে। যার সাহায্যে চিকিৎসকরা বিভিন্ন ধরনের রোগীর সমস্যার কথা নথিভুক্ত করে পরামর্শ পেতে পারেন বিশেষজ্ঞদের। এই চিকিৎসার আপডেটও গ্রামে কর্মরত আয়ুষ চিকিৎসকদের কাছে পৌছে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু রাজ্যের সরকারি ডিসেপন্সারিতে না রয়েছে কম্পিউটার না ইন্টারনেট পরিষেবা। ফলে কেন্দ্রীয় পোর্টালকে চিকিৎসার কাজে ব্যবহারই করতে পারছেন না আয়ুষ চিকিৎসকরা।

ইতিমধ্যেই আয়ুষ কতৃর্পক্ষ বিষয়টি রাজ্য প্রশাসনের নজরে এনে সহযোগিতার আর্জি জানিয়েছেন। স্বাস্থ্য পরিকাঠামোগত ‘বটলনেক’ পরিস্থিতির জন্যই আয়ুষ পরিষেবা গ্রামাঞ্চলে ভালোভাবে চালু করা যাচ্ছে না বলে স্বীকার করে নিয়েছে নবান্ন। সরকারি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কিছু জেলা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। নবান্ন সূত্রে জেলাশাসকদের জানানো হয়েছে, বিডিওদের এখনই নির্দেশ দিতে যাতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে আয়ুষ চিকিৎসকদের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা ও কম্পিউটারের উপযুক্ত ব্যবস্থা করা হয়।

স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট বলছে, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ১১৭৮টি সরকারি ডিসপেন্সারি বা ক্লিনিক খোলা হয়েছে। যেখানে ১২৪০ জন চিকিৎসক রয়েছে। অথচ জেলাগুলিতে একটিও মডেল ক্লিনিক নেই। অর্থাৎ নীচুতলায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উদাসীনতাই যার প্রকাশ বলে মনে করা হচ্ছে।

গ্রামীন ক্লিনিকগুলিতে ৫৪৩ জন আয়ুষ চিকিৎসক রয়েছেন। তাঁদের ওপর নির্ভর করে নীচুতলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চালু রয়েছে। অথচ কোনও ক্লিনিকেই ইন্টারনেট পরিষেবা নেই। মাত্র ৫৮২টি ক্লিনিকে কম্পিউটার রয়েছে। সেগুলির যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ হয় না। সাজানো রয়েছে মাত্র। প্রিন্টার পর্যন্ত নেই। কাজ হবে কী করে?

হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রাম, কোচিবহারের মতো সব জেলাতেই বহু ক্লিনিক রয়েছে যেখানে আয়ুষ চিকিৎসক থাকলেও আলাদা বসার ঘর নেই। ফলে রোগী দেখতে তাঁদের সমস্যায় পড়তে হয়। কী ভাবে তাঁরা চিকিৎসা করবেন? সব মিলিয়ে নবান্নের তরফে এবার নির্দেশ, জেলায় জেলায় আয়ুস পরিষেবাকে সাজিয়ে তুলতে হবে।

সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়