ছাতনার পেড়া

Bankura News: চিনি ক্ষীরে মাখামাখি…ছাতনার বিখ্যাত পেড়া খেয়ে মুগ্ধ হয়েছিলেন ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ও

বাঁকুড়া: বাঁকুড়া জেলার গ্রাম  ছাতনা… এই গ্রামের পরিচিতি মা বাসুলীর মন্দির, শুশুনিয়া পাহাড়, বড়ু চন্ডীদাস এবং ছাতনার পেড়া। শোনা যায় ১৯৬৭ সালে জনপ্রিয় হাসির ছবি ‘আশিতে আসিওনা’ -র শুটিং হয়েছিল ছাতনার শুশুনিয়া পাহাড়ে। সিনেমার মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন কিংবদন্তী  ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নাকি ছাতনার পেড়া খেয়ে মুগ্ধ হয়েছিলেন। নিয়ে গিয়েছিলেন বাড়ির জন্য-ও।  যে দোকানটি থেকে ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় পেড়া কিনেছিলেন,  সেই দোকানটি এখনও আছে। আজ-ও  রমরমিয়ে বিক্রি হচ্ছে ছাতনার প্রসিদ্ধ পেড়া।

কীভাবে জন্ম হল ছাতনার পেড়ার? বাঁকুড়ার ছাতনার লৌকিক ইতিহাসের পৃষ্ঠপোষক এবং ক্ষেত্র সমীক্ষক স্বরাজ মিত্র বলেন, ছাতনার পেড়ার প্রসিদ্ধি ছাতনা রাজবাড়ির অন্দরমহল পর্যন্ত ছিল। রানি আনন্দ কুমারীর সময় থেকেই এই বিশেষ মিষ্টান্নের জনপ্রিয়তা ছড়িয়েছিল, যা বহাল ছিল  ত্রিগুনা প্রসাদ সিং দেও-র আমল পর্যন্ত। তিনি আরও বলেন, ছাতনার পেড়ার পরিচিতি তৈরি করেছিলেন আদি প্রহ্লাদ চন্দ্র ময়রা। ঘরে চালের দোকানের মধ্যেই তৈরি করতেন পেড়া। আজও রয়েছে সেই দোকান, পাওয়া যায় পেড়া, তবে পাল্টেছে ছবিটা।

শুরুটা যার হাত দিয়েই হোক না কেন, ছাতনার পেড়ার রমরমা কিন্তু একটা দোকানকে কেন্দ্র করে। ছাতনা থানার উল্টোদিকের ছোট্ট একটি মিষ্টির দোকান। বাইরে থেকে দেখলে মনেই হবে না দোকানটির এত চাহিদা। কীভাবে বানানো হয় এই পেড়া? দোকানের মালিক মুকুল মুখোপাধ্যায় বলেন, প্রথমে দুধ গরম করে ফুটিয়ে তৈরি করা হয় ক্ষীর। এবার প্রতি এক কেজি ক্ষীরে মেশানো হয় ১০০ গ্রাম চিনি। এরপর সেই মণ্ডকে ‘ছাতনার পেড়া’ লেখা ছাঁচে ফেলে তৈরি হয় বিভিন্ন আকারের পেড়া। সব থেকে ছোট পেড়ার দাম ৫ টাকা, মাঝারি সাইজের দাম ১০ টাকা এবং সবচেয়ে বড় পেড়াটির দাম কুড়ি টাকা। একেকদিনে হাজার পিস পর্যন্ত পেড়া তৈরি করেছে এই দোকান।

নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়