তরুণ ফুটবলার

Hooghly News: ফুটবল পায়ে লাল হলুদ জার্সিতে মাঠ কাঁপাবে দীপাঞ্জন, চাঁদ ও শিশির! পাশে পুলিশ অধিকর্তা

হুগলি: ফুটবল পায়ে মাঠ কাঁপাচ্ছে পান্ডুয়ার বৈঁচীগ্রামের তিন কিশোর। অনূর্ধ্ব ১৫ ও অনূর্ধ্ব ১৩ তে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছে তিন কিশোর চাঁদ ,দ্বীপাঞ্জন এবং শিশির। গ্রামের দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসেছে তারা, ফুটবল খেলার স্বপ্নে যেন কোনও খামতি না আসে তাই পাশে তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন পুলিশকর্মীরা। পড়াশোনা করে ফুটবল নিয়ে দেখা স্বপ্ন বস্তবায়িত করতে প্রতিদিন লড়াই করছে এই তিন কিশোর ফুটবলার।

তিন জনের মধ্যে দীপাঞ্জন টুডু অনূর্ধ্ব ১৫ এবং চাঁদ ক্ষেত্রপাল এবং শিশির সরকারের অনূর্ধ্ব ১৩ দলে নির্বাচিত হয়েছে। দরিদ্র পরিবারের এই সব প্রতিভাধর ছেলেরা আগামী দিনে যাতে ফুটবল খেলে তাদের ভবিষ্যৎ তৈরি করতে পারে তার জন্য পাশে দাঁড়ালেন বৈঁচী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাজির উদ্দিন আলি। কয়েক জন সহকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে খুদে ফুটবলারদের বাড়ি গিয়ে বুট, ফুটবল জার্সি, প্যান্ট এবং ফুটবলের কিট তুলে দিয়ে আসেন। পাশাপাশি যে কোনও প্রয়োজনে তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন পান্ডুয়ার পুলিশকর্মীরা।

দীপাঞ্জন বলেন, “বাবা ফুটবল খেলতে ভালোবাসত। তার স্বপ্ন ছিল আমাকে ফুটবলার তৈরি করার। ছোট থেকে বাবা আমাকে মাঠে নিয়ে গিয়ে ফুটবল প্র্যাকটিস করাত। তখন থেকেই আমার ফুটবল খেলতে ভাল লাগে। বেলঘড়িয়াতে গিয়ে একমাস ধরে সেখানে ফুটবলের ট্রায়াল চলে। সেখানে দু’-তিন ঘণ্টা করে প্র্যাকটিস করতে হত। পরবর্তীতে মাঠ পরিবর্তন করে ডায়মন্ড হারবার এর কাছে মাঠে প্র্যাকটিস করতাম সেখান থেকে আইলিগ শুরু হয়। সেখান থেকে জুনিয়র অনূর্ধ্ব ১৫ ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে খেলার সুযোগ পাই”।

চাঁদ বলে, “আমি ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের অনূর্ধ্ব ১৩-তে খেলার সুযোগ পেয়েছি। বাড়িতে এসে পুলিশ কাকুরা আমাদের সংবর্ধনা দিয়ে গেছে, এটা আমাদের কাছে গর্বের। আমরা চাই আগামী দিনে বড় ফুটবলার হতে। রোনান্ডো আমার কাছে গুরুদেব , তার খেলা, গোল করা, সেলিব্রেশন তার সবকিছুই আমার ভাল লাগে”।

শিশির বলে, “ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে খেলতে যাচ্ছি আমরা। ওড়িশাতে খেলতে গিয়েছিলাম। সেখানে আমরা লিগ টপার হয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে আমরা দ্বিতীয় রাউন্ডে হেরে যাই। বাবা দিনমজুরের কাজ করে তা দিয়ে যা আয় হয় কোনও রকমে চলে আমাদের সংসার। বাবার উপার্জনে খেলা চালানো দুঃসাধ্য হয়ে পড়ছে। পুলিশ কাকুরা এসে আমাদের জুতো, বল, ব্যাগ দিয়ে গেছেন। এটা আমাদের কাছে গর্বের। কোনও রকম অসুবিধা হলে তাদের কাছে গিয়ে সাহায্য চাইব। তবে আমরাও চেষ্টা করব যাতে আগামী দিনে আমরা এই গ্রামের নাম উজ্জ্বল করতে পারি।

শিশির-চাঁদদের কোচ অমিতাভ দাস স্থানীয় বৈঁচী মাঠে প্র্যাকটিস করান।তিনি জানান গ্রাম থেকে ছেলেরা খুবই কষ্ট করে কলকাতার মাঠে খেলতে যায়। তবে তাদের চেষ্টা আছে আগামী দিনে বড় হয়ে বড় ক্লাবে খেলবে। তেমন ভাবেই নিজেদের তৈরী করছে। অভাব আছে কিন্তু অভাবকে জয় করেই এগিয়ে যেতে হবে। অমিতাভর কোচিংয়ে এরকম প্রায় ২০ জন খুদে ফুটবলার কলকাতার বিভিন্ন ক্লাবে খেলছে।