চুরু: সীমা হায়দরকে নিশ্চয়ই সকলের মনে আছে! সেই প্রেমের টানে সব কিছু ছেড়েছুড়ে পাকিস্তান থেকে পাড়ি দিয়েছিলেন ভারতে। এবার সেই সীমার পথেই হাঁটলেন আরও এক পাক যুবতী মেহভিশ। তিনিও রাজস্থানের চুরুর যুবক রহমানের প্রেমে হাবুডুবু খেয়ে এসে পৌঁছেছেন ভারতে।
অনলাইনেই আলাপ হয়েছিল রহমান আর মেহভিশের। তৈরি হয় বন্ধুত্ব, ক্রমে তা গড়ায় প্রেমে। যদিও আগে থেকেই বিবাহিত ছিলেন ওই যুবক। কিন্তু তাতে কি আর প্রেম থেমে থাকে! ফলে শীঘ্রই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে সৌদি আরবে নিকাহ করেন রহমান এবং মেহভিশ। এক সাক্ষাৎকারে মেহভিশের সঙ্গে প্রেম থেকে বিয়ের পর্ব তুলে ধরেছেন রহমান।
তবে দিন কয়েক আগেই সেই প্রেমের কাহিনিতে এসেছে এক নয়া মোড়। কারণ হনুমানগড়ের ভদ্রায় রহমানের বিরুদ্ধে একটি মামলা ঠুকেছেন তাঁর প্রথম স্ত্রী ফরিদা বানো। আসলে ফরিদার অভিযোগ, তাঁকে তিন তালাক দিয়ে তাঁর স্বামী এক পাক যুবতীকে বিয়ে করেছেন। এখানেই শেষ নয়, স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে পণের জন্য চাপ দেওয়ার অভিযোগও এনেছেন ফরিদা।
রহমানের প্রথম স্ত্রী ভদ্রা বাসিন্দা। ২০১১ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। ওই দম্পতির দুটি সন্তান রয়েছে। কিন্তু কিছু বছর আগে রহমান আর ফরিদার মধ্যে সমস্যা দেখা দেয়। ফলে সন্তানদের নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে যান ফরিদা। বর্তমানে তিনি ভদ্রাতেই থাকেন। আর রহমান হলেন চুরু জেলার রতননগর থানার পিথিসর গ্রামের বাসিন্দা। কুয়েতে পরিবহণ বিভাগে কাজ করেন তিনি। রহমানের ভাই সালিম গ্রামে একটি মুদির দোকান চালান। নিজের প্রাক্তন স্বামী, দেওর, ননদ, শাশুড়ি-শ্বশুর সকলের বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের করেছেন ফরিদা।
আরও পড়ুন : পলিমাটির কাশবনে আগমনীর বার্তা, নদীর বুকে ময়ূরপঙ্খীতে আনন্দবিহার…বর্ষায় চলুন তিস্তাপারের বৃত্তান্ত জানতে
এদিকে মেহভিশ আদতে পাকিস্তানের লাহোরের বাসিন্দা। তাঁরও দুই সন্তান রয়েছে। আগের স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। দিন কয়েক আগে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা ৪৫ দিনের পর্যটন ভিসায় ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে মেহভিশকে ভারতে এনেছেন। আর বিদেশিনী বৌমা পেয়ে যারপরনাই উচ্ছ্বসিত তাঁরা। local 18-এর কাছে নতুন পুত্রবধূর প্রশংসাও করেছেন শ্বশুরমশাই। তবে রহমান এখনও ভারতে আসেননি। খুব শীঘ্রই দেশে আসবেন বলে জানান তাঁর স্ত্রী।
আর ভারতে এসে কেমন লাগছে মেহভিশের? local 18-কে জানান, ভারতীয় ড্রামা দেখতে পছন্দ করেন তিনি। ফলে কোনও ভারতীয়ের সঙ্গে কথা বললে মন আনন্দে ভরে যেত। এখনও পর্যন্ত ভারতের কোন বিষয়টা সবথেকে ভাল লাগল তাঁর? জবাবে মেহভিশ বলেন, “এখনও পর্যন্ত বাইরে কোথাও যাইনি। তাই বাইরের কিছুই দেখিনি। ঘরের বিষয়টাই শুধু বলতে পারি। রহমানের বাড়ির সকলকে খুব ভাল লেগেছে। ওঁরা আমায় খুব ভালবাসেন। বাড়ির বৌমাকে একেবারে মেয়ের মতোই দেখেন।”
এদিকে পাক চরবৃত্তির অভিযোগ উঠেছে মেহভিশের বিরুদ্ধে। সেই প্রসঙ্গে ভারত সরকারের কাছে তাঁর আর্জি, “আমাকে এখানে থাকার ভিসা দেওয়া হোক। আমি আমার শ্বশুরবাড়িতে সকলের সঙ্গে থাকতে চাই। আমার বিরুদ্ধে যা অভিযোগ উঠছে, উঠুক। আমি তো চোর নই যে, ভয় পাব। আর সব কিছু যাচাই করে তবেই এই দেশে প্রবেশের অনুমতি পেয়েছি।”