রটন্তী কালী মন্দিরের ভেতর বইছে কুনুর নদীর স্রোত, পুরোহিত যাচ্ছেন কাঁধে চড়ে

বর্ধমান: একরকম কাঁধে চেপে পুজো করতে যাচ্ছেন পুরোহিত। গুসকরায় রটন্তী কালী মন্দির চত্বর দিয়ে বইছে কুনুর নদীর স্রোত। মন্দিরের চাতাল ডুবে গিয়েছে। যে কোনও সময় জল ঢুকতে পারে মন্দিরের গর্ভগৃহে।

মন্দির চত্বর বানভাসি হওয়ায় যেতে পারছেন না দর্শনার্থীরা। তবে মন্দিরে পুজো কোনও দিন বন্ধ হয় না। তাই পুরোহিতকে যেতে হচ্ছে দুজনের কাঁধে ভর দিয়ে। না হলে স্রোতের টানে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা পদে পদে।

রাজ্যের অন্যতম শক্তি সাধনার ভূমি গুসকরায় রয়েছে এই রটন্তী কালীর মন্দির। এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন সিদ্ধ তান্ত্রিক রতনেশ্বর। তাও প্রায় ৩০০ বছর আগে। মন্দিরের উত্তর দিকে তাঁর সমাধি রয়েছে।

আরও পড়ুন- স্কুটিতে বাবা-মেয়ে, সঙ্গে ট্রলি, ব‍্যাগ খুলতেই যা বেরল! পুলিশের চক্ষু চড়কগাছ

এই মন্দিরের গর্ভগৃহে পঞ্চমুণ্ডির আসনের ওপর উঁচু বেদিতে চতুর্ভুজা দেবী রটন্তী কালী শিবের বুকের ওপর দাঁড়িয়ে আছেন। প্রতি বছর মাঘ মাসের রটন্তী চতুর্দশীতে খড়-মাটি দিয়ে দেবীর বিগ্রহ নির্মাণ করা হয়।

রটন্তী কালীপুজো থেকে শুরু করে সাত দিন ধরে দেবীর পুজো করা হয়। পুজোর পরই দেবীকে বিসর্জন দেওয়া হয় পাশের কুনুর নদীতে। এই মন্দিরে নিত্যপুজো হয়। প্রতি অমাবস্যায় হয় বিশেষ পুজো।

প্রতিদিনই দূর দুরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন গুসকরার এই জাগ্রত মন্দিরে। নদীর জলে দেবীর গা থেকে মাটি ধুয়ে যাওয়ার পর কাঠামোটি মন্দিরে আনা হয়। সেখানে মাটি দিয়ে দেবীর বিগ্রহ ও মহাদেবের মুখমণ্ডল তৈরির পর কাঠামোর বাকি অংশে কাপড় পরিয়ে বছরভর পুজো করা হয়।

রটন্তী কালীপুজো ছাড়াও এই মন্দির প্রতি অমাবস্যায় বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। শ্যামাপুজোয় রীতিমতো ঘটা করে কালীর আরাধনা করা হয়।

সেই মন্দিরের চাতাল দিয়ে এখন বইছে কুনুর নদীর স্রোত। জল সামান্য বাড়লেই তা ঢুকে যাবে মন্দিরের গর্ভগৃহে। ফলে চিন্তায় রয়েছেন পুরোহিত সহ সকলেই। স্হানীয় বাসিন্দারা জানালেন, এই পরিস্থিতিতে পুণ্যার্থীদের যেতে দেওয়া হচ্ছে না। জলের স্রোতে যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। জল কমলে আবার সবাই মন্দিরে যেতে পারবেন। তবে পুজো বন্ধ হচ্ছে না। সাবধানে পুরোহিতকে মন্দিরে নিয়ে আসা হচ্ছে।