দুর্গাপুর ব্যারেজ পরিদর্শনে বাঁকুড়ার জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপার।

Flood Situation: মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তার পরই দুর্গাপুর ব্যারেজ দেখতে ছুটলেন জেলাশাসক ও এসপি

পশ্চিম বর্ধমান: ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে ডিভিসি’র দুর্গাপুর ব্যারেজ। দফায় দফায় বাড়ছে জল ছাড়ার পরিমাণ। ফলে দক্ষিণবঙ্গের বহু জায়গায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। যা নিয়ে রীতিমত উষ্মা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসকদের। তারপরই দুর্গাপুর ব্যারেজ পরিদর্শন করলেন বাঁকুড়ার জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপার। দেখলেন দুর্গাপুর ব্যারেজের ভয়াল রূপ।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতি এবং শুক্রবার ভারী বৃষ্টিপাতের পর দফায় দফায় জল ছেড়েছে ডিভিসি। দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে বেড়েছে জল ছাড়ার পরিমাণ। শনিবারের পর এদিন রবিবারও প্রচুর পরিমাণে জল ছাড়া হয়েছে। শেষ পাওয়া খবর পর্যন্ত, দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে ছাড়া হয়েছে ১ লক্ষ ১২ হাজার ৮৩৬ কিউসেক জল। সূত্রের খবর, রাত্রের দিকে আরও জল ছাড়া হতে পারে।

এমন অবস্থায় নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলিতে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দুর্গাপুর ব্যারেজ পরিদর্শন করেছেন বাঁকুড়া জেলাশাসক সৈয়দ এন এবং পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি। তাঁরা কথা বলেছেন সেচ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গেও। ঘুরে দেখেছেন দুর্গাপুর ব্যারেজের স্কাডা সেন্টার, অর্থাৎ ব্যারেজ থেকে কত জল ছাড়া হচ্ছে, বর্তমান পরিস্থিতি যেখান থেকে কন্ট্রোল করা হয়, সেই জায়গা।

আর‌ও পড়ুন: শতাব্দী প্রাচীন বটগাছ বাঁচাতে এ কী করল প্রাক্তনীরা! শুনলে ধন্য ধন্য করবেন

জেলাশাসক সৈয়দ এন জানিয়েছেন, বাঁকুড়ার বেশ কয়েকটি এলাকা ইতিমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে। সেখান থেকে প্রায় কুড়ি হাজার মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে এখনও চলছে উদ্ধার কাজ। প্রশাসনের নজর রয়েছে সবসময়। যাতে কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা না হয়, তার জন্য সব রকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে। অন্যদিকে ডিভিসি কর্তৃপক্ষের কাছেও জল কম ছাড়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে খবর।

অন্যদিকে পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি জানিয়েছেন, বেশ কিছু খালের উপর দিয়ে জল বইছে। সেই জায়গাগুলিতে সিভিক ভলেন্টিয়ারদের মোতায়েন করা হয়েছে। ওইসব জায়গা দিয়ে মানুষজনের যাতায়াত সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে। দুর্গাপুর ব্যারেজে যাতে এই সময় কেউ না নামেন, তার জন্য নজরদারি চালাতে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশকর্মীদের। পাশাপাশি যারা নদীতে নামছেন বা মাছ ধরতে যাচ্ছেন তাঁদেরও সতর্ক করা হচ্ছে। বিপদ এড়াতে পুলিশ কর্মীরা বারবার সবাইকে সচেতন করছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।

উল্লেখ্য, দুর্গাপুর ব্যারেজ বাঁকুড়ার বড়জোড়া থানার অধীনস্ত। তাই মুখ্যমন্ত্রীর উষ্মা প্রকাশের পরই জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপার বর্তমান পরিস্থিতি খতিয়ে দেখলেন বলে মনে করছেন অনেকে। অন্যদিকে, দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে রবিবার রাতে আরও জল ছাড়া হবে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। কারণ এদিনও দামোদরের পাঞ্চেত জলাধার থেকে ১ লক্ষ ১৪ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। যে জল রাতে দুর্গাপুর ব্যারেজে এসে পৌঁছবে। ফলে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ আরও বাড়বে। যা রীতিমত আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠেছে মানুষের কাছে।

নয়ন ঘোষ