প্রকাশিত বই হাতে জন্মেঞ্জয় সাহু

Bangla Video: ছোট থেকে আজ‌ও এই নেশায় বুঁদ, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের কাণ্ড শুনলে চমকে উঠবেন

পশ্চিম মেদিনীপুর: প্রথম জীবনে তিনি চাকরি পেয়েছিলেন রেভিনিউ দফতরে। তবে বরাবরের সাহিত্যের প্রতি নেশার টানে যোগদান করেন শিক্ষকতার পেশায়। ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন কেশিয়াড়ি ব্লকের একটি বিদ্যালয়ে। সেখানে দীর্ঘ বেশ কয়েক বছর শিক্ষকতা করেন। শতাধিক পড়ুয়াকে করে তুলেছেন মানুষের মত মানুষ। তবে শিক্ষকতার জীবন থেকে অবসর নিয়ে বেশ কয়েক বছর সাহিত্য এবং সঙ্গীতে ডুবে আছেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জন্মেঞ্জয় সাহু (৭০)।

এই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের যেভাবে অবসর কাটে তা জানলে আপনারও শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসবে। এই বয়সে এসেও তাঁর বিরাম নেই কলমের। প্রতিদিন নিয়মিত লেখেন বিভিন্ন ধরনের লেখা, কবিতা, গল্পও। করেন গান-বাজনার চর্চা। ছেলে কর্মসূত্রে বাইরে থাকলেও পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদার নিজস্ব বাড়িতে তিনি এবং তাঁর স্ত্রী। বয়সের ভার দমাতে পারেনি সাহিত্যচর্চা।

আর‌ও পড়ুন: উল বা ফুলের বদলে এই নতুন রাখিতে মজেছে সবাই

জন্মেঞ্জয় সাহু বিদ্যালয় জীবন থেকেই শুরু করেছিলেন লেখালেখি। প্রথম জীবনে লেখালিখি শুরু বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে। ধীরে ধীরে তাঁর লেখার পরিধি আড়ে বহরে বেড়েছে। ছাত্র জীবন থেকে শিক্ষক জীবন, এমনকি অবসর জীবনে এসেও তিনি লেখালেখির চর্চা থামাননি। তিনি নিয়মিত বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকায় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চিঠি লিখেছেন। বর্তমানে তিনি আকাশবাণীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়মিত শ্রোতা এবং লেখক। তিনি লিখেছেন অনুগল্প, এমনকি কবিতাও। তাঁর বিভিন্ন লেখা দিয়ে সংকলিত হয়েছে পাঁচটি বই।

শিক্ষকতা পেশার পাশাপাশি বেহালা ও তবলা বাজাতে পারতেন। বয়সের ভারে এখন আর সঙ্গীতের তেমন চর্চা না করা হলেও সারাদিনে যেটুকু সময় পান বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি তিনি লেখালেখি করেন। বাড়িতেই বানিয়েছেন ছোট্ট লাইব্রেরি। রয়েছে বিভিন্ন দুষ্প্রাপ্য বই। বই এবং খাতা, কলম যেন সারা দিনের সঙ্গী। সময় পেলে বসে পড়েন বেহালা কিংবা তবলায় রেওয়াজ করতে। আগামীতে বেশ কয়েকটি বই প্রকাশের অপেক্ষায়। এছাড়াও তিনি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় সহ সাহিত্য, সঙ্গীত এবং অভিনয় জগতের একাধিক বিশিষ্টজনের সাক্ষাৎকার নিয়ে লেখালেখি করেছেন।

শুধু সাহিত্যচর্চা নয়, বেশ সৌখিন জন্মেঞ্জয়বাবু। বাড়িতেই বিভিন্ন ফুলের গাছ লাগিয়েছেন। এছাড়াও একাধিক সংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে তিনি যুক্ত। তবে অবসরপ্রাপ্ত এই শিক্ষক সারাদিন সাহিত্যের মধ্যে বুঁদ হয়ে থাকেন, সারাদিন চলে লেখালেখি। শিক্ষকের এই মহতী উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সকলে।

রঞ্জন চন্দ