খোটাচি ওয়াড়ি গ্রামের নাম শুনেছেন? মুম্বইয়ের মধ্যে এক টুকরো পর্তুগাল যেন

খোটাচিওয়াড়ি গ্রামের নাম শুনেছেন? মুম্বইয়ের মধ্যে এক টুকরো পর্তুগাল যেন, বেড়াতে আসেন বিদেশিরাও

Report: Vishwajeet Singh

মুম্বই: গ্রাম বললেই চোখের সামনে কিছু ছবি ভেসে ওঠে। মাটির বাড়ি, কাঁচা রাস্তা, ধানের গোলা, বিঘের পর বিঘে জমি, আর সরল সাদাসিধে মানুষজন। কিন্তু মুম্বইয়ের খোটাচিওয়াড়ি একেবারে আলাদা। খাটায় কলম এটাও গ্রাম। কিন্তু সর্বত্র শহুরে ছোঁয়া। প্রত্যেক বাড়িতেই পর্তুগীজ স্থাপত্যের নিদর্শন। এক নজরে দেখলে মনে হবে বিদেশ বুঝি।

মালাবার পাহাড়ের পদদেশে অবস্থিত খোটাচিওয়াড়ি গ্রাম। এক সময় এখানে জেলেদের বাস ছিল। কলি ও পাথরে প্রভু সম্প্রদায়ের মানুষজনই বেশি থাকতেন। আর থাকতেন মুম্বইয়ের মূলনিবাসীরা। তবে সংখ্যায় অনেক কম। গ্রামের অধিকাংশ জমির মালিক ছিলেন এক ব্রাক্ষ্মণ। তাঁর নাম ছিল হরি খোট। পরবর্তীকালে নিজের জমি ভাগ ভাগ করে পূর্ব ভারতের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের কাছে বিক্রি করে দেন তিনি। তাঁর নাম থেকেই গ্রামের নাম হয়েছে ‘খোটাচিওয়াড়ি’।

আরও পড়ুন- ছেলের বিয়ে দিতে গিয়ে এ কোন সত্যের মুখোমুখি হবু বরের মা… বিয়ের মণ্ডপেই ওলটপালট হয়ে গেল সমস্ত সম্পর্কের সমীকরণ

গ্রামের প্রত্যেক বাড়িই পর্তুগিজ স্থাপত্যশৈলীতে বানানো। আর সবগুলিই রঙিন। কোনও বাড়ির রঙ লাল, তো কোনওটার রঙ হলুদ। প্রত্যেকটা বাড়িই আলাদা আলাদা ভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। যা ১৯ শতকের স্থাপত্যশৈলীর এক অনন্য উদাহরণ। বেশিরভাগ বাড়ির কাঠের তৈরি। সামনে বড় খোলা বারান্দা। পিছন দিকে উঠোন। দোতলায় ওঠার সিঁড়ি রয়েছে বাড়ির বাইরের দিকে। নিও ক্লাসিক্যাল এবং আর্ট ডেকো রীতির অভূতপূর্ব মিশ্রণ যেন।

আরও পড়ুন– পুরসভার ডেপুটি কমিশনার কাকাকে বিয়ে ভাইঝির, তরুণী বললেন, ‘প্রেম করেছি, কোনও অপরাধ করিনি’

খোটাচি ওয়াড়িতে আগে এরকম ৬৫টি বাড়ি ছিল। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ২৮টিতে। প্রতিদিনই আকাশচুম্বী অট্টালিকা তৈরি হচ্ছে। ভাঙা পড়ছে পুরনো বাড়ি। গ্রামে ঢুকলে মনে হবে, পর্তুগালে চলে এসেছি বুঝি। অনেক বিদেশিই প্রতিদিন এখানে বেড়াতে আসেন। বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে সেলফি তোলেন। যেন এই গ্রাম অষ্টম আশ্চর্য। এখানকার অধিকাংশ বাসিন্দাই মুম্বইয়ের আদি বাসিন্দাদের বংশধর। ১৮ শতকের শেষ এবং ১৯ শতকের শুরুর দিকে খোটাচিওয়াড়ি ছিল সাংস্কৃতিক নবজাগরণ এবং ব্রিটিশ বিরোধী জাতীয়তাবাদের কেন্দ্র। গ্রামে এখন নতুন বাসিন্দাদের ভিড়। তৈরি হচ্ছে আধুনিক বাড়ি। আদি বাসিন্দাদের বেশিরভাগই বান্দ্রা, মাজগাঁও, মাহিম, কাইওয়াল এবং গিরগাঁও এলাকায় চলে গিয়েছেন। তবে এখনও নিজস্ব সংস্কৃতি ধরে রেখেছে খোটাচিওয়াড়ি।