উত্তর ২৪ পরগনা: এখনও সোদপুরের মেডিক্যাল চেম্বারে টাঙানো চিকিৎসকদের নামের তালিকায় জ্বলজ্বল করছে তাঁর নাম। অল্প কিছু দিনের মধ্যেই চিকিৎসক হিসেবে সুনাম অর্জন করে নিয়েছিলেন আরজি কর-কাণ্ডে নিহত চিকিৎসক তরুণী।
গরিব কোনও পেশেন্ট আসলে তাঁদের ফি মুকুব করে দিতেন। এখনও যেন ডাক্তার দিদির সেই সব কথা ভুলতে পারছেন না এলাকার লোকেরা। মুখে থাকত হাসি, রোগীদের কথা শুনতেন মন দিয়ে। হাসিমুখেই দিতেন পরামর্শ। তাই ডাক্তার দিদিমণির কাছেই চিকিৎসার জন্য আসতে চাইতেন অনেকে। ডাক্তার দিদিমণির এভাবে মৃত্যু যেন মেনে নিতে পারছেন না চেম্বারে কর্মরত মালিক, স্বাস্থ্যকর্মীরা-সহ চিকিৎসা পরিষেবা নিতে আসা রোগীরা।
আরও পড়ুন: মিথ্যে বলছে না তো? সঞ্জয়ের পর এবার সন্দীপ, সঙ্গে আরও ৪ চিকিৎসকের পলিগ্রাফ পরীক্ষার প্রস্তুতি CBI-এর
ঘটনার পর বেশ কয়েকদিন কেটে গেলেও, সোদপুরের ওই মেডিক্যাল চেম্বারে জ্বলজ্বল করছে তাঁর নাম। প্রথমে জেনারেল ফিজিশিয়ান হিসেবে রোগী দেখা শুরু করেন। কয়েক মাস হল চেস্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ হিসেবে দেখছিলেন রোগীদের। মঙ্গল-বুধ-শুক্র-শনি এই তরুণী চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা পরিষেবা নিতে রীতিমতো ভিড় জমাতেন বহু রোগী। শেষ যেদিন আসার কথা ছিল, সেদিন সকালেও তিনজন রোগী নাম লিখিয়ে গিয়েছিলেন।
কিন্তু, তাঁদের আর দেখানো হল না শারীরিক ভাবে ভরসার ওই তরুণী চিকিৎসকে। চেম্বারে কর্মরত এক কর্মী জানান, এত হাসিখুশি, পজিটিভ ডাক্তার দিদিমণির যে এরকম হতে পারে তা যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না। পেট ও বুকের সমস্যা নিয়ে নিয়মিত ওই তরুণীর কাছে চিকিৎসা করাতেন সুদেব ঘোষ। তরুণী চিকিৎসকের ওষুধে ধীরে ধীরে সুস্থও হয়ে উঠছিলেন। ওষুধের দোকানের মালিক বলেন, “ম্যাডাম মারা যাওয়ার খবরে সুদেববাবু আমাকে ফোন করে কান্নাকাটি জুড়ে দেন। রোগীদের কাছে তাঁর ব্যবহারেই প্রিয় হয়ে উঠছিলেন উনি।”
সুদেববাবু জানান, কোনও কারণে চেম্বারে আসতে না পারলে, প্রয়োজনে ফোনেও ডাক্তার দিদি অ্যাডভাইস দিতেন। আগে বাবার স্কুটিতে চেপে চেম্বার করতে আসলেও, মাস কয়েক আগে গাড়ি কেনায়, গাড়ি নিয়ে আসতেন চেম্বারে। ফি ছিল মাত্র ২৫০ টাকা। তরুণী চিকিৎসকের এমন ভয়াবহ মৃত্যুতে যেন মানসিক ভাবে অনেকটাই ভেঙে পড়েছেন তাঁর কাছে চিকিৎসা করাতে আসা রোগী-সহ রোগীর পরিজনেরা। প্রিয় চিকিৎসকের রোগীরাও তাই এখন চাইছেন জাস্টিস।
Rudra Narayan Roy