উত্তর ২৪ পরগনা: সিবিআই গোটা ঘটনার তদন্ত করছে, আদালত যেটা ভাল বুঝবে সেটাই করবে। ফলে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে কিছু বলার নেই তাঁদের। তবে আশা ছাড়েননি বলেও জানালেন আরজি কর তদন্তে নির্যাতিতার মা। সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর কাণ্ডের শুনানির পরিপ্রেক্ষিতে নির্যাতিতার পরিবারের তরফ থেকে এমনটাই জানানো হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টে সোমবারের সওয়াল জবাবে উঠে আসা নানা বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে, নির্যাতিতার মা বলেন ময়নাতদন্তের চালান সহ যে বিষয়গুলি তোলা হয়েছে সে বিষয়ে সিবিআই তদন্ত করে দেখবে, এর থেকে বেশী আর কিছুই বলার নেই তাঁদের। ডাক্তারদের আন্দোলন তুলে নেওয়া প্রসঙ্গে নির্যাতিতার মা জানান এই সিদ্ধান্ত একান্তই ডাক্তাররা নেবেন। তাঁরা যদি নিজেদের নিরাপদ না মনে করেন তবে কী ভাবে কাজে যোগ দেবেন! পাশাপাশি এই দিন নির্যাতিতার পরিবারের তরফ থেকে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনকে গলা টিপে হত্যা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ জানান।
মুখ্যমন্ত্রী উৎসবে ফেরার যে আহ্বান জানিয়েছেন সে প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে নির্যাতিতার মা জানান, দেশের মানুষ আমার মেয়েকে এখন তাঁদের পরিবারের মেয়ে ভাবছেন। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে যদি তাঁরা উৎসবে ফিরতে পারেন তবে আমার কিছুই বলার নেই। আমার বাড়িতেও মেয়ে দুর্গাপুজো করত ফলে আমার বাড়িতে আর কোনওদিন আলো জ্বলবে না। আমার ঘরের প্রদীপ নিবে গিয়েছে। আমি কি করে মানুষকে বলব উৎসবে ফিরতে!
এক মাস অতিক্রান্ত, যদি মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারে এমন ঘটনা ঘটত, তবে কি তিনি পারতেন প্রশ্ন তোলেন নির্যাতিতার মা! রাজ্যের মানুষকে উৎসবে ফেরার যে আহ্বান মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন, তাতে নিয়ে অমানবিক মনে হচ্ছে, কারণ আমি তো মেয়ের মা। আমি তো সন্তান হারিয়েছি, তাই আমার অমানবিক মনে হচ্ছে। আমার মেয়েকে যেভাবে গলা টিপে হত্যা করে প্রমাণ লোপাট করা হয়েছে, সেভাবেই আন্দোলনের গলা টিপে মারতে চাওয়া হয়েছে বলেও এদিন অভিযোগের সুর শোনা গেল নির্যাতিতার মায়ের গলায়।
কারা এই ঘটনা ঘটাচ্ছে, কাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল? প্রশ্ন শুনেই নির্যাতিতার মার উত্তর, “পুলিশ প্রশাসন হাসপাতাল প্রশাসন-সহ সকলেই এর পিছনে কাজ করছে”। তবে একইসঙ্গে তিনি বলেন, আন্দোলনকে দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও, বাবা-মা হিসেবে তাঁরাই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন শেষ পর্যন্ত।
ডাক্তারদের আন্দোলনে স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে রাজ্য সরকার। তা নিয়ে নির্যাতিতার মা বলেন ‘২৩ কেন, এক মাসে অনেক ক্রিটিকাল রোগী মারা যায়। কিন্তু তার সঙ্গে আন্দোলনের কি সম্পর্ক?’
Rudra Narayan Roy