জলপাইগুড়ি: পুজোর মুখে চা শ্রমিকদের আনন্দে অনিশ্চয়তা! বোনাস অসন্তোষে উৎসবের মরশুমেও দুশ্চিন্তা ক্ষুদ্র চা বাগানের শ্রমিকদের। পুজোর মরশুমে একরাশ অন্ধকার নেমে এসেছে চা বলয়ে। দুর্গাপুজোর আর মাত্র কয়েক দিন বাকি।
যে সব শ্রমিকের দিন রাত ঝড়-জল উপেক্ষা করে অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে ফুটে ওঠা তিন কুড়ি চা পাতা বিশ্বের দরবারে খ্যাতি অর্জন করেছে সেই শ্রমিকদেরই পুজোর আগে মনে বিষাদ। পরিবারের কারও জন্য একটি নতুন জামা কেনা সম্ভব হবে কি না, এখন তাতেই পড়েছে প্রশ্ন চিহ্ন! কিন্তু কেন এই বোনাস অসন্তোষ?
আরও পড়ুন- ‘সঞ্চয় করতে গিয়ে বেশি ঝুঁকি নিয়ে ফেলবেন না…’ সতর্ক করলেন অর্থমন্ত্রী সীতারমণ
জলপাইগুড়ি জেলা-সহ উত্তরবঙ্গে এই মুহূর্তে প্রায় পঞ্চাশ হাজার ক্ষুদ্র চা বাগান রয়েছে। যে চা বাগানগুলোর পাতা দিয়েই প্রায় ৬৫ শতাংশ চা উৎপাদন হয় বলে, দাবি চা বাগানের মালিক পক্ষের ক্ষুদ্র চা চাষি সংগঠনের। কিন্তু, বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে আবহাওয়ার আমূল পরিবর্তনে অত্যধিক গরম এবং নাগাড়ে বৃষ্টি এই দু’ইয়ের কারণে বিগত কয়েক বছরের ন্যায় এবারও চা পাতার উৎপাদনে পড়েছে ব্যাপক প্রভাব।
উত্তরের প্রায় প্রতিটি ক্ষুদ্র চা বাগানেই এই ছবি, এমনটাই জানাচ্ছেন ক্ষুদ্র চা চাষি সংগঠন( মালিক পক্ষের)। আর সেই কারণে উত্তরবঙ্গের পঞ্চাশ হাজার ক্ষুদ্র চা বাগানের সঙ্গে যুক্ত স্থায়ী অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় চল্লিশ হাজার শ্রমিককে পুজো বোনাস দিতে অক্ষমতার কথা সাফ জানিয়ে দিলেন সংগঠণের সভাপতি (মালিক পক্ষের) বিজয় গোপাল চক্রবর্তী।
এই প্রসঙ্গে বিজয় পরিষ্কার জানিয়ে দেন, বোনাস নয়, অনুদান দেওয়ার চেষ্টা করা হতে পারে। তবুও, তা অবশ্যই আলোচনা সাপেক্ষ। পরিবেশের খামখেয়ালিপনা ব্যবসায় ভাটা পড়ার অন্যতম মূল কারণ বলেই জানালেন তিনি। এক সময় অনাবৃষ্টি কিংবা অনিয়মিত বৃষ্টি, তার ওপর উচ্চ তাপমাত্রা…যাবতীয় নানা কারণেই যেমন কমেছে চা পাতা উৎপাদনের হার সেই সঙ্গে বেড়েছে উৎপাদন খরচ। অথচ সেই অনুযায়ী বাজারে নেই কাঁচা চা পাতার দাম।
এমতাবস্থায় বোনাস দেওয়ার কথা ভাবাই দায় চা বাগানের মালিক কতৃপক্ষের ক্ষুদ্র চা চাষীদের। তবে উৎসবের দিন গুলোতে এই শ্রমিকদের মুখে স্বল্প হাসি ফোটাতে আলোচনার মাধ্যমে অনুদানের বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। এবার অনুদান হোক বা বোনাস উমার আগমনে চা শ্রমিকদের মুখে হাসি ফোটে কি না সেদিকেই তাকিয়ে গোটা চা বলয়।
সুরজিৎ দে