বাঁকুড়া: সদিচ্ছা থাকলে উপায় হয়। আর্থিক পরিস্থিতির অজুহাত দিয়ে নয়, বুদ্ধি খাটিয়ে নিজের প্যাশনকে তাড়া করতে ভালোবাসেন বাঁকুড়ার মিউজিসিয়ান তরুণ চক্রবর্তী। কিবোর্ড বাজিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন বাঁকুড়া শহর সংলগ্ন গ্রামের বাসিন্দা তরুণ চক্রবর্তী।
তবে বাদ্যযন্ত্র চর্চার শুরুর দিন থেকেই তার ইচ্ছে ছিল মিউজিক কম্পোজ করার। আবার একটি স্টুডিও তৈরি করতে খরচ বিরাট। তরুণ বাবু পিছু না হটে লেগে পড়েন একদম কম খরচে স্টুডিও তৈরি করতে। বিশেষ কিছুই নেই, একটি স্মার্টফোন, পুরোনো হেডফোন এবং একটা প্লাস্টিকের কৌটো, সেলোটেপ ও তার দিয়ে বানিয়ে ফেলেন একটি সেটআপ যার খরচ সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা। ইতিমধ্যেই এই সেটআপ দিয়েই কাজ করছেন তিনি। করছেন কম্পোজ।
আরও পড়ুন: কালীঘাটের বাড়িতেই কেন বৈঠক? এই মিটিংয়েই সমাধান? নিউজ ১৮ বাংলা-কে জানালেন মমতা
হিন্দিতে “জুগাড়” বলে একটা চলতি কথা আছে। যার অর্থ হল নিজের আশেপাশে যেসব জিনিস রয়েছে সেগুলি ব্যবহার করে বিনা খরচে বড় সমস্যা সমাধান করা। তরুণ চক্রবর্তীও তাই করেছেন। জেলার বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী এবং সংগীত পৃষ্ঠপোষক শিক্ষক মহাদেব মুখোপাধ্যায় আর জি কর কান্ডের প্রতিবাদ একটি গান লিখেছেন, এবং সেই গানটি কম্পোজ করেছেন তরুণ চক্রবর্তী।
প্রতিবাদী এই গান ইতিমধ্যেই স্পর্শ করেছে মানুষের হৃদয়। সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই গানটি শুনে ভেবেছেন যে এটি কম্পোজ করা হয়েছে কোন দামি স্টুডিওতে। বিস্ময় প্রকাশ করেছেন শিল্পী মহাদেব মুখার্জিও। তিনি জানান, “আমার এই কাজটা একদম মৌলিক পদ্ধতিতে ফুটিয়ে তুলেছেন তরুণ চক্রবর্তী। তার কাজ করার ধরন সম্পূর্ণ অন্য রকমের। শুধুমাত্র একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং কয়েকটি যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে কম্পোজ করেছেন তিনি।”
প্লাস্টিকের কৌটোর মধ্যে ইন লেট তারকে ব্যবহার করে তাতে ইনপুট হেডফোন লাগিয়ে তাক লাগিয়েছেন তরুণ চক্রবর্তী। হাতের মুঠোফোনই কাজ করছে ‘কম্পিউটারের’। সেই ফোনে বিভিন্ন ফ্রী অ্যাপ ব্যবহার করে কিবোর্ডে লাগিয়ে মিউজিক কম্পোজ করছেন তিনি।
পরবর্তীকালে নিজের পেশা কিংবা প্যাশন থেকে উপার্জন বাড়লে আরও দামি সেটাপে ইনভেস্ট করবেন বলে জানিয়েছেন বাঁকুড়ার তরুণ চক্রবর্তী। আপাতত উঠতি যুব সমাজের কাছে নিজের সদিচ্ছাকে সামনে রেখে একটি ছোট্ট উদাহরণ রাখলেন এই শিল্পী।
নীলাঞ্জন ব্যানার্জী