পশ্চিম মেদিনীপুর: মূল রাস্তা। যেখানে দু’পাশে রয়েছে সারি দিয়ে দোকান। সেখানে বাইক, গাড়ি কিংবা সাইকেলের দেখা নেই। রাস্তার উপর কোমর সমান জলে চলছে নৌকায় পারাপার। সেই দৃশ্য দেখে হয়তো হতবাক হতে পারেন। তবে চমকে যাওয়ার কিছুই নেই। প্রতি বছর বর্ষা এলেই এমন চিত্র দেখা যায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটালে। চলতি মরশুমে একাধিকবার বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেও জলস্তর ছিল বিপদসীমার নীচে। তবে দু’দিনের টানা বৃষ্টিতে ক্রমশই বেড়েছে নদীর জল। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে শিলাবতী, ঝুমি নদী। স্বাভাবিকভাবে একাধিক বসতি এলাকা প্লাবিত হয়েছে ইতিমধ্যে। জনবসতির মধ্যে দিয়ে চলছে জলস্রোত। খাওয়াদাওয়া তো দূর, নিজেদের জীবন বাঁচাতে জল পেরিয়ে এদিক থেকে ওদিক যাতায়াত করছেন সাধারণ মানুষ।
শুক্রবার বিকেল থেকে নিম্নচাপের কারণে লাগাতার বৃষ্টি হয়েছে জেলা জুড়ে। বিভিন্ন জায়গার পাশাপাশি ক্রমশই জটিল পরিস্থিতি হয়ে উঠেছে ঘাটালের বন্যা। প্রতি বছর বর্ষাকাল এলেই বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় ঘাটালে। তবে এবার বেশ কয়েকবার বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেও, জলস্তর বিপদসীমার নিচেই ছিল। তবে ঘণ্টায় ঘণ্টায় লাফিয়ে বাড়ছে জলস্তর। একাধিক জলধার থেকে জল ছাড়ার কারণে ইতিমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে ঘাটাল, চন্দ্রকোণা, দাসপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। এছাড়াও প্রবল বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়েছে সবং, পিংলাও।
হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস মত, মঙ্গলবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ার আশা থাকলেও উপরের জেলাগুলির জলাধার থেকে জল ছাড়ার কারণে ক্রমশ প্লাবিত হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে ঘাটালের মানুষ। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন যোগাযোগের রাস্তায় উপর কোমর সমান জল। যাতায়াতের মাধ্যম নৌকো। শুধু তাই নয়, ঘাটাল ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় চাষের জমি প্লাবিত হয়ে চাষে বিপুল ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা।
নজরদারি রাখা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। বিভিন্ন জায়গায় মোতায়েন রয়েছে প্রশাসনের একাধিক টিম। প্রশাসনের তরফে যদিও বিভিন্ন জায়গায় সতর্ক করা হচ্ছে। জেলা জুড়ে চালু করা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। বিভিন্ন ব্লক এলাকায় চালু হয়েছে জরুরি পরিষেবাও। স্বাভাবিকভাবে পুজোর আগে বন্যা পরিস্থিতিতে নাজেহাল ঘাটালের মানুষ। আর কতদিন এই বন্যা যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে ঘাটালের মানুষকে, সে প্রশ্ন এখন প্রত্যেকের।
রঞ্জন চন্দ