ডোকরা গ্রাম 

Purba Bardhaman News: আধুনিক অক্সিডাইজ মেটালের গয়নায় ভরা বাজার! পুজোর আগে মনখারাপ ডোকরা শিল্পীদের 

পূর্ব বর্ধমান: কমছে দারিয়াপুরের ডোকরার গয়নার চাহিদা। কিন্তু কি কারণে এমন হচ্ছে ? সময়ের সঙ্গে সত্যিই কি তাহলে ফিকে হচ্ছে  ডোকরার জৌলুস ?বাজারে ক্রমশ চাহিদা বাড়ছে অক্সিডাইস মেটালের তৈরি গয়নার। আর যে কারণে নাকি ক্রমশ কমছে ডোকরার গয়নার চাহিদা। অন্তত তেমনটাই জানাচ্ছেন পূর্ব বর্ধমানের ডোকরা গ্রামের শিল্পীরা। পূর্ব বর্ধমান জেলার আউসগ্রাম এক নম্বর ব্লকের অন্তর্গত একটি গ্রাম হল দারিয়াপুর। যেখানে প্রায় প্রতিটি পরিবারই যুক্ত ডোকরা শিল্পের সঙ্গে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই শিল্প থেকেই নিজেদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন এখানকার বাসিন্দারা।

তাঁদের কাজের জন্য গ্রামে এসেছে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারও। সামনে দুর্গাপুজো। কয়েক বছর আগেও এই পুজোর আগে ডোকরার গয়না তৈরিতে ব্যস্ত থাকতেন শিল্পীরা। কিন্তু লকডাউনের পর থেকেই চাহিদা কমেছে ডোকরার গয়নার। এখন বাজারে সেই জায়গা নিয়েছে অক্সিডাইসের গয়না। ডোকরা শিল্পী,তথা দারিয়াপুর ডোকরা আর্টিজেন কোঅপারেটিভ ইন্ডাস্ট্রিয়াল সোস্যাইটি লিমিটেডের সেক্রেটারি শুভ কর্মকার বলেন, “অক্সিডাইজ মেটালের তৈরি জিনিসের দাম অনেক কম এবং ডোকরার আদলে সেই জিনিস তৈরি হচ্ছে। সে কারণেও আমাদের ডোকরার তৈরি জিনিসের চাহিদা কমতে পারে। ডোকরার গয়না তৈরি করতে সময় লাগে এবং সেটা হাতে তৈরি করা হয়। কিন্তু কম সময়ে মেসিনের সাহায্যে এখন অনেক কম দামের অক্সিডাইজ মেটালের গয়না তৈরি হয়ে যাচ্ছে।”

আসন্ন দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে এই মুহূর্তে রাজ্য জুড়ে চলছে প্রস্তুতি। আগে দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে চরম ব্যস্ততায় দিন কাটতো পূর্ব বর্ধমানের এই গ্রামের শিল্পীদের। অনেক দূরদূরান্ত থেকে আসত গয়নার অর্ডার। সেই চাহিদা অনুযায়ী যোগান দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হত তাদের। কিন্তু বর্তমানে পাল্টে গিয়েছে সেই চেনা ছবিটা। এই বিষয়ে শুভ কর্মকার আরও বলেন, “আগে আমাদের খাবার খাওয়ার সময় থাকতো না। এক-একজন শিল্পীর কাছে প্রচুর কাজ থাকত। কিন্তু লকডাউনের পর থেকে চাহিদা একেবারেই কমে গিয়েছে।”

সাধারণ মানুষের অনেকেই এখন ঝুঁকেছেন অক্সিডাইস মেটালের তৈরি গয়নার প্রতি। যার দাম ডোকরার গয়নার থেকে বেশ কিছুটা কম। ফলে তাঁদের গয়না থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন ক্রেতারা। সামনে দুর্গাপুজো আসলেও তাই কার্যত মন খারাপ এই গ্রামের শিল্পীদের।

বনোয়ারীলাল চৌধুরী