বন্ধ করা হচ্ছে বাংলা - ঝাড়খন্ড সীমান্ত।

Mamata Banerjee on DVC: পুজোর আগেই ভাসল বাংলা, তুমুল ক্ষুব্ধ মমতা! পড়শি রাজ্যের জন্য নিয়ে নিলেন বড় সিদ্ধান্ত

আসানসোল, পশ্চিম বর্ধমান: ভারী বৃষ্টিপাতের পর ডিভিসি জল ছেড়েছে হু-হু করে। তার ফলে দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে বন্যা পরিস্থিতি। রাজ্যের একাধিক জেলা জলমগ্ন। বহু ঘর বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। পুজোর মুখে যা চরম সমস্যায় ফেলে দিয়েছে হাজার হাজার মানুষকে।

এমন অবস্থায় পরিস্থিতি পরিদর্শনে বেরিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিদর্শনে পরে ডিভিসি’র ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। ম্যান মেড বন্যা বলেও আখ্যা দিয়েছেন। এমন অবস্থায় নেওয়া হল বড় পদক্ষেপ।

ডিভিসি’র সঙ্গে রাজ্যের যখন তরজা চলছে, সেই সময় সিল করা হল ঝাড়খণ্ডের বর্ডার। রাজ্য প্রশাসনের নির্দেশে আগামী তিনদিনের জন্য ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে বাংলার সীমান্ত সিল করে দেওয়া হল। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে আসানসোলে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের ডুবুরডি চেকপোস্টে বাংলা ও ঝাড়খণ্ড সীমান্ত সিল করে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনাকে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আরও পড়ুন: ফের নিম্নচাপের চোখরাঙানিতে বৃষ্টির আশঙ্কা বাংলাজুড়ে, পুজোতেও ঝড়-জল! আবহাওয়ার বড় খবর

কারণ বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনের পর ডিভিসি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ডিভিসির সঙ্গে আর সম্পর্ক রাখা যায় কিনা,  সে বিষয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন। আর এমন অবস্থায় প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

উল্লেখ্য, বিগত কয়েকদিন নিম্নচাপের জেরে রাজ্যজুড়ে টানা বৃষ্টিপাত হয়েছে। সে সময় দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে প্রচুর পরিমাণে জল ছাড়া হচ্ছিল। পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়, যখন মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে হু-হু করে জল ছাড়তে শুরু করে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ। ২০০৯ সালের পর আর এতটা জল ছাড়া হয়নি বলে জানা গিয়েছে। যে কারণে দামোদরের রুদ্ররূপে বানভাসী হয়েছে তীরবর্তী জেলাগুলির বিভিন্ন অংশ।

পাশাপাশি, তেনুঘাট জলাধার থেকেও জল ছাড়া ফলে পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ অংশ বিপর্যস্ত। যে পরিস্থিতি রীতিমতো উদ্বেগজনক প্রশাসনের কাছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যদি ডিভিসি কর্তৃপক্ষের দাবি, ঝাড়খণ্ড প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হওয়ায় মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধারে প্রচুর পরিমাণে জল ঢুকতে শুরু করে। জলাধারের ফ্লাড ম্যানেজমেন্ট লেভেলের উপরে জল চলে যাওয়ায় প্রচুর পরিমাণে জল ছাড়তে হয়।

অন্যদিকে, এখানেই প্রশ্ন উঠছে এই জলাধারগুলি বন্যা থেকে রক্ষা করতে তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু এখন সেগুলি অভিশাপ হয়ে উঠছে। ডিভিসি সূত্রে খবর, প্রায় ২ লক্ষ কিউবিক মিটার পলি জমে আছে মাইথন জলাধারে। প্রায় একই অবস্থা পাঞ্চেত জলাধরের। ফলে এই জলাধারগুলির জলধারণ ক্ষমতা কমছে। ঝাড়খণ্ডের ভারী বৃষ্টিপাতে বানভাসী হচ্ছে বাংলা। আর এমন সময় প্রশাসনের নির্দেশে ৩ দিনের জন্য বন্ধ করা হল বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানা।

নয়ন ঘোষ