লেবাননে পেজার বিষ্ফোরণে এবার ভারতীয় যোগ?

Lebanon Blast: লেবাননে পেজার বিষ্ফোরণে প্রবাসী ভারতীয়ের যোগ! বিষ্ফোরক সরবরাহের দায়িত্বে ছিলেন ‘জোস’?

বেইরুট: লেবাননে ভয়ঙ্কর পেজার বিষ্ফোরণের ঘটনায় এবার ভারতীয় যোগ। সূত্রের খবর অনুযায়ী, প্রবাসী এই ভারতীয়ই না কি লেবাননে ভয়ঙ্কর বিষ্ফোরণের জন্য প্রয়োজনীয় বিষ্ফোরকের যোগান দিয়েছিলেন৷ যদিও অভিযুক্তের পরিবারের তরফে পুরো ব্যাপারটাই অস্বীকার করা হয়েছে৷

জানা গিয়েছে, রিনসন জোস নামের ওই ব্যক্তি ভারতীয় বংশোদ্ভুত৷ কেরলে জন্মগ্রহণ করেছিলেন৷ তবে তিনি আপাতত নরওয়ের নাগরীক৷ অসলোতে তাঁর পরিবার রয়েছে৷ প্রসঙ্গত, লেবাননে পেজার বিস্ফোরণের ঘটনায় কমপক্ষে ১২ জন নিহত হয়েছেন, আহতের সংখ্যা কয়েক হাজার৷

আরও পড়ুন : ‘লক্ষ্য ভিত্তিক আক্রমণ’ ইজরায়েলের, মিসাইল হানায় হিজবুল্লার শীর্ষ নেতা-সহ মৃত আট

জোস বুলগেরিয়াতে নর্টা গ্লোবাল নামের এক কোম্পানির মালিক৷ সূত্রের খবর, তিনিই লেবাননে পেজার বিষ্ফোরণের জন্য প্রয়োজনীয় বিস্ফোরকের সরবরাহ করেছিলেন বলে মনে করা হয়। পেজারগুলি হাঙ্গেরির একটি ফার্ম তৈরি করেছিল, যার নাম BAC কনসাল্টিং৷ এরা তাইওয়ানের ফার্ম গোল্ড অ্যাপোলোর ট্রেডমার্কের অধীনে কাজ করে থাকে৷ জোসের কোম্পানি নর্টা গ্লোবাল সেখান থেকেই না কি পেজারগুলি সংগ্রহ করেছিল।

তবে এখন প্রশ্ন হল আদৌ কি জোস লেবাননের বিস্ফোরণের ঘটনায় যুক্ত? পরিবারের লোকজন এই মুহূর্তে ছেলের পাশেই রয়েছেন বলে খবর৷ তাদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, “আমরা প্রতিদিন ফোনে কথা বলি। তবে গত তিনদিন ধরে জোসের সঙ্গে আমাদের কোনও যোগাযোগ নেই। ও ভালো মানুষ, এবং ওর উপর আমাদের সম্পূর্ণ বিশ্বাস রয়েছে৷ লেবাননের বিষ্ফোরণের সঙ্গে ওর কোনও যোগাযোগ আছে বলে বিশ্বাস করি না৷”

আরও পড়ুন : লেবাননে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা! কী এই ‘Pager’ বিষ্ফোরণ, জেনে নিন

জোসের পরিবারের সদস্য থ্যাঙ্কাচেন এটাও জানিয়েছেন যে, অনেক দিন ধরে জোসের স্ত্রী-এর সাথে কোনও যোগাযোগ নেই । কয়েক বছর আগে, জোস উচ্চ শিক্ষার জন্য নরওয়েতে যান। অসলোতে ফিরে আসার আগে তিনি অল্প সময়ের জন্য লন্ডনে কাজ করেছিলেন। নিজের ফার্ম থাকার পাশাপাশি, জোস অসলোতেও কাজ করে৷ লন্ডনে তাঁর একটি যমজ ভাই রয়েছেন। এদিকে ওয়েনাডে জোসের আর এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, তিনি জোসকে দীর্ঘদিন ধরে চেনেন এবং তিনি খুবই ভালো মানুষ।

তাহলে বিস্ফোরণের নেপথ্যে কারা? তাইওয়ান এবং বুলগেরিয়া কর্তৃপক্ষের তরফে হাজার হাজার পেজারের সরবরাহের ব্যাপারটি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে৷ তাদের তরফে বলে দেওয়া হয়েছে, বিষ্ফোরণে ব্যবহৃত পেজার তারা সরবরাহ করেনি৷

পরিস্থিতি এখন যেখানে দাঁড়িয়ে, তাতে পেজার বিষ্ফোরণের সঙ্গে কারা জড়িত আছে সেটাই বোঝা যাচ্ছে না৷ কীভাবে পেজারগুলি আসলো, সেগুলিতে কীভাবে বিষ্ফোরক ভরা হল, পুরোটাই ধোঁয়াশার সৃষ্টি করেছে৷ প্রাথমিকভাবে তাইওয়ান, বুলগেরিয়া, নরওয়ে এবং রোমানিয়ার নাম জড়ালেও, দায় ছেড়ে ফেলতে শুরু করেছে তারা। ইজরায়েলকে দায়ী করা হলেও, তারা এই ঘটনার ব্যাপারে এখনও কিছুই জানায়নি৷ তাহলে হামলাটা করল কারা? উত্তরের অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছুদিন৷

তাইওয়ানের গোল্ড অ্যাপোলোর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, লেবানন বিষ্ফোরণে ব্যবহৃত ডিভাইসগুলি তারা তৈরি করেনি৷ নর্টা গ্লোবাল লিমিটেডের নাম জড়ানোর পর বুলগেরিয়া তদন্তের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল। তবে সেই দেশের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা ডিএএনএস-এর তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, লেবানন হামলায় ব্যবহৃত পেজার বুলগেরিয়ায় আমদানি বা সেই দেশ থেকে রপ্তানি বা দেশে তৈরি হয়নি।