গাজায় ফের ইজরায়েলের আক্রমণ, হামাস প্রধানের মৃত্যুকে ঘিরে প্রবল ধোঁয়াশা।

Gaza Attack: গাজার স্কুলে ভয়ঙ্কর রকেট হামলা, হামাস প্রধানের মৃত্যুকে ঘিরে প্রবল ধোঁয়াশা

গাজা সিটি: ফের গাজায় আক্রমণ ইজরায়েলের। শহরের একটি স্কুলকে লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালানো হয়েছিল। ইজরায়েলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, হামলায় সম্ভবত হামাস প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মৃত্যুর হয়েছে। তবে বিষয়টির তদন্ত করা হচ্ছে। ইজরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, রকেট হামলাটি মূলত হামাসের একটি কমান্ড সেন্টারকে লক্ষ্য করে করা হয়েছে। প্যালেস্তাইনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে হামলায় অন্তত ২২ জন নিহত হয়েছে।

আরও পড়ুন : বিনাটিকিটে উঠে পড়ল দুই ‘যাত্রী’, থেমেই গেল গোটা ট্রেন! জানলে অবাক হবেন!

টাইমস অফ ইজরায়েলে একটি প্রতিবেদন বের হয়েছে৷ সেখানে ইজরায়েলের সামরীক কর্তারা জানিয়েছেন, গাজায় ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী যে অভিযান চালিয়েছে তাতেই সিনওয়ারের মৃত্যুর সম্ভাবনা প্রবল৷ বলা হয়েছে, “সিনওয়ার আর সম্ভবত বেঁচে নেই৷ এমন সম্ভাবনাই প্রবল। প্যালেস্তাইনে ওই নির্দিষ্ট এলাকায় যারা কাজ করছেন তারাও এই ব্যাপারটা মেনে নিয়েছেন৷ তবে সমস্যা একটাই, কোনও প্রমাণ নেই৷”

সাংবাদিক বেন ক্যাসপিটও তাঁর এক্স প্রোফাইলে এমন একটি পোস্ট করেছেন। ক্যাসপিট জানিয়েছেন, হামাসের অন্যতম শীর্ষ নেতার মৃত্যু নিয়ে এখনও কোনও সরকারী তথ্য কেন পেশ করছে না ইজরায়েল, তার পিছনে কারণ রয়েছে৷ অতীতে এমন খবর বারবার সামনে এসেছে যে সিনওয়ার মৃত৷ কিন্তু তারপর দেখা গিয়েছে সে বেঁচে আছে৷ তাই এবার ইজারায়েলের তরফ থেকে সেই পথে হাঁটা হচ্ছে না৷ অন্তত যতক্ষণ না পর্যন্ত কোনও পাকা খবর বা তথ্য মিলছে৷

আরও পড়ুন : গত ৮ বছরে প্রথমবার সাদা ভাল্লুকের দর্শন, গুলি করে মেরে ফেলা হল এই দেশে

ওই সাংবাদিক আরও জানিয়েছেন, অতীতে এমন হামলা একাধিকবার করেছে ইজরায়েল৷ মূল টার্গেট থাকত সিনওয়ার৷ কিন্তু প্রতিবারই হামলার পর জানা যেত, সিনওয়ার ঘটনার সময় কোনও না কোনওভাবে বেঁচে গিয়েছেন বা গা ঢাকা দিয়েছেন৷ তাঁর কথা, “ওকে হত্যা করা খুব কঠিন৷ হয়তো অসম্ভবও৷ বিভিন্ন সূত্রের খবর ইজরায়েলের হামলায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে৷ তবে যতক্ষণ না সঠিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে ততক্ষণ স্বস্তিতে না থাকাই ভালো৷”

ইয়াহিয়া সিনওয়ার ইজরায়েলে ৭ অক্টোবর হামলার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন৷ ইসমাইল হানিয়াহ নিহত হওয়ার পর তিনি অগস্টে হামাসের প্রধান হন। ১৯৬২ সালে জন্মগ্রহণ করা সিনওয়ার, ১৯৮৭ সালে হামাসের প্রথম সদস্যদের মধ্যে একজন ছিলেন। তিনি এর আগে জঙ্গি গোষ্ঠীর নিরাপত্তা শাখার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, এবং সন্দেহভাজন সহযোগীদের বিরুদ্ধে তার নির্মম কৌশল ছিল মারাত্মক।

১৯৮০-তে তথ্য লিকের জন্য হত্যা করেছিলেন সিনওয়ার৷ ইজরায়েল তাঁকে গ্রেফতার করে এবং চারবার মৃত্যুদণ্ড দেয়৷ ২০০৮ সালে, তিনি ইজরায়েলের ডাক্তারদের সাহায্যে মস্তিষ্কের ক্যান্সারকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠেন৷

২০১১-তে হামাসের হাতে বন্দী ইজারায়েলের বন্দী সৈন্যদের বিনিময়ের অংশ হিসাবে সিনওয়ারকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। তিনি একা নন, মুক্তি পেয়েছিলেন হামাসের সশস্ত্র শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফও৷ ৭ অক্টোবর ইজরায়েলের উপর যে হামলা চালিয়েছিল হামাস তাঁর অন্যতম মাস্টারমাইন্ড ছিলেন সিনওয়ার৷ সেই ঘটনায় ইজরায়েলের প্রায় ১২০০ মানুষ নিহত হয়েছিলেন। প্যালেস্তাইনের তরফে জানানো হয়েছে, ওই হামলার পরে তাদের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে৷ সূত্রের খবর, গাজায় এখনও পর্যন্ত সবমিলিয়ে প্রায় ৪০ হাজারেরও বেশি প্যালেস্তাইনের মানুষ প্রাণ দিয়েছেন।