কর্মীদের বার্তা অনুব্রতর

Anubrata Mondal: কোর কমিটি নাকি একক ক্ষমতায় অনুব্রত? বীরভূমের সংগঠন নিয়ে জোর চর্চা রাজনৈতিক মহলে

আবীর ঘোষাল, কলকাতা: বীরভূমে ফিরেই পার্টি অফিসে যাওয়া শুরু করলেন অনুব্রত মণ্ডল। এবার থেকে প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত দলীয় কার্যালয়ে ‘কেষ্ট দা’ বসবেন বলে জানা যাচ্ছে। একই সঙ্গে রাজনৈতিক মহলের আগ্রহ, আগামী দিনে কোন ভূমিকায় দেখা যাবে অনুব্রত মণ্ডলকে ৷ কোর কমিটি অবলুপ্ত করে আগের মতোই একা জেলা সামলাবেন অনুব্রত? নাকি কোর কমিটির মাথায় অনুব্রত মণ্ডলকে বসিয়ে জেলার কাজ দেখাশোনা করা হবে। এই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে।

আরও পড়ুন- অবিরাম বৃষ্টি অব্যাহত, নিম্নচাপের প্রভাবেই রাজ্যে বৃষ্টি, আগামী ক’দিন আবহাওয়া কেমন থাকবে? জেনে নিন

২০২২ সালের ১১ অগাস্ট গ্রেফতার হন অনুব্রত মণ্ডল । তাঁর গ্রেফতারির পর বীরভূম নিয়ে রাজ্য নেতৃত্ব চিন্তায় ছিল। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে বীরভূমে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলার সব নেতাদের নিয়ে মিটিং করেন। সেই মিটিংয়ে ফিরহাদ হাকিমও ছিলেন ৷ সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কোর কমিটি গঠন করা হবে। আশিষ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিকাশ রায়চৌধুরী, চন্দ্রনাথ সিনহা, কাজল শেখ, বিশ্ববিজয় মান্ডি, সুদীপ্ত ঘোষ, অভিজিৎ সিনহা ও দুই সাংসদ ছিলেন সেই কোর কমিটিতে। যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, জেলা তিনি দেখবেন সরাসরি। এবং তাঁকে সহযোগিতা করবেন ফিরহাদ হাকিম।

এই কোর কমিটির কাছে পঞ্চায়েত ভোট সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ হল ২০২৩ সালে। যদিও ফল বেরোতে দেখা গেল জেলা পরিষদ ৫১ আসন, ১৯ পঞ্চায়েত সমিতি, ১৫২ গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে। ‘চড়াম চড়াম’, ‘গুড়-বাতাসা’ এই সব দেখা যায়নি। সে অর্থে বিরোধীরা অভিযোগ করলেন না। সেখানেই আত্মবিশ্বাস এল কোর কমিটির। এর পর লোকসভার আগে কোর কমিটি হল নতুন করে৷ বিশ্বপ্রিয় আর দুই সাংসদ বাদ গেল। নয় জনের জায়গায় ছয় জন হলেন কোর কমিটির সদস্য৷ এদের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হল বিধানসভা ভিত্তিক। অভিজিৎ সিনহা  লাভপুর, সাঁইথিয়া। কাজল শেখ নানুর আর কেতুগ্রাম। আশিষ বন্দোপাধ্যায়  রামপুরহাট আর হাসন। বিকাশ রায়চৌধুরী  সিউড়ি, দুবরাজপুর। চন্দ্রনাথ সিনহা  বোলপুর, মুরারই, নলহাটি। সুদীপ্ত ঘোষ খয়রাশোল ব্লক।

আরও পড়ুন- দুবাইতে এভাবেই থাকতে হয় উত্তর প্রদেশ, বিহারের শ্রমিকদের ! ভাইরাল ভিডিও দেখলে চমকে যাবেন আপনিও

অভিজিৎ সিনহা আর চন্দ্রনাথ সিনহা যৌথভাবে ময়ুরেশ্বর দেখাশোনা করবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। লোকসভার ফলে দুই আসন জিতে নিল তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১৯ সালে অসিত মালের ব্যবধান ছিল ১ লাখ ২২ সেটা বেড়ে হল ৩ লাখ ২৭ হাজার। আর শতাব্দী রায়ের ব্যবধান ছিল ৮৩ হাজার সেটা বেড়ে হল ১ লাখ ৯৭ হাজার। ফল বেরনোর পরে সাংসদদের মিটিং হল। ফল পর্যালোচনায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল জেলার সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের। সূত্রের খবর, সেখানেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, কোর কমিটিকে উদ্দেশ্য করে,  ‘‘বীরভূম নিয়ে তোরা জীবন দিয়ে লড়াই করেছিস। একমাত্র আমার বীরভূম সব বিধানসভা জিতেছে।’’ তাই পারফরম্যান্স যাচাই যদি শেষ কথা হয় তাহলে কোর কমিটির অস্তিত্ব নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠবে না এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে কেষ্ট নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত যে তৃণমূল কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব নেবে তা মেনে নিতে আপত্তি নেই কোর কমিটির অধিকাংশ নেতার। তবে সূত্রের খবর, ঘনিষ্ঠ মহলে তাঁরা জানিয়েছেন, দলের দুর্দিনে বা খারাপ সময়ে তারা যে লড়াই করেছেন, সেই প্রাপ্য সম্মানটুকু যেন তাঁরা পান।