প্রভাস মজুমদার

Hooghly News: ১ হাজার ১৮৬ দিন খাননি সরকারি খাবার! সুবিচারের দাবিতে জেলের অন্দরে প্রতিবাদ প্রভাসের

হুগলি: স্ত্রী ও শাশুড়িকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে টানা তিন বছর ধরে ছিলেন জেলবন্দি। তবে প্রথম থেকেই তিনি বলে আসছিলেন তিনি নির্দোষ তাকে ফাঁসানো হয়েছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে চলা মামলা থেকে নিষ্পত্তি মেলার মতন আর্থিক সঙ্গতি ছিল না অভিযুক্ত প্রভাস মজুমদারের। তাই প্রতিবাদে জেলের মধ্যেই সরকারি খাবার খাওয়া বন্ধ করে দেন প্রভাস। তারই প্রতিবাদ চলাকালীন জেলের লিগাল সার্ভিস কমিটির সদস্যদের সঙ্গে পরিচয় হয় এবং আবারও আদালতে শুরু হয় মামলার লড়াই। অবশেষে গত সোমবার হয় সেই মামলার নিষ্পত্তি। চুঁচুড়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক কৌস্তুভ মুখোপাধ্যায় বাঁশবেড়িয়ার বাসিন্দা প্রভাস মজুমদারকে নির্দোষ রায় দেন ও বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেন।

১হাজার ১৮৬ টা দিন ধরে প্রভাস জেলের মধ্যে দিন কেটেছে একটা একটা করে তার সুবিচারের দাবিতে। সুবিচার না পাওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদ সরূপ এতদিন কোন সরকারি টাকায় ভাত কিংবা রুটি মুখে তোলেননি । এমন কি চুল দাড়ি ও কাটেননি। মঙ্গলবার জেল থেকে মুক্ত হয়ে চুঁচুড়া আদালতের লিগ্যাল সার্ভিস কমিটির সদস্যদের কাছে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করতে আসেন বছর একান্নর প্রভাস।

এই বিষয়ে প্রভাস জানান, সমাজের কিছু অসাধু লোক সরকারি জায়গায় বসে রয়েছে তাদের জন্য প্রভাসের মতন ব্যক্তিদের নির্দোষ প্রমাণ হতেই বহু সময় নষ্ট হয়ে যায়। তার সংশোধন প্রয়োজন। প্রতিটা দিন তার বিরুদ্ধে হওয়া ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি জেলের মধ্যেই। জেলে বিনামূল্যে যে সরকারি পরিষেবা পাওয়া যায় তা তিনি কখনই নেননি। জেলের দেওয়া সরকারি ভাত রুটি কখনো মুখে তোলেননি তিনি। তাকে দেখতে আসা বন্ধুদের দেওয়া সামান্য টাকায় জেলের ক্যান্টিন থেকে এতদিন মুড়ি আর বিস্কুট খেয়ে দিন কাটিয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ IND vs BAN: বাংলাদেশকে হোয়াইট ওয়াশ করা হবে না ভারতের? আশঙ্কায় টিম ইন্ডিয়া! কারণটা কী

অবশেষে, লিগাল সার্ভিস কমিশনের সহযোগিতায় তিনি ন্যায়বিচার পেয়েছেন আদালত তাকে নির্দোষ বলে বেকসুর খালাস করেছে। এই বিষয়ে লিগাল সার্ভিসের আইনজীবী পার্থ শর্মা বলেন, বিনামূল্যে আইনি পরিষেবা দিয়ে অনেক মানুষকেই বিচার পাইয়ে দিয়েছে লিগাল সার্ভিস। কিন্তু প্রভাস সবার থেকে ব্যতিক্রমী। প্রতিবাদ জানাতে চুল-দাড়ি পর্যন্ত কাটেনি ওকে কুর্নিশ ! নির্দোষ লোকদের সুবিচার দেওয়ার দায়িত্ব লিগাল সেলের সেই দিকেই কাজ করেছেন তারা।

রাহী হালদার