মুর্শিদাবাদ: ভ্রমণ হোক অথবা জরুরী কোনও কাজ, প্রতিদিনই উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের বহু বাসিন্দাদের দুই বঙ্গে বিভিন্ন কারণে যাতায়াত করতে হয়। এক বঙ্গ থেকে অন্য বঙ্গে যাতায়াতের ক্ষেত্রে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লাগে যাত্রীদের। তবে এবার এই পথ অনেকটাই কমল। আসলে নশিপুর রেল ব্রিজের উপর দিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু করার ফলে রেলের বড় উপহার পেলেন বঙ্গবাসীরা।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সাত মাস আগে নশিপুর রেল ব্রিজের উদ্বোধন হয়েছে। তবে রেল ব্রিজের উদ্বোধন হলেও যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের সূচনা এতদিন হয়নি। এবার যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের সূচনা হল বুধবার। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের হাত দিয়ে ভার্চুয়ালি এই রেল ব্রিজের উপর দিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের সূচনা হয়।
আরও পড়ুন: পাবলিক টয়লেটে অবশ্যই নিয়ে যান মোবাইল ফোন! সবার আগে করুন এই কাজ, নাহলেই সর্বনাশ
এদিন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব একাধিক ট্রেন চলাচলের সূচনা করেন, আর তার মধ্যেই একটি হলো আজিমগঞ্জ-মুর্শিদাবাদ-কাশীমবাজার লাইন।চলতি বছর মার্চ মাসে নসিপুর রেল ব্রিজের উদ্বোধন হয়েছিল। উদ্বোধন হওয়ার পর থেকে ওই লাইনের উপর দিয়ে মালগাড়ি চালাচ্ছিল রেল।
এবার প্রথম যাত্রীবাহী ট্রেনের সূচনা হল। যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলে সূচনা হওয়ার ফলে এবার এই রুট দিয়ে অনেক সহজ হবে দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ। কেননা নসিপুর রেল ব্রিজ দিয়ে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে ট্রেন চলাচল শুরু করলে দুই বঙ্গের রেলপথ কমে যাবে অন্ততপক্ষে ২১ কিলোমিটার।
রেলপথে কলকাতা হোক অথবা হাওড়া থেকে উত্তরবঙ্গের নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন যেতে পাড়ি দিতে হয় ৫৬৭ থেকে ৫৭৪ কিলোমিটার। এক্ষেত্রে নসিপুর রেল ব্রিজ হয়ে যে রেলপথের সূচনা হয়েছে সেই রেলপথ দিয়ে শিয়ালদা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি যেতে পাড়ি দিতে হবে ৫৫৩ কিলোমিটার।
স্বাভাবিকভাবেই নসিপুর রেল ব্রিজের জন্য রেলপথে যাত্রাপথ কমল ১৪ কিলোমিটার থেকে ২১ কিলোমিটার। এত পথ কমে যাওয়ার ফলে এবার আরও তাড়াতাড়ি দুই বঙ্গের যাত্রীরা নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন।
মুর্শিদাবাদের লালবাগ শহরের কাছে রয়েছে নশিপুর রেল ব্রিজ। ২০০৪ সালে এই রেল ব্রিজের শিলান্যাস হয়েছিল।
তবে পরবর্তীতে জমিজটের কারণে বিভিন্ন সময় থমকে গিয়েছে কাজ। শেষমেষ সমস্ত জট কাটিয়ে কাজ শেষ করার পাশাপাশি গত ২ মার্চ এই রেল ব্রিজের উদ্বোধন হয়। ২ মার্চ রেল ব্রিজটির উদ্বোধনের পর এবার এই রেল ব্রিজ দিয়ে শুরু হল যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল। এই রেল ব্রিজটি লালগোলা শাখাকে আজিমগঞ্জ শাখার সঙ্গে যুক্ত করেছে।
রেল দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিকেল ৪ টে ৫ মিনিটে আজিমগঞ্জ স্টেশন থেকে ছেড়ে সন্ধ্যা ৬ টা ২৫ মিনিটে কৃষ্ণনগর পৌঁছাবে ট্রেন। কৃষ্ণনগর থেকে সাড়ে সাতটায় ট্রেন ছেড়ে আজিমগঞ্জ জংশন পৌঁছাবে রাত ৯ টা ৫৫ মিনিটে। নশিপুর রেল সেতু হয়ে যাবে এই যাত্রীবাহী ট্রেন।আজিমগঞ্জ এবং কাশিমবাজারের মধ্যে চলবে ৩ জোড়া ট্রেন। আজিমগঞ্জ থেকে ট্রেন ছাড়বে সকাল ৭ টা ২০, সন্ধ্যা ৮ টা ২৫, রাত ৯ টা দশ মিনিটে।
আরও পড়ুন: ১০ দিন পরেই…বুধের গোচরে সোনায় মুড়বে ৪ রাশির কপাল! উপচে পড়বে টাকা, সাফল্য হাতের মুঠোয়
রেল দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কাশিমবাজার স্টেশন থেকে আজিমগঞ্জ গামী ট্রেন ছাড়বে সকাল ৮ টা, রাত ৯ টা ২০, ১০ টা ৫ মিনিটে।নশিপুর রেল সেতুর হয়ে আজিমগঞ্জ জংশন থেকে কাশিমবাজার পৌঁছাতে সময় লাগবে ২০ মিনিট করে। ৪ অক্টোবর থেকে চলবে এই চার জোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন।
কৌশিক অধিকারী