বেইরুট: ইতিহাসের ফিরে আসার এক নিজস্ব ধারা আছে। হিরোশিমা, নাগাসাকি বোমার আঘাতে যতটা না বিপর্যস্ত হয়েছিল, বছরের পর বছর ধরে সেখানকার মানুষ ভুগেছিল বাতাসে ছড়িয়ে পড়া বিষে। বেইরুটেরও এখন সেই দশা। হিজবুল্লাহদের খোঁজে ইজরায়েল বোমা ফেলেই চলেছে লেবাননের রাজধানী বেইরুটে। সকাল নেই, সন্ধ্যা নেই, ড্রোন আর ফাইটার প্লেন থেকে অঝোরে নেমে আসছে বোমা। পরিণামে বারুদের ধোঁয়ায় ঢেকেছে শহর।
আরও পড়ুন– চতুর্থীতেও বেশ কয়েক জেলায় বৃষ্টির পূর্বাভাস, পুজোর দিনগুলিতে আবহাওয়া কেমন থাকবে?
ক্ষতি কতটা হয়েছে, তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল এক ছবি থেকে স্পষ্ট। আগে বেইরুটের প্রান্তরেখা দৃশ্যমান ছিল স্পষ্টত। এখন চারপাশে শুধুই বাদামি ধোঁয়ার স্তর। কিছুই দেখা যায় না। যেমন চোখ চলে না, তেমনই আক্রান্তের সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়াও দুষ্কর। ১৫ সেপ্টেম্বরের পর থেকে বেইরুটে এক ধাক্কায় বেড়েছে শ্বাসকষ্টে আক্রান্তের সংখ্যা। বলা হচ্ছে যে আবালবৃদ্ধবনিতা সকলেই ভুগছেন, মৃত্যুর হারও বাড়ছে। হাসপাতালে জায়গা পাচ্ছেন না তাঁরা, সেই সব বেড যুদ্ধে আক্রান্ত সৈনিকে ভর্তি। ফলে, সাধারণ নাগরিক কী পরিমাণে আক্রান্ত, তার পরিসংখ্যান মিলবে না।
চলতি বছরের মার্চে দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদন অবশ্য ছবিটা বুঝতে কিছুটা হলেও কাজে আসবে। সেখানে দাবি, ডিজেল জেনারেটরের ধোঁয়ায় ক্যানসারের সম্ভাবনা বেইরুটে বেড়েছে ৩০ শতাংশ। আকাশ বাদামি, বাড়িগুলো কালো। ৮০০টিরও বেশি জেনারেটর চললে যা হয়, তা-ই হয়েছে। রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলে এদের ধোঁয়ায় চোখে জ্বালা ধরে। আবার আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অফ বেইরুটের গবেষকরা বলছেন এই সব জেনারেটরের কারণে বেইরুটে ক্যানসারের ঘটনা দ্বিগুণ বেড়েছে। মার্চে এখানে পিএম ২.৫-এর পরিমাণ ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৬০ মাইক্রোগ্রাম, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারিত মানদণ্ডের চারগুণ বেশি।
sep 18 / oct 5
we could see beirut now we cant see anything. we are breathing polluted air & chemicals. pic.twitter.com/zIQS8IU7ZK— talia🇱🇧 (@bffwithharry) October 5, 2024
পিএম ২.৫ আদতে ২.৫ মাইক্রোন বা তার চেয়েও ছোট কণা যা সহজেই শরীরে প্রবেশ করে বিষ ছড়ায়। অন্য দিকে, লেবাননের একিউআই সম্পর্কেও সঠিক তথ্যের অভাব রয়েছে। iqair.com-এর রিপোর্ট ধরলে তা ৬১ ইউএসএ। ফলে, ক্ষেপণাস্ত্র থেকে প্রাণরক্ষা হলেও বিষের গ্রাসে মৃত্যুর মুখে এসে দাঁড়িয়েছে বেইরুট।