মুম্বই: বাবা সিদ্দিকিকে গুলি করে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত ২ জন উত্তর প্রদেশের বাহরাইচ জেলার বাসিন্দা। ধরমরাজ কাশ্যপ এবং শিবকুমার গৌতম। ধৃত দুই অভিযুক্তের পরিবারের সদস্যরা বাড়ির ছেলের কীর্তিতে অবাক। এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না তাঁদের। তাঁরা বলছেন, “আমরা এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না। কিন্তু সত্যিই যদি তাঁরা দোষী হয়, তাহলে ওদের সঙ্গে অপরাধীদের মতোই আচরণ করুন।’’
শনিবার ছেলে জিশানের অফিসের সামনে দশেরার উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন এনসিপি নেতা বাবা সিদ্দিকি। সেই সময় তাঁর উপর হামলা হয়। জানা গিয়েছে, বাবা সিদ্দিকিকে লক্ষ্য করে ৬টি গুলি ছোঁড়ে আততায়ীরা। ৪টি গুলি লাগে শরীরে।
বাকি দুই বন্দুকবাজকেও শনাক্ত করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, তারা হল হরিয়ানার বাসিন্দা গুরমাইল বলজিৎ সিং এবং মহম্মদ জিশান আখতার। সিদ্দিকিকে ‘ওয়াই’ ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দেওয়া হত। ধৃত ২ শ্যুটার নিজেদের লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সদস্য বলে দাবি করেছে। যদিও ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।
রবিবার সকালে পুলিশের সাইরেনের তীব্র শব্দে ঘুম ভাঙে গন্ডারার বাসিন্দাদের। এখানেই সিদ্দিকিকে গুলি করে খুন করা হয়। এলাকায় মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। শুরু হয় তল্লাশি। বিধায়ককে খুনের অভিযোগে ধৃত ধরমরাজ কাশ্যপের বাবা রাধেশ্যাম কাশ্যপ নিউজ 18-কে বলেন, “ভেবেছিলাম কিছু একটা তো হয়েছে। ওরা ভাল বন্ধু ছিল। মাস তিনেক আগে দুজনে পুণে গিয়েছিল।’’ এক্স প্ল্যাটফর্মে মুম্বই পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, “ঘটনাস্থল থেকে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে দুটি পিস্তল এবং ২৮ রাউন্ড গুলি।’’
আরও পড়ুন– সলমন খানের ‘বন্ধু’ বলেই কি খুন হতে হল সিদ্দিকিকে? গ্রেফতার হওয়া ২ শ্যুটার কী জানাল?
কে এই ধরমরাজ কাশ্যপ: রাধেশ্যাম কাশ্যপ পেশায় মাছ বিক্রেতা। তাঁর পাঁচ ছেলেমেয়ে। ধরমরাজ সবার ছোট। রাধেশ্যাম জানান, শিবকুমারের সঙ্গে তাঁর ছেলের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠতা। দু’জনেই বড়লোক হওয়ার স্বপন দেখত। তাঁর কথায়, “আর্থিক টানাটানির সংসার। ছেলেমেয়েদের বেশি পড়াতে পারিনি। তবে সবসময় চেয়েছি, ওরা কঠোর পরিশ্রম করুক। সৎ হোক। পরিবারের পাশে দাঁড়াক।’’
গ্রামবাসীরাও বলছেন, বড়লোক হওয়ার স্বপ্নই ধরমরাজ আর শিবকুমারকে মিলিয়ে দেয়। ধরমরাজের মা সুষমাদেবী বলছেন, “মাস তিনের আগে ধরমরাজ পুণে যাওয়ার জন্য জোড়াজুরি শুরু করে। শিবকুমার আগে থেকেই ওখানে কাজ করতেন।’’ পুণে যাওয়ার পর প্রথমদিকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল ধরমরাজের। পরে সেটাও বন্ধ হয়ে যায়। তাঁর মা বলছেন, “জানি না কেন যোগাযোগ রাখা ছেড়ে দিল। আমি কয়েকবার ফোন করেছিলাম। কিন্তু ধরত না।’’
শিবকুমার গৌতমের পরিচয়: শিবকুমার গৌতমের স্ক্র্যাপ ট্রেডিংয়ের ব্যবসা। মোটা টাকা রোজগার করতেন। তবে বাড়ির লোকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন না তিনিও। এমনটাই জানিয়েছেন তাঁর মা। তিনি বলেন, “প্রথমদিকে ফোনে কথা বলত। পরে আর ফোনও করত না। টাকাও পাঠাত না। কয়েক মাস আগে বোনের শরীর খারাপ হয়। তখন অনেক বলার পর ৩ হাজার টাকা পাঠিয়েছিল। কেন এমন ব্যবহার করছে জিজ্ঞাসা করায় বলেছিল, তাকে যেন আর ফোন না করি, দরকারে সে ফোন করবে।’’