পাঁচমিশালি, লাইফস্টাইল General Knowledge: বিশ্বের ‘কোন’ ৩ জনের কখনও ‘পাসপোর্ট’ লাগে না বলুন তো…? উত্তর শুনলেই চমকাবেন, শিওর! Gallery October 18, 2024 Bangla Digital Desk বিশ্বে পাসপোর্ট ব্যবস্থা চালুর প্রায় ১০২ বছর হয়ে গিয়েছে। রাষ্ট্রপতি থেকে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত, সরকারি কর্মকর্তারা সকলেই যখন এক দেশ থেকে অন্য দেশে ভ্রমণ করেন, তখন তাদের সকলকেই কিন্তু অবশ্যই কূটনৈতিক পাসপোর্ট বহন করতে হয়। গোটা পৃথিবীর ২০০টিরও বেশি দেশের মধ্যে, শুধুমাত্র তিনজন ব্যক্তিরই শুধু কোথাও ভ্রমণে কোনও পাসপোর্টের প্রয়োজন নেই। এই তিন ব্যক্তি বিদেশ ভ্রমণে গেলে তাঁদের কাছে পাসপোর্টের কথা কেউ জিজ্ঞেসও করে না। পরিবর্তে, তাদের অতিরিক্ত আতিথেয়তা এবং পূর্ণ সম্মানও দেওয়া হয়। আগেকার যুগে বিশ্বের দেশগুলির মধ্যে এমন কোনও চুক্তি ছিল না যে, এক দেশের নাগরিক যখন অন্য দেশে যাবে, তখন তার কাছে কোনও কাগজপত্র থাকতে হবে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ই প্রতিটি দেশ পাসপোর্টের মতো পদ্ধতি তৈরির গুরুত্ব বুঝতে শুরু করে। ১৯২০ সালে হঠাৎ সবকিছু বদলে যায়। অবৈধ অভিবাসীদের দেশে প্রবেশ ঠেকাতে বিশ্বজুড়ে পাসপোর্টের মতো ব্যবস্থা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। লীগ অফ নেশনস-এ এটা নিয়ে জোর আলোচনা হয়। এরপর ১৯২৪ সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার নতুন পাসপোর্ট ব্যবস্থা চালু করে। এখন পাসপোর্ট অন্য দেশে ভ্রমণকারী ব্যক্তির জন্য একটি সরকারী পরিচয়পত্রে পরিণত হয়েছে। এতে তার নাম, ঠিকানা, বয়স, ছবি, নাগরিকত্ব ও স্বাক্ষর রয়েছে। তিনি যে দেশে যাচ্ছেন সেখানে ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করার এটি একটি সহজ পদ্ধতিও হয়ে উঠেছে। এই অভ্যাসটি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে সমস্ত দেশ এখন ই-পাসপোর্ট ইস্যু করে। শুধুমাত্র তিনজন বিশেষ ব্যক্তির জন্য ছাড়: বিশ্বের কোথাও ভ্রমণ করার জন্য কখনওই কোনও পাসপোর্টের প্রয়োজন নেই এমন ৩ জন বিশেষ ব্যক্তি কারা চলুন জেনে নেওয়া যাক কারা। জানা যায়, শুধুমাত্র ব্রিটেনের রাজা, জাপানের রাজা এবং রানীর এই সুবিধা রয়েছে। চার্লস ব্রিটেনের রাজা হওয়ার আগে প্রয়াত রানী এলিজাবেথের হাতে এই সুবিধা ছিল। চার্লস ব্রিটেনের রাজা হওয়ার পর তাঁর সেক্রেটারি তাঁর দেশের পররাষ্ট্র দফতরের মাধ্যমে সমস্ত দেশে একটি নথি বার্তা পাঠান। তিনি জানান, চার্লস যেহেতু এখন ব্রিটেনের রাজা, তাই তাঁকে সম্মানের সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াতের অনুমতি দেওয়া হোক। এতে যেন কোনও প্রতিবন্ধকতা না থাকে। এর পাশাপাশি প্রোটোকলের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। তবে ব্রিটেনের রাজা এই সুবিধা বা অধিকার পেলেও তাঁর স্ত্রী কিন্তু তা পান না। অন্য দেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর কাছে ডিপ্লোমেটিক পাসপোর্ট থাকা আবশ্যক। একই ভাবে রাজপরিবারের প্রধান ব্যক্তিদের কাছেও ডিপ্লোমেটিক পাসপোর্ট থাকতে হবে। তাঁদের যে কোনও দেশের বিমানবন্দরে যাওয়া-আসার পথ আলাদা। এলিজাবেথ যখন রানী ছিলেন তখন তিনি এই পাসপোর্ট পাওয়ার বিশেষ সুযোগ পেয়েছিলেন। তবে তাঁর স্বামী প্রিন্স ফিলিপের ছিল কূটনৈতিক পাসপোর্ট। ব্রিটেনে প্রথম সম্মান দেওয়া হয় রাজকীয় সিংহাসনে বসা ব্যক্তিকে। জাপানের সম্রাট ও সম্রাজ্ঞী: এবার জেনে নেওয়া যাক কেন এবং কীভাবে জাপানের সম্রাট ও সম্রাজ্ঞী উভয়ই এই সুবিধা পেয়েছিলেন? জাপানের বর্তমান সম্রাট নারুহিতো। তাঁর স্ত্রী মাসাকো ওওয়াটা ছিলেন জাপানের সম্রাজ্ঞী। পিতা আকিহিতো সম্রাট পদত্যাগ করার পর তিনি এই পদ গ্রহণ করেন। যতদিন তাঁর বাবা জাপানের সম্রাট ছিলেন, ততদিন তাঁর এবং তাঁর স্ত্রীর পাসপোর্ট রাখার প্রয়োজন ছিল না। ৮৮ বছর বয়সি আকিহিতো ২০১৯ সাল পর্যন্ত জাপানের সম্রাট ছিলেন, এরপর তিনি অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তাই, এখন বিদেশ ভ্রমণের সময় তাদের কনস্যুলার পাসপোর্ট বহন করতে হবে। জাপানের সম্রাট ও সম্রাজ্ঞীজাপানের সম্রাট ও সম্রাজ্ঞী – উভয়ই এই সুবিধা পেয়ে থাকেন। বর্তমানে জাপানের সম্রাট নারুহিতো এবং তার স্ত্রী মাসাকো ওওয়াদা জাপানের সম্রাজ্ঞী। সম্রাট নারুহিতোর বাবা আকিহিতো সম্রাট পদ থেকে ছেড়ে দেওয়ার পর তিনি এই পদ গ্রহণ করেন। যত দিন আকিহিতো জাপানের সম্রাট পদে ছিলেন, তত দিন তাঁর এবং তাঁর স্ত্রীর পাসপোর্টের কোনও প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু এখন বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের ডিপ্লোমেটিক পাসপোর্ট রাখতে হয়। জাপানের কূটনৈতিক নথি ঘেঁটে জানা যায় যে, ১৯৭১ সাল থেকে দেশের সম্রাট এবং সম্রাজ্ঞীর জন্য এই বিশেষ ব্যবস্থা শুরু করে সে দেশের বিদেশ মন্ত্রক। প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতিদের জন্য বিশেষ সুবিধা: বিশ্বের সমস্ত প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতিকে এক দেশ থেকে অন্য দেশে ভ্রমণের সময় পাসপোর্ট বহন করতে হয়। কিন্তু নিয়ম অনুসারে তাঁদের পাসপোর্ট হবে কনস্যুলার পাসপোর্ট। গন্তব্য দেশ এই নেতাদের ভ্রমণে সম্পূর্ণ সুবিধা প্রদান করে। এই নেতাদের ক্ষেত্রে সিকিউরিটি চেক এবং অন্যান্য প্রক্রিয়া থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়। ভারতে এই মর্যাদা প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতি দ্বারা অধিষ্ঠিত হয়।