Report: Chaturesh Tiwari
সমস্তিপুর: ট্রেন যাত্রার কথা বললেই আমাদের সবার মনে সবার আগে সুখস্মৃতির আবেশ জেগে ওঠে। নিত্যযাত্রীদের কথা এখানে মাথায় আসে না, বরং দূর গন্তব্যে ভ্রমণের আবেশ বিহ্বল করে তোলে। যদিও, ভারতীয় রেলে ভ্রমণ এখন সব সময়ে যে সুখকর, এমনটা বলা যাবে না। কখনও সহযাত্রীর অভব্যতায় অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টি হয়, কখনও বা আবার দুষ্কৃতীর হস্তক্ষেপে ভ্রমণের আনন্দ রসাতলে যায়। অনেকটা সেরকমই ঘটনার মুখে পড়তে হয়েছে সম্প্রতি ২০৫০৩ রাজধানী এক্সপ্রেসের যাত্রীদের।
ট্রেন যাত্রায় মদ্যপান কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ, তা কারোরই অজানা নয়। কোনও যাত্রীর ব্যাগের মধ্যেও যদি মদের বোতল পাওয়া যায়, তাহলে সেই ব্যক্তির উপরে জরিমানা আরোপ করা এবং বোতল বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা রয়েছে আইন অনুসারে জিআরপি-র। কিন্তু তা সত্ত্বেও সব যাত্রী যে সচেতন এমনটা জোর দিয়ে বলা যাবে না। এবার যেমন আইন জেনেও মদ্যপানের জেরে সহযাত্রীদের জন্য যেমন অস্বস্তির পরিবেশ সৃষ্টি করলেন এক সেনা জওয়ান, তেমনই নিজেকেও ফেললেন লাঞ্ছনার মুখে।
জানা গিয়েছে যে ওই সেনা জওয়ান ২০৫০৩ রাজধানী এক্সপ্রেসে ভ্রমণ করছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ডিব্রুগড় এবং নয়াদিল্লির মধ্যে চলমান ওই রাজধানী এক্সপ্রেসে মদ খাওয়া এবং অশান্তির অভিযোগ উঠেছে। জিআরপি তাঁর ব্যাগ থেকে এক নয়, দুই নয়, একেবারে চার বোতল মদ বাজেয়াপ্ত করেছে। সমস্তিপুর স্টেশনে যখন এই সার্চ চলে, তখন জিআরপি-র সঙ্গে ওই সেনা জওয়ানের হাতাহাতি হয়েছে বলেও খবর।
জানা গিয়েছে যে ওই সেনা জওয়ানের নাম দেবেন্দ্র দত্ত, তিনি ডিমাপুরে অসম রাইফেলস-এর এক কর্মী। ২০৫০৩ রাজধানী এক্সপ্রেসের বি-৯ কোচে ভ্রমণ করছিলেন দেবেন্দ্র। কাটিহার থেকেই মদের নেশায় সহযাত্রীদের অস্বস্তিতে ফেলেন তিনি। ট্রেনে নিজের বার্থে বসেই তিনি মদ খাচ্ছিলেন। সহযাত্রীরা প্রতিবাদ করলে দুর্ব্যবহার করেন। বাধ্য হয়ে তাঁরা অভিযোগ জানান আরপিএফ এবং টিটিকে। টিটি নিরস্ত করার চেষ্টা করলেও দেবেন্দ্র তাতে কান দেননি।
এর পর বিষয়টি জানানো হয় সমস্তিপুর কন্ট্রোলে, ২০৫০৩ রাজধানী এক্সপ্রেসের টিটি সাহায্য চেয়ে মেমো দেন। খবর পাওয়া মাত্রই সমস্তিপুর স্টোশনে ট্রেন ঢুকতে বি-৯ কোচে পৌঁছে যান আরপিএফ-জিআরপির সদস্যরা। তাঁরা দেবেন্দ্র ব্যাগ সার্চ করতে চান। এই সময়েই তাঁদের সঙ্গে দেবেন্দ্রর হাতাহাতি হয় বলে জানা গিয়েছে। যাই হোক, জিআরপি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। সেনা জওয়ানের ব্যাগ থেকে চার বোতল মদ তারা বাজেয়াপ্ত করে। জিআরপি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ভি পি অলোক জানিয়েছেন যে দেবেন্দ্রকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়েছে।