পাঁচমিশালি Lawrence Bishnoi: লরেন্স বিষ্ণোইয়ের আসল নাম কী ? কলেজ পড়ুয়া থেকে কীভাবে হয়ে উঠলেন ‘ডন’? জানুন গ্যাংস্টার বিষ্ণোইয়ের কাহিনি Gallery October 21, 2024 Bangla Digital Desk জেলে আছেন ১০ বছরের বেশি সময় হয়ে গেল। একাধিকবার বদলেছে কয়েদবাসের ঠিকানাও। এখন যেমন রয়েছেন গুজরাতের আহমেদাবাদের সবরমতী সেন্ট্রাল জেলে। কিন্তু বিলাসবহুল জীবনযাপনে এতটুকুও ভাটা পড়েনি। জেলে বসেই বছরে বছরে লরেন্স বিষ্ণোই খরচ করে চলেন ৩৫-৪০ লাখ টাকা, এমনটা এবার শোনা গিয়েছে। কোথা থেকে সেই টাকা আসে, সেই বিষয়ে মুখ খুলেছেন লরেন্স বিষ্ণোইয়ের ঘনিষ্ঠ সূত্র। তিনি আর কেউ নন, দেশের অন্যতম কুখ্যাত এই গ্যাংস্টারের এক তুতো ভাই রমেশ বিষ্ণোই। বড় হয়ে লরেন্স যে দাগী অপরাধী হবে, এ কথা মা-বাবা তো বটেই, পুরো পরিবারও ঘুণাক্ষরে কল্পনা করেননি বলে দাবি তাঁর। রমেশ বিষ্ণোই বলছেন যে জেলে যাতে লরেন্স ভালভাবে থাকতে পারে, তার কোনও অসুবিধা হয় না, সেই জন্য তাঁর মা-বাবাই বছরে বছরে ৩৫-৪০ লাখ টাকা খরচ করেন। এই টাকা কোথা থেকে আসে, সেই প্রশ্নের উত্তর বেশ সরাসরিই দিয়েছেন ভাই। ‘‘আমাদের বরাবরই ধনী পরিবার! লরেন্সের বাবা হরিয়ানা পুলিশে কনস্টেবলের কাজ করতেন বটে, কিন্তু আমাদের গ্রামে তাঁর ১১০ একর চাষের জমি আছে। লরেন্স বরাবরই দামি দামি জামা, জুতো পরত। এখনও যাতে বহাল তবিয়তে থাকতে পারে, সেই জন্য পরিবার থেকে বছরে বছরে ৩৫-৪০ লাখ টাকা পাঠানো হয়’’, বলছেন রমেশ বিষ্ণোই। এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভাল যে গ্যাংস্টারের আসল নাম কিন্তু লরেন্স বিষ্ণোই নয়। বিষ্ণোই তাঁদের সম্প্রদায়ের নাম। গ্যাংস্টারের পিতৃদত্ত নাম বলকরণ ব্রার (Balkaran Brar)। স্কুলে পড়ার সময়েই তিনি লরেন্স বিষ্ণোই নাম গ্রহণ করেন, শোনা যায় এক পিসি না কি সমর্থন করে বলেছিলেন এই নামটা অনেক ভাল শোনায়! এর পরে নদী দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে আর দেশ জুড়ে রক্তধারা। লরেন্স বিষ্ণোইয়ের এখন বয়স ৩১ বছর। ২০১০ সালে তিনি চণ্ডীগড় কলেজে ভর্তি হন। কিছুদিনের মধ্যেই যোগ দেন ছাত্র রাজনীতিতে। ২০১১ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি পঞ্জাব ইউনিভার্সিটির ছাত্র সংগঠনের সভাপতি ছিলেন। ২০১০ সালের এপ্রিলে খুনের চেষ্টার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে প্রথম ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়। একই সঙ্গে বেআইনি অনুপ্রবেশের অভিযোগে দায়ের হয় এফআইআর। দুটি মামলাই ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ২০১২ সালে জেল হয় বিষ্ণোইয়ের। মহারাষ্ট্র কন্ট্রোল অফ অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যাক্টে তাঁকে তিহাড়ে স্থানান্তর করা হয়। ২০১৩ সালে তিনি সরকারি কলেজ নির্বাচনের জয়ী প্রার্থী এবং লুধিয়ানা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে গুলি করে খুন করেন। বিষ্ণোইয়ের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক নেতাদের খুন, চাঁদাবাজি-সহ এক ডজনের বেশি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। তাঁর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে মদ এবং অস্ত্র চোরাচালানের কারবার চালানোর অভিযোগও রয়েছে। সীমান্ত চোরাচালানের একটি মামলায় তাঁকে গুজরাতে নিয়ে যায় এটিএস। এনআইএ-এর বক্তব্য অনুযায়ী, বিষ্ণোইয়ের গ্যাংয়ে ৫টি রাজ্যে ৭০০-এর বেশি শ্যুটার রয়েছে। এর মধ্যে ৩০০ শ্যুটার পঞ্জাবের। সলমন খানকে খুনের হুমকি, সিধু মুসেওয়ালার নৃশংস হত্যাকাণ্ড, দক্ষিণ দিল্লির জিম মালিককে গুলি করে খুন এবং এনসিপি নেতা বাবা সিদ্দিকির হত্যা- সবেরই নেপথ্যে উঠে এসেছে লরেন্স বিষ্ণোইয়ের নাম। সম্প্রতি কানাডা সরকার অভিযোগ করেছে যে এই গ্যাংয়ের সদস্য এবং ভারত সরকারের মদতে উত্তর আমেরিকার এই দেশে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চলছে। সঙ্গত কারণেই ভারত সরকার এই অভিযোগ মানতে নারাজ। গুজ্জর হত্যাকাণ্ডে ভারতের যোগের এখনও পর্যন্ত কোনও প্রমাণ কানাডা দেখাতে পারেনি, সে কথা সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে মুখের উপরে।