গাজিয়াবাদ: আগেকার দিনে অবস্থাপন্ন পরিবারের ঘরে একটা সিন্দুকের উপস্থিতি ছিল বাধ্যতামূলক। লোহার তৈরি এমনই মজবুত যে সহজে তা ভাঙা যাবে না। ওখানেই নিরাপদে গচ্ছিত রাখা হত পারিবারিক গয়না, টাকা। ওই সিন্দুকের জায়গা এখন নিয়েছে ব্যাঙ্কের লকার। আমরা সবাই নিজেদের মূল্যবান জিনিস ব্যাঙ্কের লকারেই রাখি। বাড়িতে টাকা বা গয়না জমিয়ে রাখার দিন সাধারণ নাগরিকের জন্য এখন শেষ। তবে সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে যে ঘটনা ঘটল, তা সাধারণ নাগরিকের সম্পত্তির নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
আরও পড়ুন- করবা চৌথের দিন টাকা-গয়না নিয়ে লোপাট স্ত্রী ! তিন সন্তান নিয়ে পরিবারে অসহায় স্বামী
জানা গিয়েছে যে ঘটনাটি ঘটেছে গোয়েল পরিবারের সঙ্গে। মোদিনগর থানা এলাকার ব্যাঙ্ক অফ বরোদার গ্রাহক ইশা গোয়েল অভিযোগ করেছেন যে তাঁর ব্যাঙ্ক লকার থেকে ৫০ লক্ষ টাকার সোনা ও রুপো হারিয়ে গিয়েছে। ইশা গোয়াল ব্যাঙ্ক থেকে ফোন পেয়েছিলেন, ব্যাঙ্ক তাঁকে এসে তাঁর লকার দেখতে বলেছিল। এরপর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন নিয়ে ব্যাঙ্কে পৌঁছন তিনি। ভিতরে গিয়ে দেখেন, তাঁর লকার ভাঙা, সেখানে কিছুই নেই। পুরো লকার-ই খালি ছিল। মহিলা জানান, এতে ৪০-৫০ তোলা সোনা এবং ৫০-৬০ তোলা রুপোর গয়না ছিল।
ইশা গোয়েল জানান, সোমবার সকালে তিনি ব্যাঙ্ক থেকে ফোন পান যে তাঁর লকার খোলা পড়ে রয়েছে। এর পর এই বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। অভিযোগ দায়ের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ইশা গোয়েল বলেছেন, ‘‘এই ঘটনা সম্পর্কে আমরা ব্যাঙ্ককর্মীদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম, তবে তাঁরা কোনও তথ্য দিতে প্রস্তুত ছিলেন না। ব্যাঙ্ক থেকেই আমাদের ডাকা হয়েছিল এবং আমরা যখন এখানে আসি তখন ব্যাঙ্কের লোকজন একেবারে নীরব ছিলেন ৷’’
ইশার স্বামী অঙ্কুশ গোয়েল অভিযোগ করে বলেছেন, “এটি একটি অত্যন্ত গুরুতর বিষয়। এমন মূল্যবান জিনিসপত্র উধাও হয়ে যাওয়া উদ্বেগের বিষয়। আমরা চাই পুলিশ যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত শেষ করুক। এই ব্যাঙ্কে আমাদের ২০-২৫ বছরের পুরনো অ্যাকাউন্ট আছে। আমরা স্বপ্নেও ভাবিনি যে ব্যাঙ্কের লকার থেকে আমাদের সোনা হারিয়ে যেতে পারে। এখন ব্যাঙ্ক কর্মচারীরা কিছুই বলছেন না। শুধু জানিয়েছেন আপনারা এসে দেখে যান”।
মোদিনগর থানা এলাকার ব্যাঙ্ক অফ বরোদার লকারে রাখা রুপো ও সোনার মূল্য প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনায় ব্যাঙ্কের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন উঠেছে। বর্তমানে পুলিশ বিষয়টির তদন্ত চালাচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে যে, গোয়েল পরিবারের অভিযোগ ও সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে এই মামলার তদন্ত করা হচ্ছে। যদিও এই বিষয়ে ব্যাঙ্ককর্মীরা কিছু বলতে রাজি হননি।