সিদ্ধার্থ সরকার, কলকাতা: ভারতী এয়ারটেলের নতুন এআই চালিত স্প্যাম ডিটেকশন সিস্টেমে স্বস্তি পেলেন পশ্চিমবঙ্গের ইউজাররা। চালু হওয়ার পর থেকে ২৮ দিন কেটে গিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে বাংলায় ১৫৪ মিলিয়ন সম্ভাব্য স্প্যাম কল এবং ৮ মিলিয়ন স্প্যাম এসএমএস সফলভাবে সনাক্ত করেছে এই সিস্টেম।
আলাদা করে এই পরিষেবা চালু করার জন্য আবেদন করতে হচ্ছে না ইউজারদের। কোনও রকম অ্যাপ ডাউনলোডের প্রয়োজন নেই। পশ্চিমবঙ্গে এয়ারটেলের সমস্ত গ্রাহকের স্মার্টফোনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্প্যাম ডিটেকশন সিস্টেম কাজ করছে।
স্প্যাম ডিটেকশন সিস্টেম লঞ্চ প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশার ভারতী এয়ারটেলের চিফ একজিকিউটিভ অফিসার অয়ন সরকার বলেন, “সংযোগ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রাহকরা ক্রমাগত স্ক্যাম, প্রতারণা এবং স্প্যাম কলের মুখে পড়ছিলেন। সুরক্ষা নিয়ে চিন্তা বাড়ছিল। এর থেকে গ্রাহকদের রক্ষা করতে এআই চালিত স্প্যাম ডিটেকশন সিস্টেম (AI Spam Detection System) নিয়ে এসেছে এয়ারটেল। এই সিস্টেম সক্রিয়ভাবে সন্দেহজনক স্প্যাম কল এবং এসএমএস সনাক্ত করবে। উন্নত প্রযুক্তির সহায়তায় এয়ারটেল পশ্চিমবঙ্গের ২৪ মিলিয়ন গ্রাহকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে, যাতে সবাই সুরক্ষিত যোগাযোগের অভিজ্ঞতা নিতে পারেন।”
এয়ারটেলের ডেটা সায়েন্টিস্টদের তৈরি এই এআই চালিত স্প্যাম ডিটেকশন সিস্টেম বিশেষ অ্যালগরিদমের মাধ্যমে স্প্যাম কল এবং এসএমএস চিহ্নতি করে। এআই অ্যালগরিদম চালিত এই নেটওয়ার্কের বিভিন্ন প্যারামিটারের উপর ভর করে সিদ্ধান্ত নেয়। যেমন কলার বা সেন্ডারের ইউসেজ প্যাটার্ন, কল বা এসএমএসের ফ্রিকোয়েন্সি, কলের সময়কাল ইত্যাদি রিয়েল টাইমে বিশ্লেষণের মাধ্যমে পাওয়া তথ্য পরিচিত স্প্যাম প্যাটার্নের বিপরীতে ক্রস রেফারেন্স করে এই সিস্টেম। ফলে সন্দেহজনক স্প্যাম কল এবং এসএমএস সহজেই ধরা পড়ে যায়।
দ্বিস্তরীয় সুরক্ষা বলয়-সহ স্প্যাম ডিটেকশন সিস্টেমের দুটি ফিল্টারও রয়েছে। প্রথমটি নেটওয়ার্কে, দ্বিতীয়টি আইটি সিস্টেমে। প্রতিটি কল এবং এসএমএসকে এই দ্বিস্তরীয় এআই শিল্ডের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। এই সিস্টেম দুই মিলিসেকেন্ডে ১.৫ বিলিয়ন মেসেজ এবং ২.৫ বিলিয়ন কলের প্রক্রিয়াকরণ করে। এটা এআই-এর শক্তিকে ব্যবহার করে ১ ট্রিলিয়ন রেকর্ড রিয়েল টাইম প্রক্রিয়াকরণের সমান।
আরও পড়ুন– ব্যাঙ্ক লকার খোলা, উধাও সোনা-রুপো ! সাধারণ নাগরিকের সম্পত্তির নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে
এখানেই শেষ নয়, এসএমএসের মাধ্যমে কোনও ক্ষতিকারক লিঙ্ক যদি গ্রাহক পান, তাহলেও সতর্ক করে এই সিস্টেম। এর জন্য এয়ারটেল একটি সেন্ট্রালাইজড ডেটাবেস তৈরি করেছে। যা ব্ল্যাকলিস্টেড URL এবং প্রতিটা এসএমএস-কে রিয়েল টাইমে অত্যাধুনিক এআই অ্যালগরিদমের মাধ্যমে স্ক্যান করে। ইউজার যাতে সন্দেহজনক লিঙ্কে ভুল করেও ক্লিক না করে ফেলেন, তা দেখাই এর কাজ। এই সিস্টেম IMEI পরিবর্তনের মতো অস্বাভাবিকতাও সনাক্ত করতে পারে, যা প্রতারণামূলক আচরণের একটি সাধারণ নির্দেশক। এই সুরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে গ্রাহকদের স্ক্যাম ও প্রতারণার হাত থেকে সর্বোচ্চ স্তরের সুরক্ষা দিচ্ছে এয়ারটেল।
প্রসঙ্গত, পরিষেবা এবং লেনদেন সংক্রান্ত কলের জন্য ১৬০ প্রিফিক্স-সহ ১০ সংখ্যার নম্বর বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে এই ধরনের নম্বর থেকে ব্যাঙ্ক, মিউচুয়াল ফান্ড, বিমা কোম্পানি, স্টকব্রোকার, অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান, কর্পোরেটস, এন্টারপ্রাইজ, এসএমই, বড় এবং ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে লেনদেন ও পরিষেবা সংক্রান্ত কল যাবে গ্রাহকের কাছে। যাঁরা ‘ডু নট ডিসটার্ব’-এর জন্য আবেদন করেননি এবং বিজ্ঞাপনী কলের সাবস্ক্রাইব করেছেন তাঁরা ১৪০ প্রিফিক্স-সহ ১০ সংখ্যার ফোন নম্বর থেকে এই ধরনের কল পাবেন।