নয়াদিল্লি: সবে ভোরের আলো ফুটেছে। বিমানবন্দর প্রায় ফাঁকা। ইতিউতি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন কয়েকজন যাত্রী। ঠিক তখনই দিল্লির ইন্দিরা গান্ধি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামলেন দুই বিদেশিনি। টার্মিনাল ধরে গটগট করে হাঁটতে শুরু করলেন তাঁরা। যাত্রীরা খেয়াল করেননি। কিন্তু নজর এড়ায়নি কাস্টমের এয়ার ইন্টিলিজেন্স ইউনিটের।
ব্যাপারটা কী? টার্মিনাল থ্রি-তে নামেন দুই বিদেশি যাত্রী। কিন্তু পা দেবার পর থেকেই চোখে চোখে কথা হতে থাকে তাঁদের। এতেই সন্দেহ হয়। সাধারণত বিদেশি যাত্রীরা এমনটা করেন না। নতুন দেশ দেখার আনন্দে উচ্ছ্বসিত থাকেন তাঁরা। কলকল করে কথা বলেন। অবাক দৃষ্টিতে দেখতে থাকেন চারপাশের সবকিছু। কিন্তু এই দুই বিদেশি তরুণী একেবারে আলাদা। যেন কোনও কার্যসিদ্ধি করার উদ্দেশ্যেই ভারতে এসেছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন- শক্তি বাড়িয়ে উপকূলের দিকে আরও এগোল ‘দানা’, এই মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থান কোথায় জানুন
দুই তরুণীর আচরণ দেখে সন্দেহ হয় কাস্টম অফিসারদের। তাই আর কোনও ঝুঁকি নেননি তাঁরা। দুই তরুণীকেই ডোর ফ্রেম মেটাল ডিটেক্টরের মধ্যে দিয়ে যেতে বলেন এক কাস্টমসের সিনিয়র কর্তা। এ কথা শুনেই ঘাবড়ে যান দুই তরুণী। ইতস্তত করতে থাকেন। এতে সন্দেহ আরও দৃঢ় হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ডোর ফ্রেম মেটাল ডিটেক্টরের মধ্যে দিয়ে যেতে বাধ্য হন তাঁরা। ব্যস, দুই বিদেশিনির উদ্দেশ্যের পর্দাফাঁস হয়ে যায়।
দুই যুবতীকে আটক করে তল্লাশি শুরু করেন কাস্টমস অফিসাররা। উদ্ধার হয় টিস্যু পাউচ। আর টিস্যু পাউচ খুলতেই সকলের চক্ষু চড়কগাছ। এমন জিনিস যে বেরোতে পারে কল্পনাও করেনি কেউ। কী ছিল তাতে? সোনার গয়না। দুই তরুণীর কাছ থেকে ৫৩৮ গ্রাম সোনার গয়না উদ্ধার হয়েছে। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। তাঁদের ব্যাগ তল্লাশি করে সোনার আইফোন ১৬ উদ্ধার করেন কাস্টমস অফিসাররা। গত মাসেই আইফোন ১৬ সিরিজ লঞ্চ করেছে অ্যাপল। সেই সিরিজের সোনার আইফোন ১৬ প্রো উদ্ধার হয়েছে তাঁদের কাছ থেকে। একটা নয়, চার চারটি। পাচারের উদ্দেশ্যেই তাঁরা সোনার গয়না এবং সোনার আইফোন নিয়ে এসেছিলেন।
জানা গিয়েছে, দুই বিদেশি তরুণী তুর্কমেনিস্তানের নাগরিক। বুধবার সকালে তাঁরা তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশগাবাত থেকে আসা তুর্কমেনিস্তান এয়ারলাইনসের ফ্লাইট T5-531-এ চেপে তাঁরা ইন্দিরা গান্ধি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন। উল্লেখ্য, তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশগাবাতকে বিশ্বের সবচেয়ে অদ্ভুত শহর বলা হয়। সাদা মার্বেলের ভবনের জন্য গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডেও এই শহরের নাম রয়েছে।