পশ্চিম মেদিনীপুর: ইয়াশ, আমফানের পর দানার ভ্রুকুটি। দানার প্রভাবে জেলা জুড়ে বিক্ষিপ্ত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আবহাওয়া দফতরের সূত্র অনুযায়ী, দানা আসার আগে থেকেই তৎপরতা নিয়েছিল প্রশাসন l। বুধবার থেকে জেলার একাধিক প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় থাকা সাধারণ মানুষকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছিল ত্রাণ শিবিরে। বৃহস্পতিবার একাধিক সাধারণ মানুষকে উদ্ধার করা হয়। প্রসঙ্গত, ওড়িশার বালেশ্বরের কাছে ল্যান্ডফল হয়েছে ঘূর্ণিঝড় দানার। এর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা ছিল বাংলা ওড়িশা সীমানা এলাকার দাঁতন, মোহনপুর-সহ একাধিক ব্লকগুলিতে। তবে সেই অর্থে প্রত্যক্ষ প্রভাব না পড়লেও, প্রশাসন সূত্রে খবর, একাধিক মাটির বাড়ি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, বেশ কয়েকটি গাছ উপড়ে পড়েছে কয়েকটি এলাকায়।
পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন ১, মোহনপুর, দাঁতন ২, নারায়ণগড় এবং কেশিয়াড়ি ব্লক পরিদর্শন করলেন রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভূঁইয়া। শুধু তাই নয়, প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন সমগ্র বিষয় নিয়ে। প্রতিটি ব্লক অফিসে ব্লক প্রশাসন, মহকুমা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে তিনি বৈঠক করেন। শুধু তাই নয় সকাল থেকে বাইকে চেপে একাধিক প্রান্তিক এলাকা ঘুরে দেখলেন কেশিয়াড়ি বিধানসভার বিধায়ক পরেশ মুর্মু। এছাড়াও এদিন এক অসুস্থ ব্যক্তিকে অ্যাম্বুলেন্স দেখে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছেন তিনি। এলাকায় ঘুরে ত্রাণ তুলে দেন তিনি।
প্রশাসন সূত্রে খবর, সারা মেদিনীপুর জেলায় ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে নিরাপদ আশ্রয়ে। দাঁতন ১ ব্লকে চার হাজার ৭০০-র বেশি মানুষকে উদ্ধার করে রাখা হয়েছিল একাধিক ত্রাণ শিবিরে। বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও প্রায় বেশ কয়েকশো মানুষকে ত্রাণ শিবিরে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি দাঁতন ২ ব্লকে ৪৮০০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। কেশিয়াড়ি ব্লকে কয়েক হাজার মানুষকে উদ্ধার করে রাখা হয়েছিল নিরাপদ আশ্রয়ে। মোহনপুর ব্লকে ১১ হাজার ৭০০ মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে।
একইভাবে নারায়ণগড়েও বেশ কয়েক হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে ফেলেছিল প্রশাসন। ইতিমধ্যে ৬৭৫০ জনকে রাখা হয়েছে ত্রাণ শিবিরগুলিতে। সকাল থেকে একাধিক এলাকা খতিয়ে দেখেন দাঁতন বিধানসভার বিধায়ক বিক্রমচন্দ্র প্রধান। বিধানসভা এলাকায় চাষের ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শন করেন তিনি। ইতিমধ্যেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধায়কদের ফোন করে খোঁজ খবর নিয়েছেন এলাকার।
মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভুঁইয়া বলেন, “জেলায় মৃত্যুর সংখ্যা নেই। ইতিমধ্যে জেলায় চাষের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ব্লক প্রশাসন, স্থানীয় বিধায়কেরা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবে। স্বাভাবিকভাবে দুর্যোগ কাটলেও ভারী বর্ষার আশঙ্কা রয়েছে জেলা জুড়ে। সাধারণ মানুষের যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার দিকে সচেষ্ট রয়েছে প্রশাসনিক আধিকারিকেরা।”
রঞ্জন চন্দ