ছাতিম ফুলের গন্ধে অতিষ্ঠ শান্তিনিকেতনের মানুষেরা

Birbhum News: আজব খেলা চলছে শান্তিনিকেতনে! নাক ঢেকে যাতায়াত, টেকাও দায় হচ্ছে স্থানীয়দের

বীরভূম: প্রকৃতির কী এক অদ্ভুত খেলা! রাতে যে ফুলের এত গন্ধ, সকালেই তা কী করে কর্পূরের মত উবে যায়! আবার নিশি শেষে বাসি ফুল থেকে ভেসে আসে তীব্র ঝাঁজালো গন্ধ, সে গন্ধে মাথাটা ঝিমঝিম করে। এখানে কথা হচ্ছে ছাতিম ফুলের। ছাতিমের কথা সামনে এলেই মনে পড়ে যায় রবীন্দ্র সাহিত্যের নানা কথা। শান্তিনিকেতনে ছাতিম গাছ বিভিন্নভাবে সমাদৃত। মূলত সাতটি করে পাতা থাকার কারণে শান্তিনিকেতনের সূচনা লগ্ন থেকে ছাতিম, সপ্তপর্ণী নামেও পরিচিত।

সর্বত্র এর রূপ প্রশংসিত হলেও ছাতিম ফুলের গন্ধের জন্য বাসিন্দাদের প্রাণ অতিষ্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত কিছুদিন ধরে ‌বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত উগ্র গন্ধে রাস্তায় চলাফেরা দায় হয়ে উঠেছে পথচারীদের। মাথাব্যথা, হাঁপানি বা অন্যান্য সমস্যা হচ্ছে। অ্যালার্জির সমস্যা থাকা বাসিন্দাদের সতর্ক করছেন উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকরা।‌ বেশি গন্ধ নাকে ঢুকলেই ভোগাতে পারে ছাতিম ফুল। তাই এইসময় বাড়ির আশপাশে ছাতিমগাছ থাকলে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

আরও পড়ুন: কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা! আচমকা কেন এমন ব্যবস্থা নেওয়া হল রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে

ছাতিম গাছকে নিয়ে বিচিত্র ও মজার মজার গল্প রয়েছে। চিনে এই গাছ পরিচিত ডেভিলস প্লান্ট নামে। চিনারা মনে করেন, এই গাছ থেকে ভূতুড়ে গন্ধ ছড়ায়। তাই তারা এর ধারে কাছে ঘেঁষতে চান না। তবে আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে এই গাছের ছাল ব্যাপক কার্যকর। বিশেষত পেট খারাপ জাতীয় সমস্যা হলে এই ছাল থেকে তৈরি ওষুধ দারুণ উপকারী বলে জানাচ্ছেন উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া বিশ্বভারতীতে ছাতিম গাছের বিশেষ কদর রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা সম্পূর্ণ হলে সমাবর্তন উৎসবে শংসাপত্র হিসেবে পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ছাতিম পাতা। শিক্ষার্থীদের কাছে যা অত্যন্ত সম্মানের। একটা সময় পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় আচার্য তথা দেশের প্রধানমন্ত্রী পড়ুয়াদের হাতে এই ছাতিম পাতা তুলে দিতেন।

আরও পড়ুন: এই ডিভাইস থাকলে মেয়েদের বিপদ হবে না আর! ‘আশ্চর্য আবিষ্কার’ পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রের!

মূলত অক্টোবরের শুরুতে ছাতিম গাছের ফুল ফোটা শুরু হয়। ‌দূর থেকে বাতাসে ভেসে আসা মৃদু গন্ধ অনেকে উপভোগও করেন। কিন্তু ছাতিম গাছের আশপাশে যাঁদের বাড়ি তাঁরা এর গন্ধে কার্যত অতিষ্ঠ। বোলপুর শহরের রাস্তাঘাটে ছাতিম গাছের সংখ্যা নেহাত কম নয়।শান্তিনিকেতন রোড, রতনপল্লি, পূর্বপল্লি, গুরুপল্লি প্রভৃতি নানা জায়গায় প্রচুর পরিমাণে রয়েছে এই গাছ। তাই চলাফেরার সময়ও ছাতিম ফুলের উগ্র গন্ধে শ্বাস নিতে অনেকেরই কষ্ট হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন যাদের হাঁপানি রোগ রয়েছে তারা যতটা সম্ভব এই গাছের পাশ দিয়ে চলাফেরা করা এড়িয়ে চলুন।

সৌভিক রায়